দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি এবং অর্থকেলেঙ্কারির অভিযোগে বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে টানা দুই ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ পরিচালক মো. ইয়াছির আরাফাত। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বেলা ১১ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত তাকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
উল্লেখ্য, এরআগে গত ১৪ এপ্রিল দুর্নীতি এবং অর্থকেলেঙ্কারির অভিযোগে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে দুই বছরের জন্য ফিফা সব ধরনের ফুটবল কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। একই সঙ্গে তাকে প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়। এরপরই বাফুফের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থকেলেঙ্কারির বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ ফুটবল ফেডারেশনের সব বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের।
গত ৩ মে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সুমন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকসহ ঊর্ধ্বতনদের দুর্নীতির তদন্তের দাবি জানিয়ে দুদকে আবেদন করেন। ব্যারিস্টার সুমনের আবেদনে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ , সভাপতি সালাউািদ্দন , সহ-সভাপতি সালাম মোরশেদীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
কিন্তু তার ওই আবেদন আমলে না নেয়ায়, তিনি (ব্যারিষ্টার সুমন) হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। তার রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ মে হাইকোর্ট আগামী চার মাসের মধ্যে দুদকসহ সংশ্লিষ্টদের ফুটবল ফেডারেশনের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতিসহ সব বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত। যার পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।
এদিকে মঙ্গলবার দুদক কর্মকর্তার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে যাবার সময় গণমাধ্যমের নানা প্রশ্নের জবাবে বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ বলেন, বাফুফের কেনাকাটায় কোনো দুর্নীতি হয়নি। ফিফা বা বাফুফে কেউই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
তিনি (সোহাগ) বলেন, ‘মিডিয়ায় লেখা হচ্ছে আর্থিক দুর্নীতি, কিন্তু বিষয়টি আর্থিক দুর্নীতি না। প্রথমত বাফুফে থেকে যে কেনাকাটা হয়েছে, সেটা বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে হয়নি, দ্বিতীয়ত বাফুফে পণ্য বা সেবাগুলো বুঝে পেয়েছে এবং তৃতীয়ত ফিফার নিয়ম-কানুন মেনে ক্রয় করা হয়েছে। অর্থাৎ ফিফা বা বাফুফে কেউই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
কিন্তু নৈতিকতার দিক থেকে ফিফা বেশকিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। যে বিষয়গুলো নিয়ে এরইমধ্যে স্পোর্টসের সর্বোচ্চ আদালত দ্যা কোর্ট অব আরবিট্রেশন ফর স্পোর্ট-এ আপিলও করেছি। আমার আইনজীবীরা সেটা নিয়ে কাজ করছেন। এটা চলমান প্রক্রিয়া। আজ (মঙ্গলবার) দুদককে সহযোগিতার জন্য এসেছি। আমি তাদেরকে বেশকিছু বিষয় অবহিত করেছি।’
দুদক কেনো ডেকেছে এমন প্রশ্নের জবাবে সোহাগ বলেন, ‘তাদের বেশকিছু কোয়ারি ছিল, তারা বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে এখানে আসা। আমার দায়িত্ব দুদককে সহায়তা করা, আমি তাদের সহায়তা করছি।’# কাশেম