বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১০ অপরাহ্ন

পুরো ঢাকা শহরে বায়ূ ও শব্দ দূষণের সাথে যুক্ত হয়েেছে নির্বাচনী পোস্টার

আবুল কাশেম (দূরবীণ নিউজ ) :
রাজধানী ঢাকা সত্যিই একটি অস্বাস্থ্যকর , নোয়রা ও দূষিত শহরে পরিনত হচ্ছে। এবার বায়ূ দূষণ, শব্দ দূষণ ও নির্বাচনী পোস্টারে পরিবেশ দূষণ মারাত্নক আকার ধারণ করেছেন। এসব দূষণের কারণে এই শহরটি ক্রমেই বসবাসের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে।

নির্বাচনী পোস্টারের বেশির ভাগই হচ্ছে ল্যামিনেটিং করা। অপচনশীল পলিথিন ও প্লাস্টিকের পেপারে ছাপানো ব্যানার, ফ্যাস্টুন, প্লেকার্ড এবং বিপুল পরিমান নির্বাচনী পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে পুরো শহরটাই যেন একটা নোংরা বস্তিতে পরিনত হয়েছে।

এদিকে সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (বাপা) ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে ২০২০ সালের শুরুতেই ‘তীব্র শব্দদূষণের কবলে ঢাকাবাসী’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল।

সংবাদ সম্মেলনে তারা একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হচ্ছে, নীরব, আবাসিক ও মিশ্র এলাকার ক্ষেত্রে শব্দের মাত্রা ১০০ ভাগ সময় আদর্শ মানের ওপরে ছিল (নীরব এলাকার আদর্শ মান ৫০ ডেসিবেল, আবাসিক এলাকার আদর্শ মান ৫৫ ডেসিবেল, মিশ্র এলাকার আদর্শ মান ৬০ ডেসিবেল)। বাণিজ্যিক এলাকায় শব্দের মাত্রা আদর্শ মানের চেয়ে ৯৭ দশমিক ৫৮ ভাগ সময় বেশি মাত্রায় ছিল (বাণিজ্যিক এলাকার আদর্শ মান ৭০ ডেসিবেল)। শিল্প এলাকায় শব্দের মাত্রা আদর্শ মানের চেয়ে ৭১ দশমিক ৭৫ ভাগ সময় বেশি মাত্রায় ছিল (শিল্প এলাকার আদর্শ মান ৭৫ ডেসিবেল)।

তাদের গবেষণার তথ্যানুযায়ী, সাধারণত বাসা, স্কুল, বাণিজ্যিক এবং শিল্প এলাকায় যে পরিমাণ শব্দ হওয়ার কথা তার চেয়ে অনেক বেশিমাত্রায় শব্দ উৎপন্ন হচ্ছে। এখন প্রশ্ন হলো, বেশি মাত্রার শব্দ হলে সমস্যা কী? শব্দ তো শব্দ। তার আবার কম বা বেশি কী?

শব্দের একটি মাত্রা আছে। সেই নির্দিষ্ট মাত্রার শব্দ আমরা শুনতে পাই। আবার নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি মাত্রায় শব্দ উৎপন্ন হলে তখন আমাদের অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি হয়। এখন প্রশ্ন হলো, বেশি মাত্রার শব্দ হলে সমস্যা কী? সমস্যা হলো, আপনি যখন অনেকক্ষণ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি শব্দ শুনতে থাকবেন তখন আপনি কোনো কারণ ছাড়াই রেগে যাবেন। খিটমিটে হয়ে যাবেন। আর রাগের মাথায় মানুষ অনেককিছুই করে ফেলেন যা পরে অনুশোচনা তৈরি করে। কিন্তু এই হঠাৎ রেগে যাওয়ার কারণই হলো অত্যধিক মাত্রায় উৎপন্ন শব্দ বা তীব্র শব্দ।

ঢাকার সিটিতে নির্বাচনী আমেজ। নির্বাচনের জন্য এতো কিছুর পরিবর্তন, সেই নির্বাচন আসলেই অনেক বড় উৎসবের এবং আনন্দের। বিকট শব্দে গান বাজিয়ে আমরা আনন্দ প্রকাশ করি। নির্বাচনেও আনন্দ প্রকাশের জন্য উচ্চশব্দে মাইকিং করে বা গান বাজিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, বাজার, মসজিদ-মন্দির ও আবাসিক এলাকাসহ সবখানেই প্রার্থীদের পক্ষে মাইকিং চলছে। এমনকি যানজটে দাঁড়ানো অবস্থাতেও থামছে না মাইকের শব্দ। এই উচ্চশব্দের কারণে সাধারণ জনগণের অসুবিধা হলেও অসুবিধা হচ্ছে না প্রচারকারীদের। অবশ্য নির্বাচনী আচরণ বিধিমালায় এই বিষয়ে বলা আছে।

সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা ২০১৬-বলা হয়েছে− ‘কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনও রাজনৈতিক দল, অন্য কোনও ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান একটি ওয়ার্ডে পথসভা বা নির্বাচনী প্রচারের কাজে একের অধিক মাইক্রোফোন বা শব্দের মাত্রা বর্ধনকারী অন্যবিধ যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন না। কোনও নির্বাচনি এলাকায় মাইক বা শব্দের মাত্রা-বর্ধনকারী যন্ত্রের ব্যবহার দুপুর ২টার আগে এবং রাত ৮টার পরে করা যাবে না।’

নির্বাচনী পোস্টাসহ সবকিছুকে প্লাস্টিক দিয়ে মুড়িয়ে দিচ্ছে। ভবিষ্যতে প্লাস্টিকের পণ্যের প্রসারে সবাই প্লাস্টিক ভাবাপন্ন হয়ে যাচ্ছি। প্লাস্টিকের প্যাকেট, ব্যাগ, বোতল, বালতি, ক্যান, কাপ, মগ, গ্লাস, স্ট্র ইত্যাদি নানান ধরনের নিত্য ব্যবহার্য প্লাস্টিক পণ্যের সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। শুধু তাই নয়। পানির ট্যাঙ্ক, দরজা, চেয়ার, টেবিলসহ ঘর সাজাতে প্লাস্টিকের রমরমা সমাহার। সুবিধাও অনেক। দামে সস্তা, ওজনে হাল্কা, মজবুত এবং পানিতে নষ্ট হয় না। রং মিশিয়ে যেমন খুশি তেমন আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা যায়।

এতো সব প্লাস্টিক পণ্যের ভিড়ে নির্বাচনী প্রার্থীরা শুধু প্লাস্টিক দিয়ে তাদের পোস্টারটা মুড়িয়েছে, আর কিছুই করেনি। তারা প্লাস্টিকের নতুন পণ্য আনেনি, প্লাস্টিকের গাছ, রাস্তা, ঘর-বাড়ি, স্কুল, কলেজ কিছুই বানায়নি। শুধু নিজেদের নির্বাচনী পোস্টারটা প্লাস্টিক দিয়ে মুড়িয়ে সারা ঢাকাশহর ছেয়ে ফেলেছে।

প্লাস্টিকের ক্ষতিকারক দিকটা জেনেছে তাই এই পরিকল্পনা বা নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা হয়তো জানি না! আর জানলেও আমরা নিতাম কিনা সন্দেহ। কারণ শব্দদূষণ সংক্রান্ত বিধিমালা কেউই মানছে না আর পরিবেশ দূষণ। লেমিনেটেড পোস্টার বা প্লাস্টিক মোড়ানো পোস্টার লাগানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাইকোর্ট। সেই নিষেধাজ্ঞাটি দেওয়ার আগে যে পরিমাণ ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে।

পুরো ঢাকা শহরে যে পরিমাণ প্লাস্টিক মোড়ানো পোস্টার ঝুলানো হয়েছে সেই প্লাস্টিক মোড়ানো পোস্টারগুলো পুনঃ ব্যবহার বা রিসাইকেল বা ধ্বংস করার কোনো পরিকল্পনা কারো নেই। এমনকি সেই প্লাস্টিক মোড়ানো পোস্টারগুলো ধ্বংস করতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে তার অংকও বিশাল।

পরিবেশ ধ্বংসের কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে, বায়ূ দূষণ , শব্দ দূষণ, ধূলাবালি, ময়লা আর্বজনা, বিপুল পরিমান প্লাস্টি মোড়ানো নির্বাচনী পোস্ট পুরো শহরেই চলছে ধীরগতিতে খোঁড়াখুড়ি। এবার আসন্ন বর্ষামৌসুমে পুরো নগরবাসীকেই দুর্ভোগে ফেলবে। #


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.


অনুসন্ধান

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:২২ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:০২ অপরাহ্ণ
  • ৪:৩০ অপরাহ্ণ
  • ৬:২৪ অপরাহ্ণ
  • ৭:৪০ অপরাহ্ণ
  • ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন জরিপ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি এখন লিপসার্ভিসের দলে পরিণত হয়েছে।’ আপনিও কি তাই মনে করেন? Live

  • হ্যাঁ
    25% 3 / 12
  • না
    75% 9 / 12