দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
দেশের বহুল আলোচিত ঘটনা ‘পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু’ হাত দিয়ে খোলা সম্ভব নয় বলেছেন সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ।
তিনি বলেন, এই কাজটা করার ক্ষেত্রে আটক যুবক বায়েজিদের গিল্টি মাইন্ডের বিষয়টি সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। কারণ এত বড় একটা স্থাপনার নাট-বল্টু হাত দিয়ে খোলা যাবে না। এতে বোঝা যায় নাট-বল্টু হাতে দিয়ে খোলা হয়নি, নাট-বল্টু খোলার জন্য সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে।
সোমবার (২৭ জুন) মালিবাগে অবস্থিত সিআইডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ওই ঘটনায় আটক যুবক বায়েজিদ তালহার বিরুদ্ধে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ২৬ জুন বিকেলে যুবক বায়েজিদ তালহাকে আটক করেছে সিআইডি। বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ সাংবাদিকদের বলেন, পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট খুলে টিকটক ভিডিও তৈরি করে ভাইরাল হওয়া ৩০ বছর বয়সী যুবক বায়েজিদ তালহাকে বিকেলে রাজধানীর শান্তিনগর থেকে আটক করা হয়েছে। তার বাড়ি পটুয়াখালীতে। নাট হাতে নিয়ে বায়েজিদ বলেন, ‘এই হলো পদ্মা সেতু, আমাদের… পদ্মা সেতু। দেখো আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু। এই নাট খুইলা এহন আমার হাতে।’
বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, বায়জিদ তালহার একটি টিকটক আইডি রয়েছে এবং তার আরেক বন্ধু কায়সারের টিকটক আইডি থেকে গতকাল ২৬ জুন ৩০-৩৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও আপলোড হয়েছে। ভিডিওটি আপলোড হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে বায়জিদকে শনাক্ত করে অবস্থান নিশ্চিত করে তাকে আটক করা হয়।
তিনি বলেন, রোববার সকাল ৭টা থেকে ১০টা-১১টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। বায়জিদ ও কায়সার দুই বন্ধু মিলে কারে করে পদ্মা সেতুতে গিয়েছে। বায়জিদ ড্রাইভ করছিল। জাজিরা প্রান্তের ৩০-৩৫ নম্বর পিলারের মধ্যে নেমে নাট-বল্টু খুলে ফেলে, তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে, ব্যঙ্গ করে মানুষের ফিলিংসে আঘাত করে। প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হয়েছে, এটা একটা অন্তর্ঘাতমূলক কাজ। এটা সাবোটাজের মতো আমাদের কাছে মনে হয়েছে। আমরা তাকে দ্রæত এরেস্ট করি। পরে মামলা দায়ের হয় বর্তমানে সিআইডি মামলাটি তদন্ত করেছে।
কীভাবে করেছে? জানতে চাইলে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, আমরা তার কাছ থেকে ডিভাইস উদ্ধার করেছি, আরও কিছু ডিভাইস, তার আরও কিছু ভিডিও, আগের এক্টিভিটিজ দেখে মনে হয়েছে এটা অন্তর্ঘাতমূলক কাজ। পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এই কাজটা করার ক্ষেত্রে তার যে গিল্টি মাইন্ড, আমরা মনে করছি, এই জিনিসটা এভাবে খোলার কথা না। এত বড় স্থাপনার নাট-বল্টু হাত দিয়ে খোলার কথা নয়। ভিডিওতে আমরা সবাই দেখেছি ইজিলি খুলে যাচ্ছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কী জানা গেছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা রেজাউল মাসুদ বলেন, সবকিছু বিবেচনায় আমরা মনে করছি এই কাজটা সেই করেছে, তার একটা প্ল্যান ছিল। বাকিটা তদন্তে আসবে। বিস্তারিত জানতে চাইলে অনেক প্রশ্ন এড়িয়ে যান সিআইডি কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আমাদের ধারণা একদম ইনগ্রেডিয়েন্স আছে, কিছু প্রাপ্তি আছে, তার আগের এক্টিভিটি সব আমরা দেখছি। আপনারা যে ভিডিও দেখেছেন তার বাইরেও কিছু ভিডিও আমরা পেয়েছি।
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, তিনটা বিষয় এক্ষেত্রে ঘটেছে। মানুষের ফিলিংস, রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও অন্তর্ঘাতমূলক কাজ। এই তিনটার মধ্যে অন্তর্ঘাতমূলক কাজটা হয়েছে। এখানে তার গিল্টিমাইন্ড আছে। যে কারণে আমরা মামলা দিয়েছি। তিনি বলেন, একটা অপরাধ করার পর যে কাজগুলো হয়, সেটা করেছে। এই কাজটা করলাম, পোস্ট ডিলিট করলাম, আইডি ডিয়েক্টিভ করলাম, টিকটক… এগুলো দেখে বোঝা যায় গিল্টি মাইন্ড।
অভিযুক্ত যুবক বায়েজিদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি না জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা রেজাউল মাসুদ বলেন, রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে। কিন্তু আমরা তার অপরাধটাকেই গুরুত্ব সহকারে দেখছি। #