দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় অবহেলার দায়ে ওই থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) তিন পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চৌকিদারকেও বরখাস্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহষ্পতিবার এক রায়ে এ নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে জারি করা রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে এ রায় দেওয়া হয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন-সাবেক ওসি কামরুজ্জামান, এসআই হাবিবুর রহমান, এএসআই মফিজুল ইসলাম এবং স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ ও চৌকিদার আলী আসগর।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও অনীক আর হক। তাদের সঙ্গে ছিলেন শাহিনুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী।
রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী বলেন, বেগমগঞ্জের ঘটনায় তৎকালীন ওসি, একজন এসআই ও এএসআইকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দেয় আদালত। এ ছাড়া স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং চৌকিদারকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে এলজিআরডিসচিবকে নির্দেশ দেয়া হয়।
গত বছরের ৫ অক্টোবর ঘটনাটি আদালতের নজরে আনার পর এ-সংক্রান্ত ভিডিও ফুটেজ সরাতে বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।
এ ছাড়া ওই নারীর পরিবারকে সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে নোয়াখালীর পুলিশ সুপারকে (এসপি) নির্দেশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগীর বক্তব্য গ্রহণে পুলিশের কোনো অবহেলা আছে কি না, তা অনুসন্ধান করতে একটি কমিটি করে দেয় আদালত।
নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে কমিটিতে ছিলেন জেলা সমাজসেবা অফিসার ও চৌমুহনী সরকারি এস এ কলেজের অধ্যক্ষ। কমিটিকে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। পাশাপাশি আদালত রুল জারি করে।
আদালতের নির্দেশে কমিটি তদন্ত করে প্রশাসনের অবহেলা পায় উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর আদালতের জারি করা রুলের দীর্ঘ শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করা হয়।
গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর রাতে গৃহবধূর (৩৫) বসতঘরে ঢুকে স্বামীকে পাশের কক্ষে বেঁধে রেখে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে স্থানীয় বাদল ও তার সহযোগী একদল যুবক। ওই সময় গৃহবধূ বাধা দিলে তারা তাকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করে মোবাইলে ভিডিওচিত্র ধারণ করে।
ঘটনার ৩২ দিন পর গৃহবধূকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশ পেলে তা ভাইরাল হয়। এতে টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের।
পরে এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না।