আবুল কাশেম, দূরবীণ নিউজ :
দীর্ঘদিনপর এবার কাজের সঠিক মূল্যায়ন এবং স্বীকৃতি পেয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। একইসাথে ডিএনসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ‘টপ টু বটম ‘ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এবং মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।
শুধু তাই নয়, একই টেবিলে পাশাপাশি বসে ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সাথে নিয়ে দুপুরের খাবার খেয়েছেন এলজিআরডি মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এবং মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ ফেসবুকে’ এই বিষয়টি বেশ প্রশংসিত হয়েছে।
এবার কোরবানি পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার পেছনে ডিএনসিসির রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাসহ অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরাও মনিটরিংসহ বিভিন্ন পর্যায়ে পরামর্শ এবং সহযোগতায় ছিলেন। যারফলে ডিএনসিসির মেয়র সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য এক বেলা দুপুরের খাবারের আয়োজন করেছেন বলে জানা যায়।
বুধবার (১২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে আনুষ্ঠানিকভাবে (ডিএনসিসি) পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ও কর্মীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন এলজিআরডি মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এবং মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। এটা সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে একটা বিরল ঘটনা। ডিএনসিসির জনসংযোগ বিভাগ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।ডিএনসিসির প্রতিটি আঞ্চলিক কার্যালয়ের মেয়রের পক্ষ থেকে সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য এক যোগে প্যাকেটজতা কাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর এই অনুষ্ঠানটিও সফল করেছে মাঠ পর্যায়ের বর্জ্য ব্যস্থাপনা কর্মকার্তা ও কর্মচারীরা।
জানা যায়, অনুষ্ঠানের সভাপতি ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এটি একটি ভিন্নধর্মী অনুষ্ঠান। এ ধরনের অনুষ্ঠান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ইতিপুর্বে হয়নি। আমরা মনে করি আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা, মশক নিধন কর্মীরা এই করোনাভাইরাসের মধ্যেও জীবনবাজি রেখে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। এই শহরকে পরিষ্কার করছেন।
আজ আমরা প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও মশক নিধন কর্মীদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়েছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য দেশ স্বাধীন করেছেন। তিনি বলেছেন, আমি খেটে খাওয়া মানুষদের সাথে সব সময় থাকতে চাই। বঙ্গবন্ধুর চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আজকে এই আয়োজন করেছি।
মেয়র আরো বলেন, আমি ২০১৯ সালে যখন মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, যে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা শহরকে পরিষ্কার রাখে, তাদের জন্য একটি ভালো বাসস্থান নির্মাণ করা প্রয়োজন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে গাবতলীতে ২২১ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি ১৫ তলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
ফলে ৪৮৪টি পরিবারের বাসস্থান হবে। ২০২১ সালে এ সকল আবাসিক ভবনের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হবে। এ সকল ভবনের পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সন্তানদের জন্য স্কুল এবং উপসনালয় তৈরি করা হচ্ছে। জনগণের ভোটে আমরা নির্বাচিত হয়েছি জনগণের পাশে থাকবো, এটাই আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি সম্পর্কে মেয়র বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে। আগামী পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে রাজস্ব আদায়ের জন্য আমরা চিরুনি অভিযান শুরু করতে যাচ্ছি। হোল্ডিং ট্যাক্স এর পরিধি বাড়ানোর জন্য আমরা এ অভিযান পরিচালনা করব। অনেক বাড়ি হয়তো দশতলা কিন্তু হোল্ডিং ট্যাক্স দিচ্ছেন দোতলা পর্যন্ত। হোল্ডিং ট্যাক্স এর পরিমাণ বাড়বে না, তবে হোল্ডিং ট্যাক্স এর পরিধি বাড়ানো হবে। এছাড়া পহেলা অক্টোবর থেকে ঢাকা উত্তরে কোন ঝুলন্ত তার থাকবে না। এ জন্য বিশেষ অভিযান শুরু হবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এলজিআরডিমন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে উন্নত দেশে রূপান্তর করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বাংলার কৃষক, শ্রমিক, জনতা, মেহনতী মানুষ সবাই মিলেমিশে ভালো থাকবে, সুখে থাকবে শান্তিতে থাকবে এই স্বপ্ন দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সকল মানুষের জন্য কল্যাণকর রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছেন।
ছবিতে- ডিএনসিসির মেয়রের পক্ষ থেকে পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য রান্ন করা খাবারের প্যাকেট তৈরি ও বিতরণ কার্যক্রম চলছে মোহাম্মদপুরে সুচনা কমিউনিটি সেন্টারে । আর এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সরাসরি তদারকিতে ব্যস্ত ডিএনসিসির উপ প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মফিজুর রহমান ভূঁইয়া ও তার লোকজন।
মন্ত্রী আরো বলেন, আজকের অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিচ্ছন্নতাকর্মী সহ নিম্ন শ্রেণির-পেশার মানুষদেরকে মানুষ হিসেবে মনে করা হতো না। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বললেন ওরাও মানুষ। ওদের মধ্যে আর আমার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। তাদেরও উন্নত জীবন, উন্নত স্বপ্ন দেখার অধিকার আছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা আমাদের শহর পরিচ্ছন্ন রাখে, পরিবেশকে ভালো রাখে। আমরা রোগমুক্ত থাকবো আর সেই মানুষগুলো কষ্টে থাকবে এটা হতে পারে না।
অনুষ্ঠানে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদ হওয়া বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্য এবং অন্যান্য শহীদদের জন্য দোয়া মাহফিল ও গভীর শ্রদ্ধা এবং দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী ও মেয়র পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও মশক নিধন কর্মীদের সাথে মধ্যাহ্ণভোজে অংশ গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন। এছাড় অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবদুল হাই, সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এম সাইদুর রহমান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন, ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ উপস্থিত ছিলেন। # কাশেম