দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
ঢাকা সিটি নির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটিতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সিটি নির্বাচনের ভোটযুদ্ধে ফলাফল গণণা না হওয়া পর্যন্ত তারা লড়াইয়ের মাঠে থাকবেন।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে দলের এক কর্মী সভায় বিএনপির উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
তাবিথ আউয়াল বলেন, এই সিটি নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনের জয়ে সমস্ত দেশের মানুষের এটা রায় হবে। পুরো বাংলাদেশের সব জেলার মানুষ ঢাকা শহরে বাস করে। ৩০ লক্ষ ভোটার অপেক্ষায় আছে ১৬ কোটি মানুষের পক্ষে আবার শক্তভা্বে বিএনপির প্রতি একটা জনরায় দেয়ার জন্য।
আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে, প্রস্তুত থাকতে হবে। উনাদেরকে সহযোগিতা করে যেন ভোটের বাক্সে জনরায়টা নিয়ে আসতে পারি, রক্ষা করতে পারি, গণনা পর্যন্ত যেন আমরা লড়তে পারি।
ধানের শীষে মনোনয়ন দেয়ার জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ স্থায়ী কমিটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাবিথ আউয়াল বলেন, আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, এই নির্বাচন একটা যুদ্ধ, এই যুদ্ধে আমরা এগিয়ে যাবো।
যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি আপনাদের সামনে থেকে লড়াই করে যাব। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর আন্দোলন তরান্বিত করে ভোটের অধিকার ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি পথে ফিরিয়ে আনতে আমরা প্রস্তুত। আগামীকাল থেকে এই লড়াই আমরা শুরু করব। ইনশাল্লাহ এই লড়াইতে আমরা অবশ্যই বিজয় ছিনিয়ে আনবো।
ভোটে গণমাধ্যমের ভূমিকার ওপর গুরত্বারোপ করে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা চান বিএনপির এই মেয়র প্রার্থী বলেন, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য গণমাধ্যমকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয়। আমাদের নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের কোনো আস্থা নাই, আশঙ্কাটা বেড়েই যাচ্ছে, সরকারের উপরে তো কোনো আস্থা নাই। গণমাধ্যমে প্রতি আমাদের অনেক আস্থা আছে, অনেক সন্মান আছে। আগামী দিনের আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি।
রাজধানীর সোনারগাঁও রোডে হক টাওয়ারে তৃতীয় তলায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নির্বাচনে দলীয় মেয়র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে এই কর্মী সভা হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে ও ঢাকা উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসানউল্লাহ হাসানের পরিচালনায় এই কর্মী সভায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, যুবদলের সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউল বারী বাবু, উত্তরের সহসভাপতি বজলুল বাসিত আনজু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সভাপতির বক্তব্যে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অভিযোগ করে বলেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রার্থী, সংরক্ষিত আসনের মহিলা প্রার্থী, কাউন্সিলর প্রার্থী তাদের বাড়ি বাড়ি হানা দেয়া হচ্ছে। কাউকে জোরপূর্বক বসিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, কাউকে হুমকি দেয়া হচ্ছে, কাউকে বিভিন্নভাবে অন্তরীণ করা হচ্ছে বিভিন্ন সাদা পোশাকধারীদের সমন্বয়ে।
এগুলো কিন্তু আগামী নির্বাচন হবে কী হবে না-এখান থেকে জনগণ পরিমাপ করে। এই নির্বাচনটা সেই ৩০ তারিখের ভোট ২৯ তারিখের মতো হয় কিনা। সেই কারণে বলব, এই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার ক্ষেত্রে এবং জনগনকে উৎসাহ-উদ্দিপনার মধ্যে ভোট কেন্দ্রে আনতে তাদের মধ্যে সাহস আমরা আমাদের নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে আমরা সৃষ্টি করব। আমরা ঘরে ঘরে যাব, মহল্লায় যাবো, সবাইকে সাহস যোগাব, সবাই ভোট কেন্দ্রে আসবে তারা ভোট দিতে পারবে, তাদেরকে ভোট দিতে হবে।
তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের বলছেন, আমরা নাকী হারার আগে হেরে যাই। আপনার কথাটা তো অসত্য না। কারণ ৩০ তারিখের ভোট যদি আপনি ২৯ তারিখে ফলাফল দেন, তাহলে হারার আগে হারা ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প নাই। আমরা হারার আগে হারি নাই, আমরা হারার আগে হারবো না।
যেকোনো নির্বাচন নিয়ে যেকোনো ধরনের ষড়যন্ত্র, আভাষ এবং পদক্ষেপ হলে তাহলে এই নির্বাচনই হবে আগামী দিনে সরকার পতনের আন্দোলনের সূচনা। কোনো দিক নির্দেশনার অপেক্ষায় আমরা থাকবো না।
আমরা সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কালোক্ষেপন না করে যেখানে যেরকম অবস্থায় আছে সেখানে সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা রাস্তায় নেমে পড়বো, জনগনের ভোটাধিকার না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না। #