দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ডেঙ্গু প্রতিরোধে এখনই ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনকে সতর্ক হতে বলেছেন। কারণ ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। এই ঘণবসতিপূর্ণ ঢাকা শহরে যদি কোনভাবে করোনার সাথে ডেঙ্গুরও প্রার্দুভাব শুরু হতে পারে।
বুধবার (১১ মার্চ) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সংক্রান্ত মামলার শুনানি নিয়ে এ সব কথা বলেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। আর দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তৌফিক ইনাম টিপু, বিএসটিআই এর পক্ষে ছিলেন সরকার এম আর হাসান মামুন।
দেশের উচ্চ আদালত বলেছেন, করোনার সাথে ডেঙ্গুর যুক্ত হলে মানুষের শেষ জায়গাটিও থাকবে না। সুতরাং ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে সতর্ক হতে হবে এবং মশা নিধনে মনোযোগি হতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে যা যা করার দরকার তাই করতে হবে।
আদালতের বাইরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার গণমাধ্যমকে বলেন,ঢাকায় বায়ু দুষণ মামলায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পৃথক ভাবে তাদের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করে।
আদালত সেটি পর্যাতলোচনা করে সিটি কর্পোরেশনের পানি ছিটানো পদ্ধতিতে সন্তুষ্ট হয়নি। গত বছর মৌসুম আসার পূর্বেই দুই সিটির সিওকে ডেকে সতর্ক করা হয়েছিল যাতে মশা নিধন সঠিকভাবে হয়।
ডেঙ্গুর প্রার্দুভাব থেকে মানুষ রক্ষা পাওয়া যায়। কিন্তু সেটিতো হয়নি। গত বছর ডেঙ্গু নিয়ে অস্তির অবস্থা জাতি লক্ষ্য করেছে। সেটি আজকে দুই সিটিকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন আদালত।
আদালত দুই সিটির কর্পোরেশনের আইনজীবীদের আদালত বলেছেন, ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। এই গণবসতিপূর্ণ ঢাকা শহরে যদি কোনভাবে করোনার সাথে ডেঙ্গুরও প্রার্দুভাব শুরু হয়।
তখন কিন্তু মানুষের শেষ জায়গাটিও থাকবে না। সুতরাং আপনারা সতর্ক হোন, মশা নিধনে মনোযোগি হন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে যা যা করার দরকার তাই করেন। এ কারনে জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন আদালত।
তিনি বলেন, এর আগে আদালত বায়ু দুষণ মুক্ত করতে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন। ওই নির্দেশনার পর পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকার চারপাশে পাচঁটি জেলায় মোবাইকোর্ট পরিচালনা করে অবৈধ ইট ভাটা বন্ধ করা হয়েছে।
এছাড়া টায়ার জালিয়ে তেল উৎপাদনের যে কাজ শুরু হয়েছে, মোবাইলকোর্টের মাধ্যমে তার অধিকাংশই বন্ধ করা হয়েছে বলেও আদালতকে জানানো হয়।
জানিা যায়, এর আগে গত ২৬ নভেম্বর রাজধানী ঢাকাকে ধূলামুক্ত করতে সকল রাস্তা,ফুটপাত ও ফ্লাইওভারে জমে থাকা ধুলাবালি, ময়লা অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ধূলা দূর করতে দিনে কমপক্ষে দুইবার পানি ছিটাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
এছাড়াও ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ জেলায় পরিবেশ আইন ভঙ্গ করে গড়ে ওঠা ইটভাটা ১৫ দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উচ্চ পর্যায়ের কমিটিতে পরিবেশ সচিব, দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ওয়াসা, ডেসকোসহ সকল পরিসেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের একজন করে প্রতিনিধি, প্রয়োজন হলে একজন বিশেষজ্ঞ রাখতে বলা হয়েছে। এই কমিটিকে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক আবেদনের ভিত্তিতে এ আদেশ দিয়েছেন।
ঢাকার বায়ু দুষন নিয়ে গত বছরের ২১ জানুয়ারি পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে হাইকোর্টে আবেদন করে এইচআরপিবি।
এই রিট আবেদনের প্রেক্ষাপটে হাইকোর্ট ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বায়ুদূষণ রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা,ঢাকার যেসব এলাকায় উন্নয়ন ও সংস্কারকাজ চলছে সেসব এলাকা (কাজের স্থান) ঘেরাও করে কাজ করা এবং উন্নয়ন ও সংস্কার কাজের কারণে ধুলাবালি প্রবণ এলাকায় দিনে দুইবার পানি ছিটাতে ঢাকার দুই সিটি মেয়র ও নির্বাহীগণকে নির্দেশ দেন।
একইসঙ্গে রুল জারি করেন। এই রুল এখন বিচারাধীন। এরই ধারাবাহিকতায় বায়ু দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে গত ২৪ নভেম্বর সম্পূরক আবেদন করা হয়। # কাশেম