দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘এডিস মশা মারার জন্য আসলে কামান বা বন্দুক দরকার নেই। এডিস মশা মারার জন্য শুধু একটা কাজ করতে হবে, সেটি হল পানি জমতে দেওয়া যাবে না। বাসা বাড়ির আঙিনা, বাড়ান্দা, ছাদ ও অব্যবহৃত পাত্রের জমা পানি ফেলে দিলেই ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হল সচেতনতা।’
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে আগারগাঁওয়ের শেরে বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারণাকালে ডিএনসিসি মেয়র এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, ‘ডেঙ্গু সচেতনতায় আমরা ‘ফাইট উইথ বাইট’ (#fightwithbite) এই হ্যাশট্যাগে প্রচারণা শুরু করেছি। জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম একটি সহজ ও বড় প্ল্যাটফর্ম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাইকে এই সচেতনতা বার্তা ছড়িয়ে দিতে অনুরোধ করছি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সবাইকে সচেতন হতে হবে।’
ডিএনসিসি মেয়র আরও বলেন, ‘ডেঙ্গু সচেতনতা কার্যক্রমে ফেসবুক ইনফ্লুয়েন্সাররা যুক্ত হয়েছেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জানাতে জনপ্রিয় ফেসবুক কনটেন্ট ক্রিয়েটর বাপকা বেটার বাবা ও ছেলে এসেছেন, সিজদাস ক্লাসরুমের সিজদাহ এসেছেন। অন্যান্য ফেসবুক ইনফ্লুয়েন্সারদের অনুরোধ করবো আপনারাও মানুষকে সচেতন করুন। সবার মধ্যে এই বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।’
ভিন্নধর্মী এই আয়োজন সম্পর্কে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমরা ভিবিন্নভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। মশক নিধনে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি প্রচারণা চালাচ্ছি। সবাইকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছি। ফেসবুকে যারা জনপ্রিয় তাদেরকে ক্যাম্পেইনে যুক্ত করেছি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত একটি নাট্যদল নাটক প্রদর্শনের মাধ্যমে জনগনকে সচেতন করা হবে। আগামী এক মাস ডিএনসিসি’র দশটি অঞ্চলে পথনাটক করে তারা জনগণকে সচেতন করবে। এডিস মশার প্রতিকৃতি নিয়ে দশটি অঞ্চলে ২০টি রিকশার মাধ্যমে মাইকিং করে জনগণকে সচেতন করা হবে। সবাই মিলে চেষ্টা করলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব হবে।’
ক্যাম্পেইনে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘এডিস মশা ঘরে এবং বাহিরে দুই জায়গাতেই জন্মায়। তবে এটি ঘরে জমানো পানিতে বেশি জন্মায়। এডিস মশাকে অনেক সময় বলা হয় এটি একটি গৃহপালিত মশা। তাই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ঘর বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। মশার কামড় থেকে নিজেদের বাচাঁতে চেষ্টা করতে হবে। সবাই সচেতন হলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব।’
ক্যাম্পেইনে আরও উপস্থিত ছিলেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোশতাক হোসেন। তিনি বলেন, ‘এখন বৃষ্টির মৌসুম। বৃষ্টি আমাদের পরিবেশের জন্য খুবই উপকারী। এটি ধুলাবালি অপসারণ করে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখে। তবে বৃষ্টির পানি জমে থাকলে সেখানে এডিস মশা জন্মায়। এটি বিপদের কারণ। তাই তিন দিনের মধ্যে জমা পানি ফেলে দিতে হবে। সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। তাহলেই আমরা ডেঙ্গু থেকে রেহাই পাবো।’
এসময় ফেসবুক ইনফ্লুয়েন্সার সিজদাহ্ এবং বাপকা বেটার ঋতুরাজ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় তুলে ধরে সবাইকে সচেতন করেন।
ক্যাম্পেইনে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেঃ জেনাঃ এ.কে.এম শফিকুর রহমান, উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে: কর্ণেল মোঃ গোলাম মোস্তফা সারওয়ার, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বির আহমেদ, ১১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেওয়ান আবদুল মান্নান, ২৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ ফোরকান হোসেন, ৪১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মতিন এবং ডিএনসিসির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। # কাশেম