দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ ও এডিস মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাজে বাধা দেওয়ায় একজনের ১৫ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
রোববার (৩০ জুলাই) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তায়েব-উর-রহমান ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের কামরাঙ্গীরচরের নবীনগর এলাকায় মো. লিটন নামক জনৈক এক ব্যক্তিকে এই দণ্ডাদেশ দেন।
অভিযানকালে আদালত নির্মাণাধীন একটি ভবনে এডিস মশার প্রচুর লার্ভা পায়৷ উক্ত ভবনটিতে আসামী মো. লিটন (৫৫) প্রধান মিস্ত্রী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ সময় তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রমে মিথ্যা তথ্য দেন এবং আপত্তিকর আচরণের মাধ্যমে আদালতের কাজে বারবার বাধা দিতে থাকেন। আদালত জনৈক ব্যক্তিকে কয়েকবার সতর্ক করলেও তাতে তিনি কর্ণপাত না করে বরং আরও বেশি মাত্রায় বাধা দেওয়ার প্রয়াস নেন। অবশেষে আদালত সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়ায় দন্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৮৬ ধারায় জনৈক ব্যক্তিকে ১৫ (পনের) দিনের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে৷
এছাড়াও অঞ্চল-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত নির্মাণাধীন আরও দুটি ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় ১ লাখ করে মোট ২ লাখ টাকা এবং আবাসিক এলাকায় অবৈধ গ্রীল ফ্যাক্টরি করে ব্যবসা করায় ফ্যাক্টরির মালিককে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ৪৩ ধারায় ১ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করেন।
অভিযানকালে আদালত মোট ১৩৩টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং মোট ৪ মামলায় সর্বমোট ৩ লাখ টাকা জরিমানা আদায় এবং একজনকে ১৫ দিনের দণ্ডাদেশ দেন।
এছাড়াও আজ করপোরেশনের আওতাধীন নিউ বেইলি রোড, গোপীবাগ, তিলপা পাড়া, মালাকাটলা, ধুপখলা , নামাপাড়া, পুকুরপাড়, মুরাদপুর, মাদ্রাসা রোড, জুরাইন, গ্রীন মডেল টাউন, মান্ডা এলাকায় আরও ৭টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
অভিযানকালে ৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের ১১টি মামলায় সর্বমোট ৪ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
এক নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মনজুরুল হক ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিউ বেইলি রোড এলাকায় ৫০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ২ স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ২ মামলায় ৪০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
দুই নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর-আল-নাসিফ ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গোপীবাগ এলাকায় ৪০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন। আদালত এ সময় কোনো স্থাপনায় মশার লার্ভা পাননি।
এছাড়াও দুই নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ ২ নম্বর ওয়ার্ডের তিলপা পাড়া এলাকায় ৫২টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং ২টি ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় ২ মামলায় ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
চার নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানা ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের মালাকাটলা ৯০টি স্থাপনা ও বাসাবাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন এবং ১টি ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় ১ মামলায় ৩ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন।
পাঁচ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সফি উল্লাহ ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের ধুপখোলা, নামাপাড়া ও পুকুরপাড় এলাকায় ৪৭টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন। আদালত এ সময় কোনো স্থাপনায় মশার লার্ভা পাননি।
এছাড়াও পাঁচ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নজরুল ইসলাম ৫২ নম্বর ওয়ার্ডের মুরাদপুর, মাদ্রাসা রোড ও জুরাইন ৪৫টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ১টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ১ মামলায় ২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
সাত নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাওসীফ রহমান ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রীন মডেল টাউন এলাকায় ৪৮টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ২টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ২ মামলায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
আজকের অভিযানে সর্বমোট ৫০৫টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়েছে। এ সময় ১২টি বাসাবাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় ১১ মামলায় সর্বমোট ৪ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। # কাশেম