আবুল কাশেম, দূরবীণ নিউজ:
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) অবাধে মশার ওষুধ চুরি করে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে । ডিএসসিসির স্বাস্থ্য বিভাগের মশক নিধন শাখার ওয়ার্ডে কর্মরত কতিপয় অসৎ ও অর্থলোভী মশক নিধন কর্মী ,’ক্র’ এবং স্প্রেম্যানসহ সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ মশার ওষুধ বিক্রি ও পাচার করে আসছে।
তবে এই চক্রটি কৌশলে আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে নেওয়া ড্রামে ড্রাম মশার ওষুধ গ্রহণ ও ব্যবহার করার নামে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ওয়ার্ড সচিবদের ফাঁকি দিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকেন। কিন্তু একটি প্রবাদ আছে, ১০ দিন চোরের আর একদিন মালিকের কাছে ধরা। অবশেষে তারা ঠিকই ধরা পড়েছেন।
মশার ওষুধ চুরি করে বিক্রি ৩ শ্রমিক চাকরিচ্যূত :
এদিকে মশার ওষুধ চুরি করে বিক্রির অপরাধে অঞ্চল-৫ এর মশক নিধন শাখার ৩ শ্রমিককে চাকরিচ্যূত করা হয়েছে। গত ১০ জুন মেয়র শেখ ফজলেনুর তাপসের নির্দেশে ডিএসসিসির সচিব আকরামুজ্জামনের স্বাক্ষরে মশার ওষুধ চুরি করে বিক্রির অপরাধে ৫৪-নম্বর ওয়ার্ডে দক্ষ মশক শ্রমিক হ্নদয় শেখ ও অদক্ষ শ্রমিক শিবলু ইসলাম এবং ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের অদক্ষ শ্রমিক বিপ্লব সরকারকে চাকরিচ্যূত করা হয়েছে। তবে আরো অনেকেই রয়েছেন ধরা ছোয়ার বাইরে ।
মশার ওষুধ চুরি করে বিক্রির ঘটনায় ৯ জুন রাতে অঞ্চল-৫ এর মশক সুপারভাইজার এস এম মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় শুধুমাত্র আবদুল মজিদ শিকদার, পিতা-মৃত: রশিদ শিকদারসহ ৩/৪ জন আজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা- নম্বর-৩৫,ধারা ৩৭৯/৪১১ প্যানাল কোর্ড-১৮৬০ । এ মামলাটি তদন্তনাধীন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ডিএসসিসিতে গত ৯ জুন দুপুর আড়াই টায় প্রকাশ্য দিবালোকে সায়েদাবাদ আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে ৬টি ওয়ার্ডে দুই শত (২০০) লিটার করে এক হাজার দুই শত (১,২০০) লিটার এডালডিসাইট কীট নাশক/ মশার ওষুধ বিতরণ করা হয়। আর এই ১২০০ লিটার মশার ওষুধ , ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মশক কর্মী- মো. ইয়াসিন, ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আয়নাল হক, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আনোয়ার হোসেন, ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিপ্লব সরকার, ৫২ নম্বর ওয়ার্ডের জুলফিকার এবং ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের শিপলু গ্রহণ করেছেন।
তারা সায়েদাবাদ আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে দুপুরে ১,২০০ লিটার এডালডিসাইট কীট নাশক/ মশার ওষুধ একটি ভ্যান গাড়িতে করে নিয়ে যান। ওই ভ্যান গাড়িটির চালক আবদুল খালেক । একপর্যায়ে যাত্রাবাড়ী থানাধীন আইডিয়াল স্কুলের সামনে যাবার পর ভ্যান চালক মোবাইলে কথা বলার জন্য ওষুধবোঝাই ভ্যান গাড়ি রেখে ৫০ গজ দূরে সরে যান। কিছু সময়র এসে দেখেন তার গাড়িতে থাকা ১২০০ লিটার মশার ওষুধ নেই।
গাড়ি চালক এই বিষয়টি আঞ্চলিক মশক সুপারভাইজার এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। পরে গোপনে খবর পেয়ে ওই অঞ্চলের কর্মকর্তারা ৪৬ নং দক্ষিণ সায়েদাবাদে একটি গোডাউনে গিয়ে হাজির হন। তারা দেখতে পান ডিএসসিসির চুরি হওয়া মশার ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছে। তারা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের সহযোগিতায় ওই গোডাউন থেকে দুই টি বড় ড্রাম ভর্তি এডালডিসাইট মশার ওষুধ, ২৫ লিটার করে ৮টি এডালডিসাইট ওষুধের গ্যালন এবং ১টি ২০ লিটারের গ্যালন জব্ধ করেন। পরে এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
#