আবুল কাশেম, দূরবীণ নিউজ :
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক থেকে পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তার ২০/২২টি পদে পনোন্নতির বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে। শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ও পদায়ন নিয়ে নানা লুকোচুরির অভিযোগ পরিচ্ছন্ন পরিদর্শকদের। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচ্ছন্ন পরিদর্শকদের মাঝে বিরাজ করছে প্রচন্ড ক্ষোভ ও অসন্তোষ ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ডিএনসিসির ২৩ জন পরিচ্ছন্ন পরিদর্শকদের পদোন্নতির জন্য খিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার একটি পদে পদোন্নতির জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ডিএনসিসির সহ-সচিব মো. মনোয়ার হোসেনের স্বাক্ষরে ২ জুলাই জারি করা এক চিঠিতে আগামী ৬ জুলাই দুপুর ১২ টায় নগরভবনে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের জন্য পরিচ্ছন্ন পরিদর্শকদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে ওই চিঠিতে কয়টি পদে পদোন্নতি হবে তার উল্লেখ নেই। চিঠিতে পদোন্নতির বিষয়টি পরিস্কার করা হয়নি। তবে মূল নথিতে বিষয়টি উল্লেখ করা আছে বলে জানান যায।
এই চিঠি জারির পর পরিচ্ছন্ন পরিদর্শকদের অভিভাবক প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা সাথে তারা যোগাযোগ করেন। বিভাগীয় প্রধান তাদের জানান , আগামী ৬ জুলাই শুধুমাত্র নগরভবনে প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে নতুন সৃস্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার একটি পদেই পদোন্নতির পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে।
পরে এই বিষয়টি আরো নিশ্চিত হবার জন্য পরিচ্ছন্ন পরিদর্শকরা ডিএনসিসির সংস্থাপন বিভাগে যোগাযোগ করেন। ওই দপ্তরের লোকজন পরিচ্ছন্ন পরিদর্শকদের জানান, এবার একটি মাত্র পদেই পদোন্নতির পরীক্ষা নেয়া হচ্ছ।
এদিকে অনলাইন নিউজ পোটাল ” দূরবীণ নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে” ডিএনসিসির সহ-সচিব মো. মনোয়ার হোসেন জানান, আগামী ৬ জুলাই নগরভবনে পরিচ্ছন্ন পরিদর্শকদের মধ্য থেকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার একটি পদেই পদোন্নতি হবে। এর বাইরে কিছু হবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দীর্ঘদিন যাবৎ পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তার ২০/২২টি শূন্য পদে পদোন্নতির বিষয়টি চাপা পড়ে রয়েছে। এবারও পরিচ্চন্ন কর্মকর্তার এসব শূন্য পদগুলোতে পদোন্নতির উদ্যোগ গ্রহণের পরিবর্তে, শুধুমাত্র নগর ভবনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান কার্যালয়ে নতুন সৃস্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার একটি পদে , পদোন্নতির জন্য লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। আর এই কূটকৌশলের ন্যাপথ্যে রয়েছেন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শীর্ষস্থানীয় কতিপয় কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীরা।
অথচ ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম সব সময়ই উদার মানসিকতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি পর্যায়ক্রমে প্রতিটি বিভাগের যোগ্য, মেধাবী ও পরিশ্রমী কর্মকর্তাদের পদোন্নতির উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে প্রকৌশলীদের পদোন্নতির জন্য একাধিক বৈঠক হয়েছে। এবার পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ার কারিগড় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিশ্রমী, মেধাবী ও শিক্ষিত পরিচ্ছন্ন পরিদর্শকদেরকে পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তার শূন্য পদে পদোন্নতির উদ্যোগ নেয়ার কথা । কিন্তু প্রথমেই মেয়রের এই নির্দেশনাকে ভিন্নখাতে নেয়া হচ্ছে।
আরো জানা যায়, গত ২৫ জুন সব পরিচ্ছন্ন পরিদর্শকরা লিখিতভাবে দ্রুত পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি এবং পদায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করতে মেয়রের কাছে বিনীত আবেদন জানিয়েছেন। বর্তমান মেয়র কর্মকর্তা ও কর্মচারী বান্ধব এবং অনিয়ম ও দুর্নীতিকে কঠোর হস্তে দমনে প্রতিজ্ঞা বদ্ধ।
তাদের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অবৈধ ও বেআইনী ভাবে ১৪ তম গ্রেডের কর্মচারী মো. জহিরুল ইসলামকে সরাসরি ৯ম গ্রেডে সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার পদে পদোন্নতি/ অতিরিক্ত দায়িত্বে পদায়ন করা হয়েছে। এই কাজে কোনো অভিজ্ঞতা না থাকা সত্বেও উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মো. জহিরুল ইসলামকে সরাসরি ৯ম গ্রেডের ওই পদে পদোন্নতি/ অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলে জহিরুল ইসলামকে দেওয়া এই দায়িত্ব বাতিলের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পদোন্নতি পাবার যোগ্যতা থাকা সত্বেও তাদের পদোন্নতির বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবৎ চাপা পড়ে রয়েছে। তাদের মধ্যে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রী ধারী কর্মকর্তা রয়েছেন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাজে প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং উন্নত ট্রেনিং সহ যাবতীয় যোগ্যতা থাকা সত্বেও তারা চরম অবহেলিত।
ডিএনসিসির অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে পদোন্নতি যোগ্য ২০/২২টি পদনো শূন্য রয়েছে। যেমন- পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক থেকে পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা, পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা থেকে সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা, সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা থেকে উপ প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এবং উপ প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার পদটিও পদোন্নতির যোগ্য।
কিন্তু নিয়মিত পদোন্নতি না হবার কারণে ডিএনসিসির বর্তমান ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয়ে ২০/২২টি পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তার পদ (১০ তম গ্রেড), সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার (৯ম গ্রেড) অনেকগুলো পদ শূন্য রয়েছে। অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের এই শূন্য পদগুলোতে একমাত্র পরিচ্ছন্ন পরিদর্শকদের মধ্য থেকেই ধাপে ধাপে পদোন্নতি এবং পদায়ন যোগ্য। # কাশেম
কাশেম ভাই কে অসংখ্য ধন্যবাদ সত্য ঘটনা তুলে ধরার জন্য
ডিএনসিসির দৈনিক মজুরী ভিত্তিক শ্রমিক কর্মীদের পর্যায়ক্রমে স্কেলভূক্ত এবং নিয়মিত করার জন্য সংবাদ পরিবেশন করার অনুরোধ রইল। ধন্যবাদ।