দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য মোঃ বদিউল আলমের বিরুদ্ধে প্লট জালিয়াতি ও দুর্নীতির মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার ( ৯ নভেম্বর)দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মোঃ হাফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে দুুদক সজেকা ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য (বর্তমানে অবসর) মোঃ বদিউল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামি মিরপুর সেকশন নং-৮, ব্লক নং-খ, রোড নং-০৩, প্লট নং -২৪ জমির পরিমাণ ০২ কাঠার প্লটের বিকল্প প্লট হিসেবে সেকশন ৬, প্লট নং ১১/১, এভেনিউ নং-০৫, ব্লক-বি, জমির পরিমাণ ২.৬৬ কাঠার প্লটটি দখলপূর্বক স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করেছেন। আর এ অপরাধে তার বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সালের ২ নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা, দন্ডবিধির ৪০৯ ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪ (৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
ঘটনার বিবরণে আরো বলা হয়, সাবেক প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর, গৃহ সংস্থান অধিদপ্তর, সেগুনবাগিচা, ঢাকা থেকে জনৈক ফজলুল হক চৌধুরী, পিতা মৃত আলহাজ্ব আজিম উদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরীর নামে মিরপুর হাউজিং এস্টেটের সম্প্রসারিত রুপনগর আবাসিক এলাকায় স্মারক- ৩৩৬০, তাং ৩০/০৬/১৯৯৪ মূলে মিরপুর সেকশন-৮, ব্লক-বি, রোড নং-৩, প্লট নং-২৪, জমির পরিমাণ ২ কাঠা বরাদ্দ প্রদান করা হয় ।
জানা যায়, ফজলুল হক চৌধুরী ৪ কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করেন। উক্ত টাকা পরিশোধের পর ফজলুল হক চৌধুরী গত ০৩/০১/১৯৯৬ তারিখ মৃত্যুবরণ করেন। ফজলুল হক চৌধুরীর মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশগণ (১) নুর জাহান বেগম (স্ত্রী) (২) চৌধুরী আজিজুল হক (ছেলে) (৩) চৌধুরী আমিনুল হক (ছেলে) (৪) চৌধুরী মোজাম্মেল হক (ছেলে) (৫) হোসনেয়ারা জামান (মেয়ে) (৬) ফাতেমা বেগম (মেয়ে) ও (৭) পারভীন আক্তার চৌধুরী (মেয়ে) ওয়ারিশ সূত্রে উক্ত প্লটের মালিক হন।
ফজলুল হক চৌধুরীর নামে প্লটটির দখল বুঝিয়ে না দেওয়ায় তার ওয়ারিশগণ তাদের নামে অন্য আরেকটি প্লট বরাদ্দ প্রদানের জন্য গত ১৯/০৫/২০০৫ তারিখ চেয়ারম্যান, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, সেগুনবাগিচা, ঢাকা বরাবর আবেদন করেন।
আসামি বদিউল আলম অত্যন্ত সুকৌশলে/পর্দার অন্তরালে থেকে প্লটটি হাতিয়ে নেওয়ার মানসিকতায় মো: মাসুদ করিম (আমমোক্তার গ্রহীতা) তার আপন মেঝ ভগ্নিপতীর সাথে ফজলুল হক চৌধুরীর ওয়ারিশগণের পরিচয় করিয়ে দেন। আসামি মো: বদিউল আলমের অদৃশ্য ইশারায় এই জমির রক্ষণাবেক্ষণ ও যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য মিরপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের আম মোক্তার দলিল মূলে মো: মাসুম করিমকে আমমোক্তার নিযুক্ত করেন।
পরবর্তীতে গত ৩১/১০/২০০৭ তারিখের জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ৪৮ তম বোর্ডসভায় ক্রমিক ৭ এর আলোচ্য বিষয়ে সেকশন নং ০৮, বøক নং-খ, রোড নং-০৩, প্লট নং -২৪ জমির পরিমাণ ০২ কাঠার প্লট এর পরিবর্তে বিকল্প প্লট হিসেবে সেকশন ৬, প্লট নং ১১/১, এভেনিউ নং-০৫,ব্লক-বি, জমির পরিমাণ ২.৬৬ কাঠার প্লট (০২ কাঠার পরিবর্তে ২.৬৬ কাঠা) বরাদ্দের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
অনুসন্ধানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, ফজলুল হক চৌধুরীর ওয়ারিশগণ কর্তৃক নিযুক্ত আমমোক্তার মো: মাসুম করিম (বদিউল আলমের আপন মেঝ ভগ্নিপতী) পুন:বরাদ্দ প্রাপ্ত সেকশন নং ০৮, বøক নং-খ, রোড নং-০৩, প্লট নং -২৪ জমির পরিমাণ ০২ কাঠার প্লট এর বিকল্প প্লট হিসেবে সেকশন ৬, প্লট নং ১১/১, এভেনিউ নং-০৫, ব্লক-বি, জমির পরিমাণ ২.৬৬ কাঠার প্লট জনাব বদিউল আলম, সাবেক সদস্য এর নিকট জমির উপর নির্মিত সেমিপাকার বাড়িসহ ২০,৪১,০০০/- টাকায় বিক্রি করেন।
আসামি মো: বদিউল আলম প্লটটির মালিক হন। আসামি মো:বদিউল আলম ক্রয়কৃত জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করার জন্য প্লটটি খান প্রপার্টিজ এÐ ডেভলপারকে প্রদান করেন। খান প্রপার্টিজ এন্ড ডেভলপার কর্তৃক শর্ত মোতাবেক ০৬ টি ফ্লাট আসামি মো:বদিউল আলমকে প্রদান করেন। আসামি ফ্লাটগুলো বুঝে নিয়ে বিক্রি করেন। অনুসন্ধানকালে আসামি মো: বদিউল আলমের সাথে মাসুদ করিমের (আমমোক্তার গ্রহীতা) সাথে আপন মেঝ ভগ্নিপতীর সম্পর্ক পাওয়া যায়।
আসামী মো: বদিউল আলম গত ১৩/০৩/২০০৫ তারিখ হতে ২৬/১২/২০০৭ তারিখ পর্যন্ত জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের (প্রশাসন ও অর্থ) এবং সদস্য (ভূমি) হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। আসামী সদস্য (ভূমি) হিসেবে বিভিন্ন প্লটের জমির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন।
আসামি মো: বদিউল আলম কর্তৃক মিরপুর সেকশন নং ০৮, ব্লক নং-খ, রোড নং-০৩, প্লট নং -২৪ জমির পরিমাণ ০২ কাঠার প্লট এর বিকল্প প্লট হিসেবে সেকশন ৬, প্লট নং ১১/১, এভেনিউ নং-০৫, ব্লক-বি, জমির পরিমাণ ২.৬৬ কাঠার প্লটটি অপরাধমূলক অসদাচারণ ও অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে দখলপূর্বক স্থানান্তর, রুপান্তর ও হস্তান্তর করেন। #