দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ‘কালোটাকা সাদা করলে দুদকের কোনো আপত্তি নেই, তবে ঘুষের টাকা সাদা করা যাবে না, এটা অনৈতিক।’
সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুদক কার্যালয়ে এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ইকবাল মাহমুদ এসব কথা বলেন। ২০১৯ সালের দুদকের বার্ষিক প্রতিবেদন রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেয়া উপলক্ষে দুদক বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোটার্স এগেইনস্ট করাপশন র্যাকের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সাথেও মতবিনিময়কালে নানা প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে যে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে সেখানে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রের কোন কোন খাতে বেশি দুর্নীতি হচ্ছে। একই সঙ্গে এই দুর্নীতি দমনে সুপারিশ করা হয়েছে।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আইনি জটিলতার কারণে মানুষ ট্যাক্স দিতে ভয় পায়। এই খাতে আইনি জটিলতার অবসান করলে মানুষ ট্যাক্স দেবে।’ তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি দমনে ৯ মাস আগে সুপারিশ করা হয়েছে। তবে তা কার্যকর হয়নি। এ অবস্থায় পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের নির্দেশে ১৪টি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়।’
তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে ‘টপ টু বটম’ কম বেশি নানা অনিয়ম ও দুনীতির অভিযোগ রয়েছে। তবে ইয়ং বিসিএস ক্যাডারদের জেলা উপ জেলায় পোস্টি দিলে হয়তোবা ঘুষ- দুর্নীতি কমতে পারে।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের সুপারিশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এখন আপিল বিভাগ নির্দেশ দিলেই সরকার এগুলো কার্যকর করতে পারে।
প্রশ্ন পর্বের আগে দুদক চেয়ারম্যান ২০১৯ সালে কমিশনের সম্পাদিত কার্যক্রমের বিস্তারিত পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত ৭ ফেব্রুয়ারি মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। তাঁর নির্দেশনা অনুসারেই আমরা দুদকে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি। বিগত বছরগুলোতে আমরা মিডিয়া, সুশীল সমাজ, সমালোচকদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা পেয়েছি।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন , আমরা কমিশনে যোগ দিয়েই বলেছিলাম কমিশন সমালোচনাকে স্বাগত জানাবে। কারণ সমালোচনার মাধ্যমে কর্মপ্রক্রিয়ার ভুল-ত্রুটি উদঘাটিত হয়, যা সংশোধনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানকে পরিশুদ্ধ করা যায়।
আজ ৫ বছরের মাথায় বলতে পারি কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে বলেই কমিশনে অভিযোগের সংখ্যা বাড়ছে।
তিনি বলেন, গত বছর থেকে ২০১৯ সালে মামলা এবং চার্জশিটের পরিমাণ কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পেয়েছে। মামলা এবং চার্জশিটের গুণগত মান নিশ্চিত করার কারণেই কমিশনের মামলায় সাজার হার ৬৩ শতাংশে উন্নীত। আমরা চাই কমিশনের মামলায় সাজার হার হবে শতভাগ। তবে আশার কথা আমরা যতটা জেনেছি ২০২০ সালে কমিশনের মামলায় সাজার হার ৭৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন , দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমন্বিত সামাজিক আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই । দুদক এক্ষেত্রে প্লাটফরম হিসেবে কাজ করছে।
মতবিনিময় সভায় দুদক কমিশনার ড.মোঃ মোজাম্মেল হক খান বলেন, দুদক বিগত বছরগুলোতে মূলত প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধ কৌশল পরিচালনা করছে। প্রশাসনিক কৌশলে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সহজ।
দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল বলেন, আমরা দিবা-রাত্রি পরিশ্রম করেছ্।ি মামলার অনুসন্ধান-তদন্তের নথি পর্যালোচনা করছি। তারপরেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মামলা সাজার হার বাড়ছে।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রেখেছেন দুদকের সচিব ড.মুহা: আনোয়র হোসেন হাওলদার, র্যাকের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ফয়েজ। #