বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:০৭ পূর্বাহ্ন

করোনা মোকাবেলায় যারা ভূমিকা রাখছেন তাদের উৎসাহ দিন : কাজী সোনিয়া

দিদারুল আলম দিদার, দূরবীণ নিউজ :
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১) সংক্রমণ জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চির চেনা বিশ্ব চরিত্র এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্বের উন্নত ও অনুন্নত সকল দেশই এ মহামারির কবলে। আক্রান্ত ও মৃত্যু লাখ ছাড়িয়ে তা প্রতিদিন শুধু জ্যামিতিক হারে বাড়ছেই। পৃথিবী বলতে গেলে বন্ধ হয়ে গেছে। যেসব জায়গা মানুষের পদচারণায় মুখর থাকে, সেগুলো দেখলে এখন ভূতুড়ে মনে হয়।

প্রতিদিনের চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা, স্কুল বন্ধ, ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা, গণ-জমায়েতের উপর বিধিনিষেধ -এসব কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একটি রোগে ঠেকানোর ক্ষেত্রে পুরো বিশ্ব যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, সেটি নজিরবিহীন। কিন্তু এর শেষ কোথায়? মানুষ কবে নাগাদ তাদের স্বাভাবিক দৈনন্দিন জীবনে ফিরতে পারবে? এর জবাব কারোরই এখন জানা নেই !

এ মহামারির প্রভাব আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিতেও এখন চলছে। এর ছোবলে চিকিৎসকসহ শতাধিক মানুষ ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন। আক্রান্ত হাজার ছাড়িয়েছে এবং প্রতিদিনই এ সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের জীবনযাত্রা স্থবির হওয়াসহ নানা সমস্যার মুখোমুখি দেশ ও কোটি মানুষ। এ মহামারি মোকাবেলায় রাষ্ট্র এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা বাস্তবায়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও কার্যক্রম চলছে। দেশব্যাপি এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং শ্রেণি পেশার মানুষ।

এ নিয়ে শুরু থেকেই সোচ্চার রযেছেন কুমিল্লা বার্ডের উপ-পরিচালক কাজী সোনিয়া রহমান। শিক্ষক দম্পতি কন্যা কাজী সোনিয়া রহমান তার ব্যাক্তিগত ফেইসবুক আইডিতে করোনাভাইরাস জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতি ও এ সংক্রান্ত তার পরামর্শ এবং পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন। এ মহামারি মোকাবেলায় চিকিৎসকদের উৎসাহ দিয়ে তিনি তার আইডিতে এর আগেও লিখেছেন যা গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে।

তিনি দেশের চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের অনুপ্রেরণা দিয়ে পাশে থাকার আহবান জানান। কাজী সোনিয়া রহমানের ব্যাক্তিগত ফেইসবুক আইডি থেকে নেয়া লেখাটি এবারও হুবহু তুলে ধরা হল।

“করোনাভাইরাস_এবং_প্রাসঙ্গিক_ভাবনা” :
করোনাভাইরাস এর সংক্রমণ প্রায় ছয় সপ্তাহ হতে চলল। ইতিমধ্যে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত মোট ২৯৪৮ জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত। এর মাঝে উদ্বেগের বিষয় হলো একজন চিকিৎসকের (ডাঃ মঈনুদ্দিন) অকাল মৃত্যু সহ ১৭০ জন চিকিৎসক, প্রায় তিন শতাধিক নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

এছাড়াও প্রশাসনের ০৯ জন কর্মকর্তা, ৫৮ জন পুলিশ সদস্য এবং বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মীও আক্রান্ত হওয়ার খবর জানা গেছে। সংক্রমনের হার এভাবে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকলে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য সামনের দিনগুলোতে ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মী পাওয়া যাবেনা।

অপর দিকে সহায়তা করার জন্য প্রশাসনের কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী, পুলিশ সদস্য এবং গণ-মাধ্যম কর্মীরও সংকট হবে। এহেন পরিস্থিতিতে চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের উজ্জীবিত রাখা আমাদের স্বার্থেই প্রয়োজন। আমাদের ভূলে গেলে চলবেনা যে এ দূর্যোগ মোকাবিলায় তারাই সম্মুখ সারির যোদ্ধা এবং তারাই করোনাযুদ্ধের আসল মুক্তিযোদ্ধা। আমাদের সবার সরাসরি এ যুদ্ধে অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকলেও আমরা মনে প্রাণে যেন তাদের সাথে থাকি। তাদেরকে ধন্যবাদ বা স্যলুট দিতে যেন ভূলে না যাই । আসুন সবাই অন্তত দিনে একবার উচ্চারণ করি–

#Thank_You_Corona_Fighters,

পাশাপাশি সহযোদ্ধা হিসেবে প্রশাসন, পুলিশ, সেনাবাহিনী, জনপ্রতিনিধি এবং গণ-মাধ্যম কর্মী সহ জরুরী সেবায় নিয়োজিত সকলকেই আমাদের সহযোগীতা করা উচিত। কেননা তারাই শুরু থেকে মাঠ পর্যায়ে জনগণকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এবং সরকারের গৃহীত কার্যক্রম বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। অতএব চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি তাদের ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

এছাড়া করোনাভাইরাস এর কারণে দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে এটাও আমাদের ভাবতে হবে। অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে তাদের বিষয়ে চিন্তা করা প্রয়োজন। কাজেই এ দূর্যোগকালীন সময়ে আমাদের লক্ষ্য করা প্রয়োজনঃ

১. আক্ষরিক অর্থেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং WHO ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা।

২. প্রত্যেক জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য ডেডিকেটেড হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা। পাশাপাশি অন্যান্য রোগীরাও যেন জরুরী চিকিৎসা পায় তা নিশ্চিত করা।

৩. এলাকা ভিত্তিক সেচ্ছাসেবী দল গঠন করা এবং তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া প্রয়োজন যেন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সেবা করতে এবং মারা গেলে তাদের জানাযা-দাফন বা সৎকারে তারা এগিয়ে আসতে পারে।

৪. যার যার অবস্থান থেকে অসহায় এবং কর্মহীন মানুষের পাশে দাড়ানো।
৫. ত্রান দেয়া-নেয়ার বিষয়ে অধিকতর যত্নশীল এবং সচেতন হওয়া।

৬. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রেও অধিকতর সচেতন হওয়া প্রয়োজন। বিভ্রান্তিমূলক তথ্য শেয়ার করে জনমনে আতংক সৃষ্টি না করা।
৭. করোনা মহামারী শেষে দেশের কৃষি এবং অর্থনীতি-তে যেন বিরূপ প্রতিক্রিয়া দীর্ঘস্থায়ী না হয় সেলক্ষে এখন থেকেই পরিকল্পনা নেয়া প্রয়োজন।
৮. শিক্ষা ক্ষেত্রেও ছাত্র-ছাত্রীরা যেন পিছিয়ে না পড়ে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া।

৯. করোনা মহামারী থেকে শিক্ষা নিয়ে “সবার জন্য স্বাস্থ্য” নিশ্চিত করা এবং এ খাতে উন্নয়নের জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
আসুন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হই। যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ি। সবাই মিলে এ দুর্যোগ মোকাবিলা করি। ইনশাআল্লাহ জয় আমাদের হবেই, নতুন ভোর আসবেই।

উল্লেখ্য কাজী সোনিয়া রহমান কুমিল্লার বিশিষ্ট চিকিৎসক ও বিএমএ কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক ডা: আতাউর রহমান জসিমের সহধর্মিণী। করোনাভাইরাস জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতির শুরু থেকেই এর সংক্রমণ মোকাবেলায় কুমিল্লায় অত্যন্ত সোচ্চার ও সক্রিয় ভূমিকা এবং সময়োপযোগী নেতৃত্ব দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।

করোনাভাইরাস জনিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় কুমিল্লায় চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে তিনি নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও বিষয়টি নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যমেও সক্রিয় ভূমিকা রেখে চলেছেন চিকিৎসক এবং সময়ের এ বীরযোদ্ধা ডা. জসিম।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে চিকিৎসকসহ যারা নানাভাবে অবদান রেখে চলেছেন তাদের উৎসাহ দিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন কাজী সোনিয়া রহমান। # কাশেম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.


অনুসন্ধান

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:১৭ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:০১ অপরাহ্ণ
  • ৪:৩০ অপরাহ্ণ
  • ৬:২৬ অপরাহ্ণ
  • ৭:৪৩ অপরাহ্ণ
  • ৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন জরিপ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি এখন লিপসার্ভিসের দলে পরিণত হয়েছে।’ আপনিও কি তাই মনে করেন? Live

  • হ্যাঁ
    25% 3 / 12
  • না
    75% 9 / 12