নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পার্টির পক্ষ থেকে ২৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন । আজ রোববার ( ৩ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তিনি ইশতেহার ঘোষণা করেন। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ , এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম ,এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদসহ সংগঠনের কেন্দ্রিয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
ইশতেহারগুলো হলো-
১। নতুন সংবিধান ও সেকেন্ড রিপাবলিক
২। জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি ও বিচার
৩। গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার
৪। ন্যায়ভিত্তিক বিচারব্যবস্থা ও আইন সংস্কার
৫। সেবামুখী প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন
৬। জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী
৭। গ্রাম পার্লামেন্ট ও স্থানীয় সরকার
৮। স্বাধীন গণমাধ্যম ও শক্তিশালী নাগরিক সমাজ
৯। সার্বজনীন স্বাস্থ্য
১০। জাতিগঠনে শিক্ষানীতি
১১। গবেষণা, উদ্ভাবন ও তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব
১২। ধর্ম, সম্প্রদায় ও জাতিসত্বার মর্যাদা
১৩। নারীর নিরাপত্তা, অধিকার ও ক্ষমতায়ন
১৪। মানবকেন্দ্রিক ও কল্যাণমুখী অর্থনীতি
১৫। তারুণ্য ও কর্মসংস্থান
১৬। বহুমুখী বাণিজ্য ও শিল্পায়ন নীতি
১৭। টেকসই কৃষি ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব
১৮। শ্রমিক-কৃষকের অধিকার
১৯। জাতীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনা
২০। নগরায়ন, পরিবহন ও আবাসন পরিকল্পনা
২১। জলবায়ু সহনশীলতা ও নদী-সমুদ্র রক্ষা
২২। প্রবাসী বাংলাদেশির মর্যাদা ও অধিকার
২৩। বাংলাদেশপন্থী পররাষ্ট্রনীতি
২৪। জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল
কককক
চোখ রাঙালে রাজনৈতিকভাবে জবাব দেয়া হবে
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, জুলাই বিপ্লবের এক বছর পেরিয়ে এসেছি। এ এক বছর আমরা শুধু কথা বলে গেছি, এখন সময় কাজের। তিনি বলেন, মনে রাখবেন, এখন থেকে রূপসা থেকে পাথরিয়া- এনসিপির কোনো কর্মীর দিকে কেউ চোখ তুলে তাকালেও আমরা রাজনৈতিকভাবে তার জবাব দেবো। কোনো হুমকি-ধমকিতে আমরা পিছিয়ে যাবো না।
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ ঘোষণার সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব দিকনির্দেশনা দেবেন, আমরা তা বাস্তবায়ন করবো। প্রয়োজনে জীবন দিতেও প্রস্তুত থাকবো।
তিনি বলেন, আমরা জানি এলাকায় এলাকায় এনসিপির কর্মীদের ভয় দেখানো হচ্ছে, বাধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মনে রাখবেন, এখন থেকে রূপসা থেকে পাথরিয়া- এনসিপির কোনো কর্মীর দিকে কেউ চোখ তুলে তাকালেও আমরা রাজনৈতিকভাবে তার জবাব দেবো। কোনো হুমকি-ধমকিতে আমরা পিছিয়ে যাবো না।
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, ভয় পাবেন না। এনসিপির আন্দোলন আর আদর্শ কেউ থামাতে পারবে না। আমাদের স্বপ্ন ন্যায়ভিত্তিক, মানবিক একটি রাষ্ট্র। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা লড়াই চালিয়ে যাবো।
অন্যায়ের সঙ্গে জড়াইনিঃ হান্নান মাসউদ্
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, গত একবছরে জ্ঞাতসারে কোনো অন্যায় ও নীতিবহির্ভূত কাজের সঙ্গে নিজেকে জড়াইনি।
রোববার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে একথা বলেন তিনি৷
ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, আমি আব্দুল হান্নান মাসউদ, আমি জুলাই অভ্যুত্থানের একজন সমন্বয়ক, আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক। আমি দৃঢ়চিত্তে ঘোষণা করছি- গত একবছরে জ্ঞাতসারে কোনো অন্যায়ের সঙ্গে, নীতিবহির্ভূত কাজের সঙ্গে আমি নিজেকে জড়াইনি। তিনি লেখেন, সমন্বয়ক পরিচয় আমার জন্য গর্বের, অহংকারের। বিতর্কিত করার কোনো সুযোগ নেই। এই শব্দটিই ইতিহাস।
মুজিববাদী নয়,নতুন সংবিধান চাইঃ সারজিস আলম
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, বাহাত্তরের সংবিধান একটা দলের ছিল। যে সংবিধান আরেকটা দেশ থেকে পাস হয়ে এসেছে। এই মুজিববাদী সংবিধান আর বাংলাদেশে থাকতে দিতে পারি না। আমরা আজ এই মঞ্চে মুজিববাদী সংবিধান ভেঙেচুরে শেষ করে দিয়ে নতুন সংবিধান চাইতে এসেছি। রোববার (৩ আগস্ট) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ৫৪ বছরেও দেশের মানুষ অধিকার পায়নি। আজ থেকে এক বছর আগে আমরা এই শহীদ মিনারে এসেছিলাম। এ দিনে হাসিনার পতনের ডাক এসেছিল। এক বছর হয়ে গেছে আজও আমাদের অধিকার পাইনি। আমরা আর হতাশার কথা শুনতে চাই না।
সারজিস আলম বলেন, আমরা শহীদ ভাইদের হত্যার বিচার চাইতে এসেছি। আমরা এই সরকারের কাছে মৌলিক সংস্কারের নিশ্চয়তা চেয়েছি। শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহত যোদ্ধাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করতে এখানে এসেছি।
তিনি বলেন, আমাদের লড়াই ২৪ এর না। বিডিআর হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছে, ১৩ সালে শাপলা চত্বরে যারা নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের বিচার চাইতে এসেছি। এই বাংলাদেশে যেমন জঙ্গিবাদ মেনে নেব না, তেমনি জঙ্গি নাটক ও মেনে নেব না। এই বাংলাদেশে সিভিল সোসাইটি নামে সব দালালকে আর মেনে নেব না।
#