দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করার মতো গর্হিত অপরাধ আল্লাহ সইবে না। যারা করেছে, তারা নিশ্চয়ই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও গোপালগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
রোববার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে দক্ষিণ সিটির প্রধান কার্যালয় নগর ভবন প্রাঙ্গনে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, শেখ ফজলুল হক মনি’র ৮৪তম জন্মদিবসের স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এ মন্তব্য করেন।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, “ওর (তাপসের) বাবা-মা’র কথা ওর কিছু মনে নেই। পরশের আবছা আবছা মনে আছে। কি অপরাধ করছে বঙ্গবন্ধু? কি অপরাধ করছে মনি ভাই? অপরাধ কি এই – তারা এদেশের মানুষের মুক্তি ও স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছে? খুনিরা বঙ্গবন্ধুসহ আমাদের পরিবারের প্রায় সকল সদস্যকে হত্যা করছে। এত বড় অপরাধ আল্লাহ সবে (সইবে) না। যারা করছে তারা নিশ্চয়ই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।”
শত প্রতিকূলতার মাঝেও পরশ-তাপসকে নিজের সন্তানের মতো আগলে রেখেছিলেন জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ সেলিম বলেন, “আমি আজকে এখানে এসে অত্যন্ত আনন্দিত। আমার সেই তাপস আজকে দেশে পরিচিতি লাভ করছে। শিক্ষা-দীক্ষায় বড় হয়েছে। হয়তো মণি ভাই থাকলে এর চাইতে বেশি করতে পারত। কিন্তু আমি এবং আমার স্ত্রী কখনো কাউকে ওদের গায়ে একটা টোকা পর্যন্ত দিতে দেইনি।”
শেখ পরিবার নয়, যারা ষড়যন্ত্র করেছিল আল্লাহ তাদেরকেই একে একে নিঃশেষ করে দিয়েছেন উল্লেখ করে শেখ সেলিম বলেন, “শেখ পরিবার বাংলাদেশে যেন আর কোনদিন এ দেশের কথা বলতে না পারে, সেজন্য শেখ মুজিবকে সপরিবারে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আল্লাহ বলে — দেখো। শেখ হাসিনা, শেখ রেহেনা বাইরে ছিল। শেখ হাসিনা আজকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নম্বর ব্যক্তি। তিনি আজ এ দেশের প্রধানমন্ত্রী। তাপস আজ সিটি করপোরেশনের মেয়র। আজকে আমি পার্লামেন্টে আট আট বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য।
বাংলাদেশের ইতিহাসে কেউ নেই যে ৮ বার পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। পরশ ইংরেজিতে মাস্টার্স করেছে। তাকে এখন দায়িত্ব দিয়েছে।আল্লাহ যদি চায় কেউ কিছু করতে পারে না। এই পরিবারটা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য ত্যাগের পরিবার। আমরা ভোগ চাই না, আমরা ত্যাগ করতেই আছি। আমাদের সম্পর্কে কেউ কোনও বদনাম করতে পারবে না। কিন্তু যারা এটা করেছে, তারা নিঃশেষ হয়ে যাবে। এক একেকটা নিঃশেষ হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছেন তাদের পরিণতি কি হয়েছে?”
সভাপতির বক্তব্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও শেখ ফজলুল হক মণি’র ছোট ছেলে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস তাঁর প্রয়াত পিতাকে বাংলাদেশের চে গুয়েভারা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের থিংক ট্যাংক হিসেবে অভিহিত করেন।
মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস বলেন, “চে গুয়েভারাকে যেমনি বিপ্লবের, কমিউনিস্ট সংগ্রামের অন্যতম নেতা বলা হয়, তেমনি শেখ ফজলুল হক মণি বাংলাদেশের বিপ্লবের, সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন। বাংলাদেশের চে গুয়েভারা ছিলেন শেখ ফজলুল হক মণি। শেখ মণি শুধু সংগ্রামই করেননি, নেতৃত্বই দেননি — তিনি একজন থিংক ট্যাংকও ছিলেন। ভবিষ্যতে কি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট হবে, কিভাবে আমাদেরকে সতর্কতার সাথে এগিয়ে যেতে হবে — এ সকল কিছুই তার লেখনীর মাধ্যমে তিনি বিশ্লেষণ করে গেছেন। তিনি অত্যন্ত মেধাবী একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, সংরক্ষিত মহিলা আসন-২ এর সংসদ সদস্য জিন্নাতুল বাকিয়া বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব আকরামুজ্জামানের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, সেচ্চাসেবক লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন থানা ও ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি সাধারণ-সম্পাদক এবং করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। # কাশেম