দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ । বছরে দুটি ঈদ বয়ে আনে বিশেষ কিছু, বিশেষ আনন্দ। সারা বছর ধরে বিশ্বের সকল মুসলিম জাতি অপেক্ষায় থাকে ঈদ উৎসবের। প্রস্তুতি চলে বছরজুড়ে। তবে অতীতের মতো জাঁকজমকপূর্ণ ঈদ আয়োজন এখন আর চোখে পড়ে না। তবে বাঙালীর ঈদ একটু হলেও ব্যতিক্রম। এই উৎসব শুধু মুসলমানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র বাঙালী জাতি যোগ দেয় এই উৎসব আনন্দে। এই বৈশিষ্ট্যই বাঙালির ঈদকে মহিমান্বিত করে তোলে।
ঈদের ৭ দিন এই বর্ণাঢ্য আয়োজন ঈদের দিন শুরু হয়ে আজ শনিবার (৭ মে) রাতে শেষ হয়েছে। এই উৎসব আয়োজকদের পক্ষে মোহাম্মদ. হাবিবুল ইসলাম সুমন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর আওয়ামীলীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আবদুর রহমান, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাজী মোঃ ঈসমাইল, বংশাল থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, এই ঈদে এমনটা আয়োজনের কিছু ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন পুরান ঢাকার বাসিন্দারা। প্রতি বছর ন্যায় পুরান ঢাকাবাসির ঈদের ৭ দিন পর্যন্ত আনন্দ চলমান থাকে। এমনিতেই বিগত বছর যাবৎ কোভিড-১৯ এর কারণে ঈদের আনন্দে অনেকটা ভাঁটা পড়েছে। কোভিড-১৯ এর কারণে ঈদের আনন্দ পুরোপুরি গৃহবন্দী অবস্থায় ঈদ পালন করেছে।
এবারের ঈদুল ফিতর আনন্দের চাহিদা পুরোপরি পূরণ করে চোখে পড়ার মত এক ব্যতিক্রম আয়োজন ছিল ঐতিহ্যবাহী বংশালের।
পুরো বংশাল এলাকাটি আলোকসজ্জা দিয়ে সজ্জিত করা হয়। ঐতিহ্যবাহী বংশাল পুকুরের রাতের দৃশ্য আলোর ফুয়ারায় দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। তার সাথে পুকুরের নৌকা ভ্রমণের সুব্যবস্থা করা হয়েছিল। নৌকাগুলোর সাজ-সজ্জায় ছিল মোগল রাজকীয়তার ছাঁপ। শিশু- যুবক-যুবতী-বৃদ্ধরা পর্যন্ত নৌকা ভ্রমণের আনন্দ উপভোগ করেন। শিশুদের বিনোদনের সার্বিক আয়োজনে এক বিশাল মিলন মেলায় মন চায় যেন শিশুদের মতো আবারো ফিরে যেতে চাই ঈদের দিনের স্বপ্নীল শৈশবে।
ঐতিহ্যগত দিক থেকে আরেকটি আয়োজন ছিল অতুলনীয় ‘ঈদ আনন্দ মেলা’। পুরান ঢাকার বংশালের ফ্রেঞ্চ রোড নয়াবাজারে ঈদের দিন থেকে শনিবার পর্যন্ত ৫ দিনব্যাপী চলছে আনন্দ মেলা। মেলায় সান্তা মারিয়া নৌকা, নাগরদোলা, ইলেকট্রিক হর্স রাইড, চরকি, ট্রেন, ঘোড়া গাড়ি, জাম্পিং প্যাড, ফোর হর্স রাইড, শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের জন্য বিভিন্ন রাইডের আয়োজিন ছিল।
পুতুল নাচ, ঐতিহ্যবাহী নৌকা ভ্রমণ ও খেলনার বিভিন্ন পশরাসহ খাবারের স্টল। এছাড়া প্রতি দিনের আতশবাজি, সারফি লেজার, আকর্ষণীয় লেজার আলোক সজ্জা রয়েছে দর্শনার্থীদের আকর্ষণ বাড়ায়। স্থানীয়সহ আশপাশের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন ভিড় করছে এই আনন্দ মেলা দেখতে।
ঈদ আনন্দ মেলাটির আয়োজন করে ৩৫ নং ওয়ার্ড, মহানগর দক্ষিন আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক ও ঐতিহ্যবাহী মিল্লাত উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এস আই ফারিয়াদ।
তিনি বলেন- ‘পুরান ঢাকায় বিনোদনের তেমন জায়গা নেই। সে জন্য ঈদে যেন পুরান ঢাকার বাসিন্দারা কিছুটা হলেও বিনোদনের সুযোগ পায় তাই এই মেলার আয়োজন। এখানে যে রাইডগুলো রয়েছে অন্য যে কোনো জায়গা থেকে কম টাকায় এখানে বিনোদন। আগত সর্বস্তরের জনসাধারণ যেন সেগুলো উপভোগ করতে পারবেন এ বিষয়টি আমরা বিবেচনা করেছি।
তিনি আরো বলেন- আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আবহমান গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। তবে সামনের ঈদগুলোতে আরও সুন্দরভাবে ঢাকাবাসীকে আনন্দ উপহার দেওয়ার জন্য মেলাটির আয়োজন করবো।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ এর সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য জিন্নাতুল বাকিয়া মেলায় উপস্থিত থেকে এই আয়োজন উপভোগ করেন।
সমাপনিতে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ এর সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য জিন্নাতুল বাকিয়া বলেন: – কর্ম ব্যস্ত নগর জীবন এইমেলা আমাদের গ্রামীণ পরিবেশের সাথে ঢাকাইয়াদের সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ করেছে।
আমরা চাই প্রতি বছর যেন এই মেলা হয় এবং আমাদের সন্তানেরা যেন বিনোদন আরো দ্বিগুণ উপভোগ করতে পারে। তিনি আরো বলেন: এই আয়োজন শুধু পুরানো ধাকায় না সমগ্র ঢাকা শহরের মধ্যে ঈদ উদযাপনের দিক থেকে সবচেয়ে সেরা আয়োজন করে দেখিয়েছে বংশালবাসী। এসব আয়োজনের পেছেনে থাকা সকলকে আমরা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানায়। #