দূরবীণ নিউজ ডেস্ক:
প্রাণঘাতি করোনার কারণে দেশে আটকা পড়া এক-তৃতীয়াংশের বেশি সৌদি ফেরত কর্মীকে আবার পাঠানো সম্ভব হবে না বলে মনে করে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা)। সৌদি সরকারের নির্দেশনার কারণেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এ প্রক্রিয়াকে সহজীকরণের জন্য জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রয়োজন বলে জানিয়েছে বায়রা।
বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বায়রার পক্ষে লিখিত বক্তব্যে এ কথা বলা হয়।
কমিটির সভাপতি আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে সদস্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ, অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ এবং মো. সাদেক খান বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠকে বায়রা উল্লেখ করে, ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের এ সার্কুলার অনুযায়ী একজন কর্মীকে সব কার্যক্রম পুনরায় করে পাঠানো ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ। এ প্রক্রিয়ায় প্রায় ৩০-৪০ ভাগ কর্মীর ক্ষেত্রে তাদের কর্মস্থলে যোগদান করা প্রায় অসম্ভব।
বায়রার সভাপতি বেনজির আহমেদ এবং মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে যে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে তা কাটিয়ে উঠে শ্রমবাজারকে পুনরায় চালু করা বিশাল চ্যালেঞ্জের বিষয় হবে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে একটি প্লাটফর্মে কাজ করা জরুরি।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কো-অর্ডিনেশন সেল গঠনের প্রস্তাব করে বায়রার পক্ষে বলা হয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বায়রার প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করে এ সেল গঠন করা যেতে পারে।
এ সেলে পূর্ববর্তী দক্ষতাসম্পন্ন অথবা সৌদি সরকারের উচ্চপর্যায়ে ব্যক্তিগত যোগাযোগ আছে এমন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে তা পরিচালনার জন্য একজন চিফ কো-অর্ডিনেটর নিয়োগ করা যেতে পারে।
বায়রার সুপারিশে আরও বলা হয়, যে সব কর্মী ছুটিসহ বিভিন্ন কারণে দেশে ফেরার পর করোনার কারণে কর্মস্থলে ফিরতে পারেননি বা বর্তমানে যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়নি এবং যারা যাওয়ার চেষ্টা করছেন জরুরি ভিত্তিতে তাদের একটি ডাটাবেজ প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
রিক্রুটিং এজেন্সির হাতে প্রক্রিয়াধীন প্রায় ৮৬ হাজার কর্মীর চাহিদা রয়েছে তাদের করোনার কারণে প্রেরণ সম্ভব হয়নি। ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি মেয়াতোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। নতুন প্রক্রিয়ায় ভিসা সংগ্রহ করা দুঃসাধ্য। ঢাকায় সৌদি দূতাবাস, গামকা এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ ও আলোচনার মাধ্যমে এর সুরাহা প্রয়োজন।
প্রতারণা বা চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তদন্তের আগে রিক্রুটিং এজেন্সির কার্যক্রম বন্ধ না করার দাবি জানিয়ে বায়রার পক্ষ থেকে বলা হয়, সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পুরুষ ও নারী কর্মী পাঠানোর পরও কখনও কখনও কর্মীর নিয়োগকর্তা চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেন। আবার অনেক কর্মী বিদেশে গিয়ে হোমসিকসহ নানা কারণে দেশে ফিরে আসেন।
দেশে ফিরে এসেই তারা সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্টের নামে বিএমইটি কিংবা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দাখিল করে। প্রবাসী কর্মীদের অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্রণালয় কিংবা বিএমইটি সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সির সব কার্যকলাপ বন্ধ করে দেয়া হয়। একটি রিক্রুটিং এজেন্সির নামে অভিযোগ থাকতে পারে। অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত রিক্রুটিং এজেন্সির স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।