আবুল কাশেম, দূরবীণ নিউজ :
নগরীতে উদ্ভেগজনক হারে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর পাশাপাশি এডিস মশার জীবানু বাহিনী ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও।
যারফলে এলজিআরডি মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, নগরীতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, নির্মাণাধীন ভবন, পরিত্যক্ত বা যেসব ভবনে জমে থাকা পানিতে এডিস মশার (ডেঙ্গুর) লার্ভা পাওয়া যাবে, ওই ভবনের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই ) সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীএই নির্দেশনা দিয়েছেন।
এ বছরের জানুয়ারি থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত সর্বমোট ৫৩৬ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। উত্তর সিটি কর্পোরেশনের তুলনায় দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে এডিস মশার প্রকোপ একটু বেশি।
এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, নির্মাণাধীন ও পরিত্যক্ত ভবন অথবা বাসার ছাদ, আঙিনা, ফুলের টব, ফ্রিজ-এয়ারকন্ডিশনে কোন অবস্থাতেই যেন জমা পানি না থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ তিন দিনের বেশি জমা পানিতে মশা প্রজনন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দু-একদিনের মধ্যেই ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে জোরালোভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।
এলজিআরডি মন্ত্রীর এই নির্দেশনা ও উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। মন্ত্রী দেশের নাগরিকদের বৃহত্তর স্বার্থে এই কঠিন নির্দেশনা দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বেশ কয়টি নিজস্ব ভবন, আঞ্চলিক কার্যালয়ের ছাদ, বারান্দা, টয়লেটের পার্শ্বে খালি জায়হায় বৃষ্টির পানি জমে শ্যাত শ্যাতে অবস্থা থাকে। লোকজনকে এরই মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে। কিন্তু তাদের অসুবিধার বিষয়টি দেখার মতো কিউ নেই। এসব বিষয়ে কেউ নজরও দেয় না।
এদিকে নাম না প্রকাশের শর্তে ডিএনসিসির একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, চলমান বৃষ্টিতে ঢাকা উত্তর সিটির মহাখালী আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ভবনের পঞ্চম তলায় রাজস্ব বিভাগের কক্ষগুলোর দক্ষিণ পার্শ্বে কাঁচের দেওয়ালের বাইরে পুরো বারান্দা ও ফ্লোর সবসময় উপরের ছাদ থেকে চুয়েছে পানি পড়তে থাকে।
আর এই পানিতে পুরো ফ্লোরটা ডেমেজ হয়ে যাচ্ছে। কাঁচের দেওয়াল সব সময় বন্ধ রাখতে হয়। ফলে ভেতরে কক্ষগুলো প্রচন্ড গরম হয়ে থাকে। একই ধরনের সমস্যা ওই ভবনের অন্যান্য ফ্লোরেও। আর এই কষ্টের মধ্যেই লোকজন কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। কিন্তু বারান্দায় জমে থাকা পানিতে প্রচুর ডেঙ্গুর জীবানু থাকতে পারে বলে অনেকের ধারণা।
মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনালের ভবনের ছাদে প্রচুর আর্বজনা এবং ময়লা পানি জমে আছে। ২০০৩-২০০৪ অর্থ বছরে আধুনিক বাস টার্মিনাল ভবনটি নির্মাণের পর আজ পর্যন্ত এই বাস টার্মিনাল ভবনের ছাদের ময়লা আর্বজনা পরিস্কার করা হয়নি। একই অবস্থা গাবতলী আন্তজেলা বাস টামির্নাল এবং সায়েদাবাদ আন্তজেলা বাস টার্নিনালেও।
একই ধরনের পরস্থিতি ঢাকার দুই সিটির নিজস্ব ওয়ার্কশপ, গাড়ির গ্যারেজ এবং মার্কেটগুলোর। অধিকাংশ ভবনের ছাদের ওপর অনেক পুরনো মায়লা ও বৃষ্টির পানি জমে ছাদ ডেমেজ হয়ে যাচ্ছে।
এরমধ্যে কাওরানবাজার এলাকার ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের ভবনের ছাদে এবং ওই মার্কেট ভবনের ছাদে পানি জমে থাকতে থাকতে ঘাস গজিয়ে উঠেছে। এগুলো নিয়মিত পরিস্কার করা হয় না।
গুলশান-২ নম্বরে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার কার্যালয়ের পুরো ভাউন্ডারির দেওয়ালের ভেতরে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকে।মিরপুরেও ডিএনসিসির নিজস্ব ভবনে এবং মার্কেটের ছাদে এবং দেওয়ালের ভেতরে বৃষ্টির পানি জমে থাকে।
অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির নগর ভবনের ৬ তলায় ক্যান্টিন সংলগ্ন ফ্লোরে দক্ষিণে ছাদে বৃষ্টির পানি জমে শেওলা গজিয়ে উঠেছে। এছাড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের পুরনো ভবন এবং মার্কেটের ছাদে বৃষ্টির পানির সাথে ময়লা আর্বজনা জমাট বেধেছে। এগুলো দ্রুত পরিস্কার না করলে ডেঙ্গু মশা বংশ বিস্তার দ্রুত বাড়তে থাকবে।
দুই সিটির পক্ষ থেকে নিজস্ব কার্যালয়, ভবন ও মার্কেট পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য আগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা প্রয়োজন। পরে নগরীতেও মোবাইল কোর্ট জোরালো পরিচালনা করলে বেশি সফলতা পাওয়া যাবে বলেন নগরবাসীর ধারণা।
#