দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে চাকরি প্রাপ্ত আইটি বিষয়ে দায়িত্ব পালনকারী আশুতোষ নাথ এবার বৃত্তি নিয়ে পিএইচডি করতে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন ।
আগামী ১২ আগস্ট আশুতোষ নাথ স্ত্রী গান্ধী দেবীসহ যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার কথা রয়েছে।
ইতোমধ্যে আশুতোষ নাথের তিনটি আর্টিকেল আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তার বৃত্তি নিয়ে পিএইচডি করতে যাওয়ার সংবাদে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আনিন উদ্দিন, তার কার্যালয়ের কর্মকর্তা- কর্মচারীরাসহ অনেকেই আনন্দিত হয়েছেন।
তিনি বোস্টনের ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইডি করতে যাচ্ছেন। সেখানে তিনি কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি করবেন। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করবেন আশুতোষ।
মুদ্রাক্ষরিক পদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি করতে যাওয়ার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। এরপর বিষয়টি নিয়ে পরিচিত মহলের সবাই সবাই তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন।
এদিকে এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক গণমাধ্যমকে বলেছেন, আশুতোষ নাথ বৃত্তি নিয়ে পিএইচডি করতে যুক্তরাষ্ট্রে যাবার খবরে আমরা তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।
আগামী ১২ আগস্ট তার স্ত্রী গান্ধী দেবীসহ যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। সেখানে বোস্টনের ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিন অ্যান্ড সিনথেটিক অর্গানিক কেমিস্ট্রির ওপর পিএইচডি করবেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করবেন আশুতোষ।
আশুতোষ নাথ খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার পান্নাবিল গ্রামের মিলন নাথের ছেলে। ২০০৮ সালে মানিকছড়ি রানি নীহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও মানিকছড়ি গিরি মৈত্রী কলেজ থেকে ২০১০ সালে এইচএসসি এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চট্টগ্রাম হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ থেকে রসায়নে বিএসসি (অনার্স) সম্পন্ন করেন।
পরবর্তীতে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে রসায়নে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে তার তিনটি আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে।
সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোতাহার হোসেন সাজু তাকে অভিনন্দন জানিয়ে ফেসবুকে লেখেন- ‘আশুতোষকে প্রাণঢালা অভিনন্দন। একজন কর্ম পাগল ও অনুসন্ধিৎসু প্রকৃতির মানুষ আশুতোষ।
তাকে নিয়োগের সময় নিয়োগ কমিটির সদস্য হিসেবে আমিই তার সৃজনশীলতা ও দক্ষতা দেখে এক বাক্যে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক হিসেবে নিয়োগ দিতে।
আমি প্রত্যেকটি পরতে পরতে ওকে উৎসাহ দিতাম সহযোগিতা করতাম। তার ভেতরে প্রথম দিনই উৎসাহ’র আলো দেখতে পেয়েছিলাম। বুয়েট থেকে রসায়নে মাস্টার্স পরীক্ষার পর মলিকুলারের এক ব্যতিক্রমধর্মী আবিষ্কারের জন্য তার নেতৃত্বে নেপালে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল যায়।’
‘তিনি প্রতিনিধিদলের নেতা হিসেবে এক অনবদ্য প্রেজেন্টেশন দেন। নেপাল সরকার তার ভূয়সী প্রশংসা করে। কর্মদক্ষতা, সততা, নিয়মানুবর্তিতা ও ইচ্ছাশক্তি মানুষকে কত বড় ও নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করে তার উৎকৃষ্ট নজির আশুতোষ। তাকে ভুলবো না কোনোদিন। আশুতোষ ও তার সহধর্মিণীর জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা।’
যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডির সুযোগ পাওয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আশুতোষ নাথ বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবারের সবাই অত্যন্ত আনন্দিত। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল রসায়নে উচ্চতর গবেষণা করার। ঈশ্বরের কৃপায় সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলছে। সবার কাছে আশীর্বাদ চাই।’
/ কাশেম