শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৪ অপরাহ্ন

হায় করোনা , তোর ভয়ে কেউ পাশে নেই  !

দূরবীণ নিউজ , সম সাময়িক ছোট গল্প:
করোনা ভাইরার্স কতটা ভয়ঙ্কর এবং ভিতিকর। বর্তমান বিশ্বের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে, অতি সহজেই বুঝা যায়। পরিবারের সদস্য, আত্মীয় স্বজন, বেতন ভোগী কর্মচারী এবং সমর্থকরাও জীবনের মায়ায় এরিয়ে থাকেন।

অথাৎ কঠিন বিপদের কালে কেউ পাশে থাকেন না। এমনকি সারাজীবনের অর্জিত অর্থ সম্পদও অনেক সময় পুরোপুরি কাজে লাগানো যায় না।
করোনা ভাইরার্স ও সমসাময়িক ভিতিকর পরিস্থিতি নিয়ে নিম্মে সংগৃহিত একটি ছোট গল্প পাঠকদের জন্য প্ররিবেশন করা হলো:

# গল্পটি এইভাবেই শুরু করা হলো; টম নামে এক যুবক তার বন্ধু কেটকে ডেকে বলল, দোস্ত দেখ করোনায় কিছুই মানে না।

# কেট মুসকি হেসে জবাব দিল, আরে এসব কিছু না । টাকা আর লোকজন থাকলে সব কিছই ম্যানেজ করা যায়। করোনা তো একটা ভাইরার্স এটাকে সহজেই ম্যানেজ করা যাবে, চিন্তা নেই । কিন্তু কেটের এই কথা শুনে টমের অনেক মন খারাপ ।

# পরে টম ভাবলো এবং হতাশ না হয়ে কেটকে তো করোনাভাইরার্সে ভয়াবহতার বাস্তবতা বুঝাতে একটি বিকেলে রাস্তায় বের হলো। তারা দেশের বড় বড় নামী দামী হাসপাতালের সামনে ঘুরাঘুরি শুরু করলো। অনেক সময় পরে একটা গাড়ির বহর তাদের সামনে একটি বড় হাসপাতালের গেটে এসে থামলো।  টম এবং কেট দুই বন্ধ কোনো কথা না বলে, চুপচাপ সব কিছু দেখতে থাকলো।

এইবার শুরু হলো তাদের ছোট গল্পটি:

দেশের সবচেয়ে স্বনামধন্য হাসপাতাল। উচ্চবিত্ত ছাড়া এই হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যয় বহন করা খুব কঠিন। এখানে ৪ টা আলাদা ভিআইপি কেবিনই আছে যা মন্ত্রী, সাংসদ আর সিআইপিদের জন্য সংরক্ষিত থাকে। সামান্য সর্দি, জ্বর, কাশি হলেও উনারা এখানে সেবা নিতে আসেন।

রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা, একটা ব্যক্তিগত এম্বুলেন্স এসে থামল হাসপাতালের সামনে। পিছনে দুইটা পাজেরো, তিনটা প্রাইভেট কার আর বাইশটা মোটরসাইকেল।

পাজেরো হতে দুজন লোক গটগট করে নামলেন, কোমরে অস্ত্র। রিসেপশনে গিয়ে ভদ্রলোককে ভর্তির ব্যাপারে কথা বললেন। একজন ডিউটি ডাক্তার এসে এম্বুলেন্স হতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে রোগীর সব সিম্পটম জানতে চাইলেন।

গলাব্যথা, বমি, ডায়রিয়া, হালকা জ্বর আর সর্দি-কাশি শুনে বললেন,- সরি স্যার, আমাদের হাসপাতালে আপনাকে ভর্তি করা যাবে না। আমাদের ডাক্তার- নার্সদের কোন পিপিই নেই। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেউ আপনার চিকিৎসা করবে না।

তাছাড়া আপনার যেহেতু করোনার সিম্পটম মিলছে, আপনাকে আগে ABCDE হতে করোনা টেস্ট করে রিপোর্ট নিয়ে আসতে হবে। নেগেটিভ হলে চিকিৎসা দিতে আমাদের আপত্তি নেই। তাছাড়া আপনাকে আইসিইউ সাপোর্ট দিতে হতে পারে, এখন সবই ফুল।

ভদ্রলোকের পিএস ABCDE এর ২১ টা হটলাইনে কল করেও যোগাযোগ করতে পারলেন না। হয় এঙ্গেজ টোন আসে নইলে বন্ধ।

বাধ্য হয়ে এম্বুলেন্স ২য় বিখ্যাত হাসপাতালের দিকে রওয়ানা হলেন। এদিকে ডাক্তারের সাথে হওয়া কথাবার্তার সময় রোগীর সিম্পটম শুনেছে অনেকেই। ২য় হাসপাতালে যেতে যেতে একটা পাজেরো আর দুইটা প্রাইভেট কার ছাড়া বাকি সব যানবাহন ধীরে ধীরে গায়েব হয়ে গেল। রয়ে যাওয়াগুলোতে উনার বউ, ছেলে-মেয়ে আর ঘনিষ্ঠ কজন আত্মীয় আছেন। আর এম্বুলেন্সে উনার পিএস আর দুইজন বডিগার্ড। বাকি কাউকে খুঁজে পাওয়া গেল না।

ভোর ৬ টা পর্যন্ত ৮ টা হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করলেও কোথাও উনাকে ভর্তি করানো গেল না। ইতিমধ্যে নিজের পরিবার আর সাথের ৩ জন ছাড়া সবাই বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে কেটে পড়েছে। এই ৩ জনও ভীতসন্ত্রস্ত চোখে দাঁড়িয়ে আছে, পালাতে পারলে বাঁচে।

ওই ভিভি আইপি রোগী তার পিএসকে দিয়ে উচ্চ পদস্থ এক কর্মকর্তাকে ফোন দেয়া হল, কেউ ফোন ধরল না। শুধুমাত্র একটা জবাব আসলো, করোনার কারণে স্যার এখন কোয়ারেন্টাইনে। উনার ব্রিফিং এর সময়কার পিছনে দাঁড়ানো ৪৩ জনের ১ জন করোনা পজিটিভ। পরামর্শ দিলেন, বাসায় গিয়ে চিকিৎসা করতে।

রোগী ভদ্রলোক তার পিএসকে বললেন,
– সিঙ্গাপুর হতে এয়ার এম্বুলেন্স আনার ব্যবস্থা কর।
– স্যার ফ্লাইট বন্ধ, ভিসাও বন্ধ।
– আই ডোন্ট কেয়ার। তুমি আমেরিকা হতে আনাও, কানাডা হতে আনাও… যত কোটি টাকা লাগে আমি দিব।

একঘন্টা চেষ্টা করে পিএস জানাল,
– সরি স্যার, কোন দেশই এরকম রোগী নিতে রাজি না। অনেক দেশ স্যার এয়ারপোর্টই বন্ধ করে দিয়েছে। দশগুণ টাকা দিলেও রাজি না স্যার। আপনার ব্যক্তিগত ডাক্তারও আসতে পারবেন না বলেছেন। টেলিফোনে পরামর্শ দিবেন বলেছেন স্যার।

ভদ্রলোককে নিয়ে যাওয়া হল উনার ফার্ম হাউজে। এখানে উনার সব টাকার সিন্দুক, ফ্ল্যাট আর জমির দলিল, স্বর্ণ ইত্যাদি রাখা। উনার স্ত্রী, ছেলেমেয়েদের নিরাপত্তার জন্য উনাকে বাড়িতে রাখবেন না জানিয়ে দিয়েছেন।

তার পিএস কাঁচুমাচু হয়ে বলল,
– স্যার আমরাও রিস্কে আছি। আমাদের বিদায় দেন। কোয়ারেন্টাইনে যাব। নিজের বউ বাচ্চাদের তো আর বিপদে ফেলতে পারি না।

আস্তে আস্তে পিএস আর বডিগার্ড দুজনও বিদায় নিল। উনার মৃত্যু পর্যন্ত পরের ৬ দিন দুজন বিশ্বস্ত লোক শুধু উনার সাথে ছিল। ওরা শুধু দরজা খুলে তিন বেলা খাবার পৌঁছে দিত।

পরিশেষে মৃত্যুর পর দেখতে উনার বউ, ছেলে-মেয়ে, আত্মীয় কেউ আসেনি। ABCDE হতে ৪ জন এসে লাশ একটা এয়ার টাইট ব্যাগে ঢুকিয়ে জানাজা পড়ে নিতান্ত অবহেলায় দাফন করল।

মৃত্যুর সময় উনি সুইস ব্যাংক, সেকেন্ড হোম, আমেরিকা- অস্ট্রেলিয়ার বাড়ি ইত্যাদি ছাড়াও ২৩৩ কোটি টাকা, ৩৭ টা ফ্ল্যাট, ৫৪৩ শতক জমি, ২৬৫ ভরি স্বর্ণ ইত্যাদি রেখে গেছেন৷

এই ঘটনার পর টম তার বন্ধু কেটকে বললো, দোস্ত কি বুঝালা। কেট দীর্ঘ নি:শ্বাস ফেলে জবাব দিলো, হায়রে করোনা, তুই এতোই নির্মম। তোর ভয়ে কেউ পাশে থাকে না।

# বিঃদ্রঃ  অঢেল অর্থ,  সম্পদ ও ক্ষমতা  বানও  কঠিন পরিস্থিতিতে  অসহায় হয়েপড়েন  ,এটা বুঝাতেই এই  ছোট গল্পটা ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.


অনুসন্ধান

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:১৭ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:০১ অপরাহ্ণ
  • ৪:৩০ অপরাহ্ণ
  • ৬:২৬ অপরাহ্ণ
  • ৭:৪৩ অপরাহ্ণ
  • ৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন জরিপ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি এখন লিপসার্ভিসের দলে পরিণত হয়েছে।’ আপনিও কি তাই মনে করেন? Live

  • হ্যাঁ
    25% 3 / 12
  • না
    75% 9 / 12