সর্বশেষঃ
কোটা সংস্কার আন্দোলনে হত্যা ও অন্যান্য ঘটনা বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে : প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের ওপর সহিংসতা চান না মুশফিকুর ঢাবিতে গায়েবানা জানাজার আন্দোলনকারীদের কফিন মিছিলে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস সংঘবদ্ধ ভূমিদস্যুদের কবল থেকে খাল পুনরুদ্ধার হবে: মেয়র তাপস সিটি করপোরেশন  ও শহরের  সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ পবিত্র আশুরা উপলক্ষে ঢাকায় তাজিয়া মিছিল কোটা আন্দোলনে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান হবে : ডিবি প্রধান  আজ পবিত্র আশুরা আজ ঢাকায় কোটা আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি আন্দোলনকারীদের শিক্ষার্থীদে ওপর ছাত্রলীগের হামলার তীব্র নিন্দা সাদা দলের শিক্ষকদের
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:০৭ অপরাহ্ন

নীলফামারীতে কৃষক রফিকুল গোলার চাল বিলিয়ে দিচ্ছেন গরীবদের

দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড পশ্চিম হাজিপাড়ায় কৃষক রফিকুল কর্মহীণ দরিদ্র ও অসহায় লোকজনকে তার গোলার চাল বিলিয়ে দিচ্ছেন। প্রত্যেককে পরিবারের লোকসংখ্যা অনুসারে ৫ কেজি থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত চাল তুলে দিচ্ছেন তিনি।
গত কয়েকদিন যাবত এ সংক্রান্ত খবর পাওয়া যাচ্ছিল বিভিন্ন জন থেকে। তাই বিষয়টি যাচাই করতে বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় সরেজমিনে উপস্থিত হই ঘটনাস্থলে। যাওয়ার পথেই দেখা যায়, দলে দলে লোকজন চাল নিয়ে ফিরছেন ওই গ্রামের কৃষক মোঃ রফিকুল ইসলামের বাড়ি থেকে। বাড়িতে পৌছে দেখি উঠানে প্রায় অর্ধ শতাধিক হতদরিদ্র মানুষ।

ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে তারা এসেছেন কিছু চালের জন্য। ঘরের বারান্দায় রাখা বস্তা থেকে ৫ কেজি করে চাল মেপে দিচ্ছেন কৃষক রফিকুল। একে একে প্রত্যেককেই চাল দিলেন তিনি। তাকে সহযোগিতা করছেন তার স্ত্রী গৃহিনী মনি বেগম ও বড় ছেলে সৈয়দপুর শহরের জামে আরাবিয়া মাদরাসার নুরানী বিভাগের ছাত্র মুরাদ ইসলাম (১০)। আগতদের দেয়া শেষ না হতেই আরও অনেকে এসে উপস্থিত। কিন্তু তারপরও কৃষক পরিবারের কারই মুখে নেই বিন্দু মাত্র বিরক্তি বা বিষাদের ছাপ। অত্যন্ত আনন্দের সাথেই সবাইকেই চাল দিয়ে চলেছেন তারা।

এরই ফাকে কথা হয় ৪ নং ওয়ার্ডেরই হুকলিপাড়া ও খোর্দ্দপাড়া থেকে আগত কয়েকজনের সাথে কথা হয়। এর মধ্যে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী যুবক শাহিনের সাথে। সে জানায়, বিগত প্রায় ১ সপ্তাহ যাবত রফিকুল ইসলাম তার পাড়াসহ আশে পাশের কয়েকটি পাড়ার হতদরিদ্র মানুষকে তার সামান্য সামর্থ দিয়েই সহযোগিতা করে চলেছেন। যা এলাকার অনেক ধনী ব্যক্তিও করছেন না।

এমনকি চেয়ারম্যান মেম্বাররাও সরকারী ত্রাণ না আসার অজুহাতে এগিয়ে আসেনি। তারা ব্যক্তিগতভাবে কোন সহযোগিতাই করছেন না সাধারণ খেটে খাওয়া ক্ষুধার্ত মানুষগুলোকে। এমতাবস্থায় রফিকুল ইসলাম তার ভান্ডার খুলে দিয়েছেন এলাকাবাসীর জন্য। যার ফলে ভিক্ষুক থেকে শুরু করে রিক্সা-ভ্যান চালক, দিনমজুর, ক্ষুদ্র দোকানদার, ফেরিওয়ালাসহ নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত যারাই অভাবগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন তারা কিছুটা হলেও সহায়তা পাচ্ছেন। এতে অন্যান্য এলাকার মত আমাদের এলাকায় তেমন হা হা কার পরেনি।

হতদরিদ্র লক্ষী রানী বলেন, রফিকুল ভাইয়ের বলতে গেলে কিছুই নাই। সামান্য কৃষি কাজ করে সংসার চালায়। কিন্তু তা থেকেই তিনি যেভাবে আমাদের মত গরীবের জন্য এতবড় কাজ করছেন। এটা দেখে ধনী মানুষগুলোর শিক্ষা নেওয়া উচিত।

মোঃ সলিম বলেন, চেয়ারম্যান মেম্বাররাও যেখানে ত্রাণ দিতে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে রফিকুল ভাই যে এমন একটা সাহসী উদ্যোগ নিয়েছেন তা সত্যই প্রশংসার যোগ্য। কিন্তু এতে তার বিন্দুমাত্র অহংবোধ নেই। বরং তার কথা বিপদেই যদি মানুষের পাশে না দাঁড়াতে পারি তাহলে কি হবে বেঁচে থেকে।

অমিছা বেগম বলেন, পরায় এক মাস ধরি ভিক (ভিক্ষা) করির পারিছি না। ঘরত এক দানা খাবার নাই। মেম্বারের কাছত গেইলে কয়ছে সরকারী ত্রাণ যতনা আসিছে তাক শেষ। পাড়ার মাইনসের কাছে শুনি আনু রফিকুলের বাড়িত। এলা ৫ কেজি চাউল পাছো। আরও মেলা মানুষ যায় আসছে তায় পাইছে। আল্লাহ ভালো করুক।

চাল দেয়ার মাঝে এক মুহূর্তের জন্য কথা হয় কৃষক রফিকুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, আমি তেমন শিক্ষিত মানুষ নই। জীবনে অনেক কষ্ট করে বর্তমান পর্যায়ে এসেছি। এক সময় আমিও ক্ষুধার জ্বালায় অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করেছি। কিন্তু কারো কাছে হাত পাততে পারেনি। তাই জানি এমন পরিস্থিতিতে মানুষ কতটা অসহায় হয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, আজ আমি অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করে যে ফসল ফলাই তা দিয়ে কোন রকমে চলি। এভাবেই একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। ছোট দু’টি ছেলেকে নিয়ে আমার সংসার। ঘরের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রসহ গৃহস্থালী বিভিন্ন পন্য সামগ্রীই করেছি।

এখন আমি একজন স্বচ্ছল কৃষক। আমার ঘরে যে টুকু ধান বা চাল আছে তা থেকে আমার পরিবারের এক সপ্তাহের জন্য রেখে বাকি সবটুকু যতক্ষণ সম্ভব বিলিয়ে দিবো। কারণ এবার যে আবাদ করেছি ১ মাস পরেই তা থেকে ইনশা আল্লাহ পর্যাপ্ত ফসল পাবো।

তিনি আরও বলেন, প্রতি রাতে এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখি কারা প্রকৃতপক্ষে অভাবে আছে কিন্তু লোক লজ্জায় কারো কাছে চাইতেও পারছেন না। এসব মানুষকে গোপনেই চাল পৌছে দিচ্ছি। যাতে তারা সমাজে হেয় প্রতিপন্ন না হোন। এভাবেই আমার প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।

প্রয়োজন পড়লে স্ত্রীর স্বর্নালংকার যেটুকু আছে তা বিক্রি করে হলেও গরীব মানুষগুলোকে সহযোগিতা করে যাবো। কারণ সৃষ্টির সেবার মাঝেই স্রষ্টার সন্তুষ্টি বিদ্যমান। ইচ্ছে আছে আগামী ঈদে অসহায় প্রতিটি পরিবারকে একটা লুঙ্গি, শাড়ী, সেমাই, চিনি ও ৫শ’ টাকা করে দেয়ার। দোয়া করবেন যেন করোনা জয় করে আমার এই ইচ্ছে পূরণ করতে পারি। #


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.


অনুসন্ধান

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:০৪ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:০৮ অপরাহ্ণ
  • ৪:৪৩ অপরাহ্ণ
  • ৬:৪৯ অপরাহ্ণ
  • ৮:১১ অপরাহ্ণ
  • ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন জরিপ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি এখন লিপসার্ভিসের দলে পরিণত হয়েছে।’ আপনিও কি তাই মনে করেন? Live

  • হ্যাঁ
    25% 3 / 12
  • না
    75% 9 / 12