মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩১ অপরাহ্ন

করোনার ভয়ে রাজধানী ঢাকা ছেড়ে দলে দলে গ্রামে যাচ্ছে মানুষ

দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার আশায় এবার করোনার ভয়ে ঘনবসতি পূর্ণ  শহর রাজধানী ঢাকা ছেড়ে দলে দলে গ্রামে যাচ্ছে নানা ও শ্রোনর মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত দু’দিন ধরে রাজধানীর সব বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। লোকজন পরিবারপরিজনকে গ্রামে নিয়ে যাচ্ছে। বিপুল সংখ্যক মানুষ রাজধানী ছাড়ায় ক্রমেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে ব্যস্ত এ নগরী।

গত ২০ মার্চ রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়। সাধারণত ঈদের আগে টার্মিনালগুলোতে এমন ভিড় হয়। গতকাল সদরঘাটে গিয়ে দেখা যায়, আওলাদ-৭, সাত্তার খান-১, জামাল-৫, মানামী, এ্যাডভেঞ্চার-১, পারাবত-১২, সুরভী-৮, কামাল-১, ফারহান-৮, পারাবত-১৪, যুবরাজ-৭, ঈগল-৮, রেডসান-৫, সপ্তবর্ণা-১০, শাহরুখ-১, সুন্দরবন-১১ ও ১২ লঞ্চে যাত্রী আর যাত্রী। কেউ কারো সাথে কথা বলছে না।

সুন্দরবন-১২ লঞ্চটি যাবে ঝালকাঠি। এ লঞ্চের যাত্রী নলছিটির বাসিন্দা সোহাগ জানান, রাজধানীর একটি আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার তিনি। মালিক হোটেল বন্ধ ঘোষণা করেছেন। তাই গ্রামের বাড়ি চলে যাচ্ছেন তিনি। সপ্তবর্ণা-১০ এর যাত্রী বরগুনা জেলার বামনা উপজেলার বাসিন্দা মিলন ফকির জানান, পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জ থাকেন তিনি।

স্কুল কলেজ বন্ধ থাকা ও করোনা থেকে রেহাই পেতে গ্রামে যাচ্ছেন তারা। লঞ্চগুলোর যাত্রীরা বেশ সচেতন। তারা নিজের পরিবার বা পরিচিতজন ছাড়া কারো সাথে কথা বলছেন না। বরিশালগামী সুরভী-৮ লঞ্চে ডেকের সিট দখলকে কেন্দ্র করে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় একজনের ঠোঁট ফেটে গেছে।

এদিকে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় থাকায় তারা লঞ্চের কর্মচারী ও কুলিদের হাতে নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। কুলিরা অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে যাত্রীদের কাছ থেকে। এদিকে অধিক যাত্রীর কারণে কেবিনের ভাড়াও বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ মিলেছে।

সদরঘাটে যাত্রীদেরকে সচেতন দেখা গেলেও কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তামূলক কোনো ব্যবস্থা লক্ষ করা যায়নি। যে যার মতো টার্মিনালে ঢুকছে, ঘুরছে; পরিচ্ছন্নতার কোনো বালাই নেই। যেখানে সেখানে কফ, থুতু ফেলছে।

বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থপনা যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবির নয়া দিগন্তকে বলেন, ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ছুটি ব্যতীত এত লোক কখনো লঞ্চে গ্রামে যায়নি। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মানুষ গ্রামে ছুটছে। তা ছাড়া করোনা আতঙ্ক তো আছেই। ৪১ রুটে প্রায় অর্ধশত লঞ্চ ছেড়ে যাবে বলে তিনি জানান।

সদরঘাটের এক টিকিট কাউন্টার থেকে বলা হয়, টিকিট ধরতে চান না যাত্রীরা। শুধু টাকা দিতে চান। এ নিয়ে বহু যাত্রীর সাথে কথা কাটাকাটি করতে হয়েছে। এদিকে যাত্রীদের চাপের সুযোগ নিয়ে সদরঘাট টার্মিনালে টিকিট জালিয়াতি করছে একটি সিন্ডিকেট। যাত্রীদের ঘাট টিকিট না ছিঁড়ে হাতের মুঠোয় রাখছে চেকাররা। এসব টিকিট আবার কাউন্টারে জমা দিচ্ছে। গত মাসে এসব ঘটনায় একজনকে পুলিশ আটক করে।

ঢাকা নৌবন্দর লঞ্চ মালিক সমিতির সদস্য গাজি সালাউদ্দিন বাবু নয়া দিগন্তকে বলেন, ঈদের মতো যাত্রী চাপ বাড়ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এমনটা ঘটছে। তিনি বলেন, যারা কখনো কেবিনে যায়নি তারাও কেবিনে সিট নিতে চাচ্ছে। কারণ করোনা ছোঁয়াচে রোগ বলে আতঙ্কে যাত্রীরা। তাই নিরাপদে কেবিনে যেতে চাচ্ছে।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়েও দেখা যায় যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। স্টেশনের এক নিরাপত্তারক্ষী জানান, এমন ভিড় সাধারণত ঈদের সময়ই দেখা যায়। কমলাপুর স্টেশন কর্তৃপক্ষকে বেশ সচেতন দেখা গেছে। তারা যাত্রীদের হাত পরিষ্কারের জন্য হ্যান্ড সেনিটাইজার সরবরাহ করছে। যাত্রীরা তা দিয়ে হাত পরিষ্কার করে ট্রেনের বগিতে উঠছে।

কুলাউড়াগামী যাত্রী সাহাব উদ্দিন জানান, ছেলেমেয়ের স্কুল কলেজ বন্ধ। তার অফিসও ছুটি আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত। আর করোনা আতঙ্ক তো আছেই। সব মিলিয়েই গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ঈদের সময় যাওয়া আর এখন যাওয়ার মধ্যে তফাৎ আছে। তখন মানুষ বাড়িতে যায় ঈদের খুশিতে। আর এখন যাচ্ছে ভয়ে, আতঙ্কে।

রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে গত দু’দিন ধরে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। তবে টার্মিনালগুলোতে সচেতনতামূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। মানুষ যে যার মতো ঘুরছে, কফ-থুতু ইচ্ছে মতো ফেলছে। হাত পরিষ্কারের কোনো ব্যবস্থা নেই।

গত ২০ মার্চ সকালে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় কথা হয় সুমন নামে এক যাত্রীর সাথে। খুলনায় যাচ্ছিলেন তিনি, তিনি ডেমরা এলাকায় একটি গার্মেন্টে চাকরি করেন। আপতত তার গার্মেন্ট বন্ধ। তাই গ্রামে যাচ্ছেন। # কাশেম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.


অনুসন্ধান

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:১৭ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:০১ অপরাহ্ণ
  • ৪:৩০ অপরাহ্ণ
  • ৬:২৬ অপরাহ্ণ
  • ৭:৪৩ অপরাহ্ণ
  • ৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন জরিপ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি এখন লিপসার্ভিসের দলে পরিণত হয়েছে।’ আপনিও কি তাই মনে করেন? Live

  • হ্যাঁ
    25% 3 / 12
  • না
    75% 9 / 12