শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০০ অপরাহ্ন

একাধিক চক্র মোবাইল ব্যাংকিংয়ে হুন্ডির মাধ্যমে অর্থপাচারে জড়িত: সিআইডি

দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:
রাজধানীসহ দেশেরে বিভিন্ন এলাকায় পরিকল্পিত ভাবে একাধিক চক্র মোবাইল ব্যাংকিং বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) কাজে প্রায় দুই হাজার সিম ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা হুন্ডি করছে। এই চক্রের সদস্যরা নানা কৌশলে অবৈধভাবে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচারে সহযোগিতা করছে। একই সঙ্গে বিদেশে অবস্থানরত ওয়েজ আর্নারদের কষ্টার্জিত অর্থ বিদেশ থেকে বাংলাদেশে না এনে স্থানীয় মুদ্রায় মূল্য পরিশোধ করার মাধ্যমে অর্থপাচার করে আসছে।

এর ফলে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব আয় থেকে বি ত হচ্ছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফাইনান্সিয়াল ক্রাইম এবং সাইবার ক্রাইম ইউনিটের দীর্ঘ অনুসন্ধান এবং তদন্তে এসব চা ল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

এমএফএস ব্যবহার করে শুধু একটি চক্রই গত চার মাসে ৩ কোটি টাকা হুন্ডি করেছে। এমএফএসের দুই হাজার এজেন্ট সিমের মাধ্যমে প্রতি মাসে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পেয়েছে সিআইডি’র ফাইনান্সিয়াল ক্রাইম এবং সাইবার ক্রাইম ইউনিটের কর্মকর্তারা।

মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া। সিআইডি’র প্রধান সাংবাদিকদের বলেন, গত সোমবার (২১ নভেম্বর)দিবাগত রাতে কুমিল্লা ও ঢাকায় অভিযান চালিয়ে হুন্ডিচক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মীর মো. কামরুল হাসান শিশির (২৮), খোরশেদ আলম (৩৪), মো. ইব্রাহিম খলিল (৩৪), কাজী শাহ নেওয়াজ (৪৬), মো. আজিজুল হক তালুকদার (৪২) ও মো. নিজাম উদ্দিন (৩৫)।গ্রেফতারদের কাছ থেকে ১১টি মোবাইল, ১৮টি সিমকার্ড, একটি ল্যাপটপ ও একটি ট্যাব উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সিআইডি’র কর্মকর্তারা হুন্ডিকাজে ব্যবহ্নত সন্দেহভাজন দুটি সিম নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আরও ১১টি এজেন্ট সিমের সন্ধান পায়। যাদের মাধ্যমে এরকম সন্দেহজনক তথা ডিজিটাল হুন্ডির তথ্য রয়েছে। এরপর আরও তথ্য পেয়েছেন দুই হাজার এজেন্ট সিমের বেশকিছু এজেন্ট সদস্য হুন্ডির মতো অবৈধ কাজে সরাসরি জড়িত।

সিআইডি প্রধান বলেন, সংঘবদ্ধ হুন্ডিচক্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের উপার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে তা বাংলাদেশে না পাঠিয়ে ওই বৈদেশিক মুদ্রার সমপরিমাণ মূল্যে স্থানীয় মুদ্রায় পরিশোধ করে। এ কাজে অপরাধীরা তিনটি গ্রæপে বিভক্ত হয়ে কাজটি করে থাকে।
তিনি বলেন, প্রথম গ্রæপ বিদেশে অবস্থান করে প্রবাসীদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে, দেশ থেকে যারা টাকা পাচার করতে চায় তাদের দেয়। দ্বিতীয় গ্রæপ পাচারকারী ও তার সহযোগীরা দেশীয় মুদ্রায় ওই অর্থ এমএফএসের এজেন্টকে প্রদান করে। তৃতীয় গ্রæপ তথা এমএফএসের এজেন্ট কর্তৃক বিদেশে অবস্থানকারীর কাছ থেকে প্রাপ্ত এমএফএসের নম্বরে দেশিয় মুদ্রায় মূল্য পরিশোধ করে।

চক্র দুটি প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে এমএফএস ব্যবহার করে ক্যাশইনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হুন্ডি করছে। গত এপ্রিল মাস থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রতিটি চক্র প্রায় ৩ কোটি টাকা হুন্ডি করেছে।

সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া আরও বলেন, মোহাম্মদ খোরশেদ আলমের মালিকানাধীন কুমিল্লার লাকসামে অবস্থিত বিকাশ ডিস্ট্রিবিউশন হাউজ জে এ এন্টারপ্রাইজের দুই হাজার এজেন্ট সিমের মাধ্যমে প্রতি মাসে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়। সিআইডি সন্দেহজনক দুটি এজেন্ট সিম নিয়ে কাজ করে, যার মাধ্যমে গত ৬ মাসে ৩ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পায়।

ডিজিটাল হুন্ডির কাজকে সহজ নির্ভুল এবং দ্রæততম উপায়ে সম্পন্ন করার জন্য তারা বেশকিছু সফটওয়্যার ব্যবহার করছে। গ্রেফতারদের জিজিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ফ্রিডমফ্লেক্সি ২৪ডটকম এমন একটি সফটওয়্যার যার মাধ্যমে সৌদি প্রবাসী হুন্ডি কারবারিরা বাংলাদেশে যে নম্বরগুলোতে টাকা পাঠানো হবে সেই নম্বরগুলো ইনপুট দিতেন এবং বাংলাদেশে থাকা বিভিন্ন এমএফএস এজেন্টদের সহায়তায় বাংলাদেশি হুন্ডির এজেন্টদের মাধ্যমে টাকাগুলো সরাসরি ডিস্ট্রিবিউশন হয়ে প্রাপকের কাছে যেতো।

সিআইডি প্রধান বলেন, এমএফএসের এজেন্টদের সহযোগিতায় চক্রের সদস্যরা বিদেশে স্থানীয় সম্পদ অর্জনসহ অনলাইন জুয়া, ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের ভার্চুয়াল মুদ্রা কেনা বেচা, মাদক কেনা-বেচা, স্বর্ণচোরাচালান, ইয়াবা কারবারসহ প্রচুর অবৈধ ব্যবসাও পরিচালনা করছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডি প্রধান বলেন, সব মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের আওতায় অনেক ডিস্ট্রিবিউশন হাউজ আছে। এই ডিস্ট্রিবিউশন হাউজের মালিক ও কর্মচারীদের উচিৎ অধীনস্ত যেসব এজেন্ট আছে তাদের কর্মকাÐ মনিটরিং করা। যদি মনিটরিং না করে তাহলে তারা আইনের আওতায় আসবে।

পাশাপাশি বিকাশ, রকেট ও নগদ কর্তৃপক্ষ- যারা ডিস্ট্রিবিউশন হাউজ অনুমোদন দিয়েছে তাদের ডিস্ট্রিবিউশন হাউজ অবশ্যই মনিটরিং করবে। তারা যদি মনিটরিং না করে তাহলে আমরা বাধ্য হবো তাদের আইনের আওতায় আনতে। প্রবাসীরা যেন তাদের ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠায়। সেক্ষেত্রে দেশের উন্নতি হবে এবং তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে থাকবে না। #


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.


অনুসন্ধান

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:১৭ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:০১ অপরাহ্ণ
  • ৪:৩০ অপরাহ্ণ
  • ৬:২৬ অপরাহ্ণ
  • ৭:৪৩ অপরাহ্ণ
  • ৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন জরিপ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি এখন লিপসার্ভিসের দলে পরিণত হয়েছে।’ আপনিও কি তাই মনে করেন? Live

  • হ্যাঁ
    25% 3 / 12
  • না
    75% 9 / 12