দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
গত দুই দিনে বাংলাদেশের ১০ জেলায় বিভিন্ন এলাকায় জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে আরো ১১ জন মারা গেছেন। তাঁদের মধ্যে একজন নারী। মৃত ব্যক্তিরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কি না, তা জানতে তাঁদের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
জানা যায় , বাংলাদেশে গত ২৮ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিনে জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ৬৩ জন মারা গেলেন।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নে জ্বর, গলাব্যথা ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গতকাল এক তরুণের (১৮) মৃত্যু হয়েছে। ওই তরুণ ১ এপ্রিল ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন।
নেত্রকোনার কেন্দুয়া পৌরসভায় গতকাল জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত এক তরুণ (২১) মারা গেছেন। কেন্দুয়ার ইউএনও আল ইমরান রহুল ইসলাম ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, রিকশাচালক ওই যুবক কিছুদিন ধরে হালকা জ্বর ও সর্দিতে ভুগছিলেন।
চট্টগ্রাম নগরের জেনারেল হাসপাতালে আইসোলেশনে থাকা এক মুক্তিযোদ্ধা (৭১) গত সোমবার সকালে মারা গেছেন। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুর উদ্দিন জানান, ওই ব্যক্তির আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট ছিল।
গাইবান্ধা সদর উপজেলায় জ্বর ও শ্বাসকষ্টে গত রোববার বিকেলে এক যুবকের (৩২) মৃত্যু হয়েছে। গাইবান্ধা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, ওই ব্যক্তি ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ২৫ মার্চ তিনি সর্দি–জ্বর নিয়ে বাড়ি ফেরেন। তাঁর আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট ছিল।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হওয়া এক মৎস্যজীবী (৭০) গতকাল সকালে মারা গেছেন। হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান জানান, ২ এপ্রিল শ্বাসকষ্ট নিয়ে ওই ব্যক্তি ভর্তি হন।
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে রোববার এক ব্যক্তি (৪৫) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। সিভিল সার্জন মুজিবুর রহমান বলেন, হার্ট অ্যাটাকে তিনি মারা যেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এলাকাবাসী গণমাধ্যমকে জানান, ওই ব্যক্তি সপ্তাহখানেক আগে ঢাকা থেকে গ্রামে গিয়ে জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হন।
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় গত সোমবার শ্বাসকষ্টে এক নারীর (৩৫) মৃত্যু হয়েছে। কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুস সালাম জানান, ওই নারীর জ্বর বা সর্দি-কাশি ছিল না। আগে থেকে শ্বাসকষ্ট ছিল। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি বলে মনে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসোলেশনে থাকা এক তরুণ (২৪) গত রোববার রাতে মারা গেছেন। হাসপাতাল সূত্র জানায়, ওই তরুণ চায়ের দোকান করতেন। শ্বাসকষ্ট হলে রোববার সন্ধ্যায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
টাঙ্গাইলে গত সোমবার শ্বাসকষ্টে একজন আইনজীবী (৫৫) মারা গেছেন। গোপালপুর উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলীম আল রাজী জানান, ওই ব্যক্তি হৃদ্রোগ ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। গতকাল সকালে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। এ সময় তাঁকে মৃত অবস্থায় পান চিকিৎকেরা।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গতকাল শ্বাসকষ্টে এক ব্যক্তির (৫০) মৃত্যু হয়েছে। তাঁর বাড়ি বরিশাল সদর উপজেলায়। তিনি কৃষি ব্যাংকের মাঠ কর্মকর্তা ছিলেন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ওই ব্যক্তি শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত সোমবার বিকেলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান। হাসপাতালের পরিচালক মো. বাকির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এর আগে তাঁর জ্বর ও কাশি ছিল।
রাজবাড়ীর পাংশায় গতকাল জ্বর, কাশি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত এক ব্যক্তি (৩২) মারা গেছেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই ব্যক্তি ঢাকায় ট্রাক চালাতেন। কয়েক দিন আগে তিনি বাড়ি আসেন। তিনি জ্বর, কাশি ও ডায়রিয়ায় ভুগছিলেন। গতকাল কুষ্টিয়া হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন মো. নুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, মৃত ব্যক্তির করোনার উপসর্গ ছিল। # সূত্র- বিভিন্ন গণমাধ্যম