দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
সহকারী কমিশনার (ভূমি)/ এসি ল্যান্ড, উপ জেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ডিসি, এসপি, সবাই তো কোনো না কোনো বৃদ্ধ মা বাবার আদরের সন্তান। তাদেরকে শিক্ষিত করতে গিয়ে মা-বাবার পাশাপাশি সরকার জনগণের ঘাম ঝড়ানো ট্যাক্সের টাকা খরচ করেছে। আজ তারা রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন।
কিন্তু তাদের একটা অংশ জনগণের সেবক (চাকর) এটা একেবারেই ভুলে গেছেন। যাফলে সুযোগ ফেরেই জনগণের সাথে এই ধরনের অমানবিক আচরণ করেন। আবার অনেক ভাল মানুষও আছেন। যারা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে অসহায় মানুষের সেবায় এগিয়ে আসেন। সাধুবাদ রই তাদের জন্য।
এদিকে গত ২৭ মার্চ সামাজিক গন মাধ্যম ফেসবুকে কিছুর ছবি প্রকাশিত হয়েছে। ছবিগুলো ছিলো; ‘ করোনার বিস্তার প্রতিরোধে সচেতনতামূলক অভিযানকালে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের চিনেটোলা বাজারে ৪ ব্যক্তিকে কান ধরে ওঠবস করান সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসান । ওই সময় পাশে ছিলেন পুলিশসহ আরো কয়জন সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
ওই ব্যক্তিদের মুখে মাস্ক না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেন তিনি। ঘটনার ছবিও তোলেন তিনি। পরে সেই ছবি ভাইরাল হয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিকদের এমন অবমাননাকর শাস্তি দেওয়ায় সর্বত্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি)/এসি ল্যান্ড সাইয়েমা হাসানকে শনিবার প্রত্যাহার ও খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ২৮ মার্চ ওই বয়োবৃদ্ধদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের হাত ধরে ক্ষমা চেয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আহসান উল্লাহ শরিফী। তাদেরকে চাল, ডাল, আলু, তেল, লবণ ও ক্ষারযুক্ত সাবান দিচ্ছেন।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মুজিববর্ষে তাদের প্রত্যেককে ঘর তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। শনিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী।
ইউএনও বলেন, ‘তারা সবাই বয়োজ্যেষ্ঠ। আমি যখন হাত ধরে ক্ষমা প্রার্থনা করি, তাদের মুখে হাসি দেখেছি। তারা সবাই বাবার বয়সী, উনারা আমাদের ক্ষমা করেছেন। এই সময় উনাদের হাতে কিছু খাদ্যদ্রব্য ও সাবান তুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদেরকে ঘর করে দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হবে। ’
মণিরামপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শনিবার বেলা ১২টার দিকে ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী চিনেটোলা বাজারে ঘটে যাওয়া সেই বয়োজ্যেষ্ঠদের বাসায় যান। আমি ও শ্যামকুড় ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনিসহ স্থানীয় গণ্যমান্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলাম।
ইউএনও তাদের (বয়োবৃদ্ধদের) প্রত্যেকের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন। তাছাড়া তাদের মাঝে খাদ্যদ্রব্য বিতরণ ও প্রত্যেককে ঘর তৈরি করে দেওয়ার ঘোষণাও দেন।’
এই উদ্যোগটা অনলাইন নিউজ পোটাল ‘দূরবীণ নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের’ পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হচ্ছে। একই সাথে বলতে চাই, সরকারি কর্মকর্তা মানে জনগণের সেবক এটাও মনে রাখতে হবে। # কাশেম