দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সারা দেশে ব্যাপক প্রচারাভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ১৯ মার্চ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
২০ মার্চ উত্তরবঙ্গ থেকে দেশের বিশিষ্ট চিকিৎসকদের নামে ‘করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয়’ শিরোনামের ইশতেহার প্রচারের মাধ্যমে এই কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল এবং রংপুর বিভাগের চিকিৎসা সহায়ক কমিটির আহবায়ক ডাঃ মফিজুল ইসলাম মান্টু।
২০ মার্চ বিকেল ৩টায় ঠাকরগাঁও-এর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় থেকে এই প্রচারাভিযান আরম্ভ হবে। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি প্রথম পর্যায়ে সারা দেশে ১০ লাখ ইশতেহার বিলি করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, অধ্যাপক ডাঃ কামরুজ্জামান, অধ্যাপক ডাঃ আমজাদ হোসেন, অধ্যাপক ডাঃ প্রাণ গোপাল দত্ত, অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়–য়া, অধ্যাপক ডাঃ আনোয়ারা সৈয়দ হক, অধ্যাপক ডাঃ বরেণ চক্রবর্তী, অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান, ডাঃ শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর, ডাঃ সুচরিতা দেওয়ান, অধ্যাপক ডাঃ সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী, অধ্যাপক ডাঃ শাহিন আখতার, অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল), অধ্যাপক ডাঃ মোঃ মাহবুবুর রহমান (বাবু), ডাঃ নুজহাত চৌধুরী প্রমূখ শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকদের স্বাক্ষরিত প্রকাশিত ইশতেহারে বলা হয়েছে।
‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি কোভিড-১৯কে প্যানডেমিক ঘোষণা করেছে। তবে এটি সাম্প্রতিককালের প্রথম প্যানডেমিক নয়। ইতিপূর্বে আমরা সোয়াইন ফ্লু, সার্স এবং মার্স-এর মত প্যানডেমিক সফলভাবে মোকাবিলা করেছি। মনে রাখতে হবে প্যানডেমিক মানেই এই নয় যে, কোভিড-১৯ নামের এই ভাইরাসটি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে কিংবা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া মানেই মৃত্যু অবধারিত। বরং এটি ভাইরাসটির ভৌগোলিক বিস্তারের স্বীকৃতি মাত্র।
পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের মত বাংলাদেশেও এখন কোভিড-১৯ ছড়াচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হচ্ছেন। আশংকা করা হচ্ছে সামনের দিনগুলোতে আরো অনেকে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এখন প্রয়োজন সর্বোচ্চ সতর্কতার। আতঙ্কিত না হয়ে কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে আমরা নিজেরা যেমন কোভিড-১৯ মুক্ত থাকতে পারবো, তেমনি নিরাপদ রাখতে পারবো আমাদের আশপাশের মানুষগুলোকে আর আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে।
কোভিড-১৯ প্রতিরোধে জানুন, সচেতন হোন, নিজে সুস্থ থাকুন এবং সবাইকে সুস্থ রাখুন :
১. নিজের এবং নিজের চারপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখুন। যেখানে সেখানে থুথু ফেলা থেকে বিরত থাকুন।
২. সাধারণ জ্বর, সর্দি-কাশির জন্য অযথা দুশ্চিন্তিত হয়ে হাসপাতালে ভীড় বাড়াবেন না।
৩. শুধুমাত্র দীর্ঘ মেয়াদী অথবা বাড়াবাড়ি রকমের লক্ষণ দেখা দিলেই সরকার নির্ধারিত হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করুন।
৪. শুধুমাত্র সর্দি-কাশি থাকলে ফেস মাস্ক ব্যবহার করুন। ফেস মাস্ক ব্যবহার করা কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী এবং চিকিৎসা সেবা প্রদানকারীদের জন্য জরুরীÑ সবার জন্য নয়।
৫. অপ্রয়োজনে গণপরিবহণ যেমন বাস, ট্রেন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন।
৬. সামাজিক মেলামেশার সময় হাত মেলানো ও কোলা-কুলি করা পরিহার করুন।
৭. হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলুন। হাঁচি-কাশির সময় কনুই এবং কাঁধের মাঝামাঝি অংশ দিয়ে মুখ ঢেকে নিন। প্রয়োজনে টিস্যু ব্যবহার করুন এবং ব্যবহৃত টিস্যু নির্দিষ্ট স্থানে ফেলুন।
৮. মাছ, মাংস বা ডিম ভালোভাবে রান্না করে খান।
৯. অন্যের ব্যবহার করা তোয়ালে, কাপড় ইত্যাদি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
১০. কমপক্ষে বিশ সেকেন্ড সাবান দিয়ে বার বার, ভালোভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন। হ্যান্ড সেনিটাইজার ব্যবহার করা অত্যাবশ্যক নয়। হাত না ধুয়ে মুখ, নাক, চোখ স্পর্শ করবেন না।
১১. আপনি যদি চীন, ইতালি, স্পেন, ইরান বা উপদ্রæত অন্য কোন দেশ থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরে থাকেন তাহলে ১৪ দিন স্বেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকুন। এই ১৪টি দিন বাসায় একটি নির্দিষ্ট ঘরে থাকুন, কোন কারণেই ঘরের বাইরে বের হবেন না। এ সময় আপনার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব কেউ আপনার সংস্পর্শে আসতে পারবেন না।
১২. দশ জনের বেশি মানুষ এক সাথে জমায়েত হবেন না। কখনও জমায়েত হলে পরস্পরের মধ্যে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।
১৩. বয়স্ক ব্যক্তি এবং যাদের অন্য কোন অসুস্থতা যেমন হাঁপানি, ডায়াবেটিস বা হার্টের অসুখ আছে তাদের ঝুঁকি বেশি। # প্রেস বিজ্ঞপ্তি ।