দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মোমিনুর রহমান মামুন বলেছেন, এডিস ও কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে গত বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই। আমারা জানি কোথায় এডিস মশা বংশবিস্তার করে, কোথায় এদের ঘনত্ব বেশি, কোন বয়সের মানুষ বেশি আক্রান্ত হয় ইত্যাদি।
তিনি বলেন, এবার ২০২০ সালের শুরু থেকেই এডিস ও কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে পুরোদমে মাঠে নেমেছে ডিএনসিসি।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ডিএনসিসির ৭ নম্বর অঞ্চলের অধীন দক্ষিণখানের কে সি হাসপাতাল কনভেনশন সেন্টারে এডিস ও কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে এক সচেতনতামূলক অ্যাডভোকেসি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ডিএনসিসির অঞ্চল ৭ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল কুদ্দুস এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় অন্যান্যের মধ্যে অঞ্চল ১ আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা জুলকার নায়ন ও অঞ্চল ৮ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদ আলী, ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোতালেব মিয়া, ৫০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ডি এম শামীম, সংরক্ষিত ওয়ার্ড নম্বর ১৬ এর কাউন্সিলর ইলোরা পারভীন, দক্ষিণখান ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, মসজিদের ইমামগণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ, স্কাউট সদস্যবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, গত বছর বিভিন্ন আঞ্চলিক ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে একাধিক অবহিতকরণ সভা, সচেতনতামূলক পদযাত্রা ও পথসভা, বাউল সংগীত, জাতীয় পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি, সচেতনতামূলক বার্তা, টেলিভিশনে টিভিসি প্রচার, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করেছি।
তিনি আরো বলেন, “গত বছর ইমামগণ প্রতি জুমার নামাজে তাঁদের বয়ানে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন, যা অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিলো। এবারও ইমামগণ আরো সক্রিয়ভাবে থাকবেন”।
প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরো বলেন, মশক নিধন কার্যক্রম আরো বেগবান করতে এরই মধ্যে ২০০টি ফগার মেশিন, ২৩৮টি পালস ফগমেশিন, ১৫০টি হার্টসন হস্তচালিত মেশিন, ৩৪০টি প্লাস্টিক হস্তচালিত মেশিন, ২টি ভেহিকল মাউন্টিং ফগার মেশিন, ১০টি মটরসাইকেল ফগার ও হস্তচালিত মেশিন, ২০টি মিস্ট ব্লোয়ার/পাওয়ার স্প্রে মেশিন ক্রয়পূর্বক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
ভবিষ্যতে আরো কয়েকটি ভেহিকল মাউন্টিং ফগার মেশিন ক্রয়ের পরিকল্পনা আছে। আমরা বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় ১ হাজার বিঘা জলাশয়/ডোবা/পুকুর এর জলজ আগাছা ও কচুরিপানা পরিষ্কার করেছি, যা এখনও চলমান।
ডিএনসিসির উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. কর্ণেল মোঃ গোলাম মোস্তফা সারওয়ার এই সভায় এডিস ও কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ২০১৯ সালে ডিএনসিসির সামগ্রিক কার্যক্রম এবং ২০২০ সালে চলমান ও আসন্ন এডিস মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন,এ রোগ নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতার কোন বিকল্প নাই।
সভায় সিডিসির ফিল্ড মনিটরিং অফিসার ডা. আবুল কালাম এবং এন্টামোলোজিকেল সার্ভিলেন্স এক্সপার্ট জান্নাতুল ফেরদৌস এডিস মশার উৎপত্তিস্থল, বংশবিস্তার, রোগ-জীবাণু বহন, মানুষকে আক্রান্ত করাসহ বিশ্বে ডেঙ্গু রোগের সামগ্রিক চিত্র ও তথ্য-উপাত্ত নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ।
এতে দেখানো হয়, “১২৬টি দেশে ইতিমধ্যে ডেঙ্গু জ্বর ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে ২৫০ কোটির অধিক মানুষ, অর্থ্যাৎ পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশের মধ্যে ১০টি দেশেই ডেঙ্গুর প্রকোপ রয়েছে, এসব দেশে প্রায় ৫২ শতাংশ মানুষ ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে”। সিডিসির এ উপস্থাপনায় আরো বলা হয়, “গত আগস্ট মাসে দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ।
সারা দেশে এ এক মাসেই প্রায় ৫৩ হাজার রোগী ভর্তির রেকর্ড করা হয়, যার অধিকাংশই ছিলো রাজধানীতে। জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর এ তিন মাসে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব সর্বাধিক ছিলো এবং ধারণা করা হচ্ছে, এবছরও একই সময়ে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে। # কাশেম