দূরবীণ নিউজ ডেস্ক:
ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের দাবিতে বাগদাদে প্রায় ২৫ লাখ ইরাকি জনগণ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। বাগদাদে ইরাক ও ইরানের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন সেনা-কর্মকর্তাকে হত্যা করার মার্কিন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও সন্ত্রাস-বিরোধী ইরাকি বাহিনীর ওপর মার্কিন হামলার প্রেক্ষাপটে এই গণ-বিক্ষোভ হল।
ইরাকি সেন্টার ফর স্টাডিজ নামক প্রতিষ্ঠানের প্রধান সাইয়্যেদ সাদিক আল হাশেমি বলেছেন, শুক্রবারের এই গণ-মিছিলে ২৫ লাখেরও বেশি ইরাকি অংশ নিয়েছেন। নারী ও শিশুসহ সর্বস্তরের ইরাকিরা বাগদাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জারদিয়া অঞ্চলে সমবেত হন।
বিক্ষোভকারীরা বেরিয়ে যাও বেরিয়ে যাও দখলদার আমেরিকানরা, আমেরিকা ও ইসরাইল নিপাত যাক, মার্কিনিদের প্রতি না, শয়তানের প্রতি না, ইসরাইলের প্রতি না ও ইরাকি সার্বভৌমত্বের প্রতি হ্যাঁ -এসব শ্লোগান দেন। তারা মার্কিন ও ইসরাইলি পতাকা পদদলিত করেন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।
ইরাকের পবিত্র শহর কারবালাসহ দেশটির প্রত্যেক প্রদেশ ও শহর থেকে ইরাকিরা বাগদাদের এই বিক্ষোভে যোগ দেন। এ উপলক্ষে বাগদাদের আশপাশে ব্যাপক নিরাপত্তা-ব্যবস্থা নেয়া হয়। ইরাকের প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা মোক্তাদা সাদর মার্কিন সেনাদের উপস্থিতির বিরুদ্ধে গণ-বিক্ষোভে যোগ দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
ইরাকের নানা গোত্রের প্রধান, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এবং বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলো মার্কিন বিরোধী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে যোগ দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
ইরাকের আধা-সামরিক বাহিনী হাশদ্ আশ শাবি বা পপুলার মোবিলাইজেশন ফ্রন্টের একজন নেতা আজকের এই মহাবিক্ষোভকে ১৯২০ সালের ব্রিটিশ-বিরোধী বিপ্লবের মত দ্বিতীয় বিপ্লব বলে উল্লেখ করেছেন। অনেকেই আজকের এই দিনকে স্বাধীনতার শুক্রবার বা জাতীয় সার্বভৌমত্বের দিবস বলে অভিহিত করেছেন।
এই মার্কিন-বিরোধী গণ-বিক্ষোভের পাশাপাশি প্রখ্যাত ইরাকি নেতা মোক্তাদা সাদর কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, মার্কিন সেনাদের ইরাক থেকে সরিয়ে নেয়া না হলে তাদের সঙ্গে দখলদার ও শত্রুর মত আচরণ করা হবে।
তিনি মার্কিন সরকারের সঙ্গে সব সামরিক ও নিরাপত্তা চুক্তি বাতিল করতে এবং ইরাকে সব মার্কিন ঘাঁটি বন্ধ করে দিতে ইরাক সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বাগদাদে মার্কিন সন্ত্রাসী হামলায় ইরানি জেনারেল সোলাইমানি ও ইরাকি কমান্ডার আবু মাহদি আল মুহানদিস নিহত হওয়ার দু’দিন পর গত ৫ জানুয়ারি ইরাকের সংসদ বিপুল ভোটে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহারের প্রস্তাব পাস করে।
কিন্তু মার্কিন সরকার ওই বিল পাস হওয়া সত্ত্বেও ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে না বলে জানিয়ে আসছে। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেয়া হলে মার্কিন ফেডারেল ব্যাংকে ইরাকের ৩৫ বিলিয়ন ডলার অর্থ আটক করা হবে এবং ইরাকের ওপর নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন। সূত্র : পার্সটুডে। #