দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
বিপিএলে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে ঢাকা প্লাটুন। ঢাকার মেহেদী হাসান ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন। আবার ব্যাটিংয়েও মেহেদী হাসান মাত্র ২৯ বল মোকাবেলা করে ২ চার এবং ৭ ছক্কা মেরে ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) মেহেদী হাসানের এমন অলরাউন্ড পারফরম্যান্সেই কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে ঢাকা প্লাটুন।
খেলার ধারা ভাষ্য মতে, ১৬১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই আউট হয়ে যান এনামুল হক বিজয়। এরপরই তিন নম্বরে পাঠানো হয় মেহেদীকে। এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার সাধারণত ওপরের দিকে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পান না। বেশিরভাগ সময়ই নামতে হয় লোয়ার অর্ডারে।
আজ সুযোগ পেলেন ওপরে ব্যাটিংয়ের। আর সুযোগটা কী দারুণভাবেই না কাজে লাগালেন। মুখোমুখি পঞ্চম বলে অফ স্পিনার রবিউল ইসলামকে ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু তার তাণ্ডব। ওই ওভারে রবিউলকে মারেন একটি চারও।
ওই ওভারটা যদি হয় ‘ট্রেইলার’, ‘ফুল সিনেমা’ অপেক্ষা করছিল রবিউলের পরের ওভারে। ইনিংসের সেটি পঞ্চম ওভার। প্রথম বলে অবশ্য বোলারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছিলেন মেহেদী। তবে কঠিন ক্যাচটা নিতে পারেননি রবিউল। সেটার চড়া মূল্যই দিতে হয়েছে তাকে।
দ্বিতীয় বলে মেহেদী মারেন চার। এরপর টানা চার বলে চার ছক্কা! এই ওভার থেকেই আসে ২৮ রান। একটু পর ৪৪ থেকে সুমন খানকে ছক্কা হাঁকিয়ে মেহেদী ফিফটি পূর্ণ করেন মাত্র ২২ বলে।
ফিফটির পর ছক্কা হাঁকান আরও একটি। সেই ওভারেই আল-আমিন হোসেনের বলে উইকেটকিপারকে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় ডানহাতি ব্যাটসম্যানের টর্নেডো ইনিংস।
কুমিল্লার হয়ে নতুন বলে রবিউলের সঙ্গে অন্য প্রান্ত থেকে বোলিং শুরু করেছিল আফগান অফ স্পিনার মুজিব উর রহমানকে দিয়ে। মেহেদী বলছেন, মূলত মুজিবকে সামলাতেই তাকে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল ঢাকা। পাশাপাশি তার উইকেটটা নাকি ‘মূল্যহীন’।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মেহেদী বলেন, ‘ওদের মুজিব ছিল। মুজিবকে খেলা একটু মুশকিল। আমি ভ্যালুলেস (মূল্যহীন) উইকেট, মুজিবকে সামলানোর জন্য আমাকে পাঠিয়েছে। আমি অফ স্পিনার পেয়ে গেছি, সুযোগ নিয়েছি এবং সফল হয়েছি।’
কুমিল্লার বিপক্ষে ঢাকা জিতল মুখোমুখি দুই ম্যাচই। প্রথম দেখাতেও মেহেদীকে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল ঢাকা। সেদিন তেমন কিছু করতে না পারলেও আজ ঠিকই ঝড় তুললেন মেহেদী।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে মেহেদীর সেঞ্চুরি আছে পাঁচটি। পাঁচ নম্বরটি এসেছে তার সবশেষ প্রথম শ্রেণির ম্যাচে। গত মাসে জাতীয় ক্রিকেট লিগে খুলনার হয়ে রংপুরের বিপক্ষে আট নম্বরে নেমে ১৫০ বলে করেছিলেন ১১৯ বলে।
তার একটি সেঞ্চুরি আছে লিস্ট ‘এ’ ম্যাচেও। টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম করলেন ফিফটি, সেটাও মাত্র ২২ বলে। মেহেদী বলছেন, তার এমন মারকাটারি ব্যাটিং জন্মগতভাবেই, ‘জন্মগতভাবে আমি এভাবেই খেলি। ঘরোয়ায় যদি দেখেন, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আমি পিটাইতে পারি।’
কিন্তু তার ব্যাটিং পজিশন নির্ধারিত না থাকায় আক্ষেপ রয়েছে তার, ‘বিপিএল একটু ভিন্ন জায়গা, সুযোগটা ওভাবে পাই না সত্যি বলতে। আপনি দেখবেন আমার ইনিংসগুলা সব সময় আমি একই জায়গায় ব্যাট করতে পারি না।
কখনো দশ নম্বর, কখনো নয় নম্বর, সেজন্য শেষের দিকে আমার জন্য কঠিন হয়ে যায়। ওই সময় ভালো বোলার থাকে, ইয়র্কার করে, বাউন্সার মারে। আমার জন্য কঠিন হয়ে যায়। নতুন বলের জন্য আমি ঠিক আছি। পাওয়ার-প্লে কাজে লাগাতে পারি। কোচেরও সেই পরিকল্পনা ছিল।’
‘আমি পরিস্থিতির দাবি মেটাতে যা করতে হবে, তার জন্য প্রস্তুত থাকি। দশ নম্বরে হোক আর ওপরে হোক। আমার একটা পজিশন নির্ধারণ করা থাকলে আমার জন্য ভালো হয়।
কিন্তু ১০ নম্বর, নয় নম্বর হলে মানসিকভাবে পিছিয়ে থাকি। তবে এটাকে আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছি যে, এখানে সফল হতে পারলে আমার জন্য ভালো’- বলেন মেহেদী। #