দূরবীন নিউজ প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের যৌথ কারিগরি কমিটির সভায় কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর তাদের সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরবে কর্মরত নারী কর্মীরা যত দিন থাকবেন, তাঁদের দায়দায়িত্ব বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের রিক্রুটিং এজেন্সি বহন করবে। প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় নারীদের আবাসন ও অন্যান্য দায়িত্বও বহন করবে রিক্রুটিং এজেন্সি।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে আরও বলা হয়, যেসব নারী কর্মী কাজ ছেড়ে পালিয়ে যান, তাঁদের কোনোভাবেই নিয়োগকর্তার কাছে হস্তান্তর করা যাবে না।
বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই সিদ্ধান্তে কথা জানানো হয়।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জাহিদ হোসেন। আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, অতিরিক্ত সচিব মো. নাজীবুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব সাবিহা পারভীন প্রমুখ।
তিনি বলেন, কর্মীর বিস্তারিত ঠিকানা, দুই দেশের এজেন্সি ও নিয়োগকর্তার যোগাযোগের পূর্ণ ঠিকানা, নিয়োগকর্তা পরিবর্তনের তথ্য, আগমন, হস্তান্তর ও প্রত্যাবর্তনের তথ্য সৌদি সরকারের আইটি প্ল্যাটফর্মে (মুসানেদ) থাকতে হবে। মুসানেদ সিস্টেমে বাংলাদেশ দূতাবাসের জন্য প্রবেশাধিকার সুবিধা প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করবে সৌদি আরব।
গত ২৭ নভেম্বর সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত কারিগরি সভায় বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজা। ওই বৈঠকের অগ্রগতি জানাতেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেলিম রেজা বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাসের অনুমতি ছাড়া নিয়োগকর্তা (কফিল) পরিবর্তন করা যাবে না। এ ছাড়া নারী কর্মী নির্যাতন বা মৃত্যুর ঘটনা আলাদা করে তদন্ত করবে সৌদি সরকার।
নির্যাতনের বিচারসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, একজন কর্মীও যদি বিদেশে নিগৃহীত হয়, তা অবশ্যই সরকারের জন্য উদ্বেগের। তাই প্রতিটি ঘটনার বিচার হতে হবে। কিন্তু মামলা পরিচালনার জন্য অভিযোগকারীকে সেখানে (সৌদি) থাকতে হবে। তাঁর থাকা-খাওয়ার সব ধরনের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু কেউ থাকতে চান না। আর সব মামলার ক্ষেত্রে দূতাবাস পাওয়ার অব অ্যাটর্নিও নিতে পারে না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জাহিদ হোসেন। এতে বলা হয়, চুক্তির মেয়াদ শেষে নারী কর্মীর প্রত্যাবর্তনের দায়িত্বও এজেন্সির। নতুন করে নবায়ন হলে অবশ্যই দূতাবাসের অনুমোদন নিতে হবে। নারী কর্মীর সুরক্ষায় গুরুতর অভিযোগ উঠলে সৌদি সরকারের ‘ডিপার্টমেন্ট অব প্রোটেকশন অ্যান্ড সাপোর্ট’ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ভিসা-বাণিজ্য বন্ধের বিষয়ে দুই দেশ একযোগে কাজ করবে।
সচিব জানান, সৌদি আরব থেকে কোনো বৈধ কর্মীকে জোর করে ফেরত পাঠানো হচ্ছে না। আর পুরুষ কর্মী পাঠাতে বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে কোনো চুক্তি নেই। একটি চুক্তির খসড়া নিয়ে পরবর্তী বৈঠকে আলোচনা হবে। সৌদি আরবে কর্মরত কর্মীদের বিমা সুবিধা নিশ্চিত করতে নিয়োগকর্তাদের বাধ্য করার উদ্যোগ নেবে সৌদি সরকার। #