অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো: তৌহিদ হোসেন বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু ইস্যুতে ঢাকায় বিভিন্ন মিশনে দায়িত্বরত বিদেশী কূটনীতিকদের ব্রিফ করেছেন । আজ সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এ ব্রিফিং হয়।
ব্রিফিংয়ে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থা তুলে ধরেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। ব্রিফিংয়ে যোগ দেন ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, জাপান, চীন, কানাডা, সৌদি আরব, ইরান, সিঙ্গাপুরসহ একাধিক রাষ্ট্রের প্রতিনিধি। সাথে ছিলেন বাংলাদেশে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসঙ্ঘের প্রতিনিধিও।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নয়াদিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারকে লিখিত প্রস্তাবনা পাঠানোর কথা বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার এই বক্তব্য রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সঠিক পদক্ষেপ নয় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এটা তার জন্য সঠিক পদক্ষেপ নয়। রাজনীতিবিদরা তো সবসময় রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বক্তব্য দিয়ে থাকেন। উনি (মমতা) এই বক্তব্য কেন দিলেন এটা আমি বুঝতে পারছি না। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, আমার মতে, এটা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির জন্য হয়তো সহায়ক হবে না।
মমতার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান নাকি গ্রহণ করা হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ-ভারত ফরেন অফিস কনসালটেশনের (এফওসি) পরবর্তী পর্বে যোগ দিতে চলতি মাসের মাঝামাঝিতে ঢাকা সফর করার কথা। ভারতের সঙ্গে দিনকে দিনকে সম্পর্ক টানাপোড়নকে কেন্দ্র করে এফওসি হওয়া নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তায় দেখা যাচ্ছে।
এফওসি হওয়ার প্রশ্নে তৌহিদ হোসেন বলেন, এফওসি হওয়ার কথা। আমি মনে করি হবে। এখন দুইপক্ষ একসঙ্গে হতে হবে। ভিসার ব্যাপারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় ভিসা বন্ধ। যে কারণে অনেকে চিকিৎসা নিতে ভারত যেতে পারছে না। আবার কলকাতার ব্যবসায়ীদের অবস্থা খারাপ, এটা ভারতের স্বার্থ কিনা তাদের দেখতে হবে। ভারতের স্বার্থ তো আমি বুঝতে পারব না।
সম্পর্কের টানাপোড়নে সামনের দিনগুলোতে দিল্লিকে ঢাকা কীভাবে সামলাবে-এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, পারস্পরিক স্বার্থ ঠিক রেখে আমরা ভারতের সঙ্গে একটা স্বাভাবিক, ভালো সুসম্পর্ক চাই।
ভারতের আন্তরিকতা প্রশ্নে তৌহিদ হোসেন বলেন, আন্তরিকতা তো পরিমাপ করা খুব কঠিন কাজ। এটা গণমাধ্যমকে মাপতে হবে। উভয়ের জন্য এখানে অন্তরের চেয়ে স্বার্থ গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনে করি, ভারত-বাংলাদেশ উভয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নেবে নিজেদের স্বার্থ অনুযায়ী।