দেশের বহুল আলোচিত জয়নুল হক সিকদারের ছেলে রিক হক সিকদার ও রন হক সিকদারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ৮৭ লাখ ১৪ হাজার ৭২৪ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগ। ২০১৭ সালের রেট অনুযায়ী বাংলাদেশি এই টাকা পাচারের অভিযোগে পৃথক দুই মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আসামীদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদক ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকসহ ৭জনের বিরুদ্ধে আলাদা দুটি মামলা দায়ের করে বেশ আলোচনায় এসেছে। দুদকের সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয় ১-এ রোববার (৩১ মার্চ) মামলা দুটি দায়ের করেন দুদকের পরিচালক বেনজীর আহমেদ।
মামলার এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, আসামীরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রিক হক সিকদারের এফসি একাউন্টে ব্যালেন্স না থাকা সত্ত্বেও গাইডলাইন্স ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রানজেকশন্স (জিএফইটি), বিআরপিডি সার্কুলারের “প্রুডেনসিয়াল রেগুলেশন্স ফর কনজ্যুমার ফাইন্যান্সিংয়ের “রেগুলেশনস ফর ক্রেডিটকার্ডস-রেগুলেশন-১৩”-এর নির্দেশনা লঙ্ঘন করেন।
পরে বিধিবহির্ভূতভাবে ২০১৭ সাল থকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে ৬টি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লিমিটের অতিরিক্ত ২৬ লাখ ২২ হাজার ৪৯৯ মার্কিন ডলার যা ২০১৭ সালের দর অনুযায়ী বাংলাদেশি টাকায় ২১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয় করেন।
পরবর্তীতে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার করে তা দিয়ে ক্রেডিট কার্ডগুলোর ঋণ পরিশোধ করে পাচারকৃত অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর, রূপান্তর ও গোপনের মাধ্যমে বৈধতা দানের চেষ্টা করেন। যা দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, দণ্ডবিধি ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এ মামলার আসামীরা হলেন– ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক পরিচালক রিক হক সিকদার, ব্যাংকটির সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইভিপি) মো. মাহফুজুর রহমান, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ সৈয়দ আব্দুল বারী, সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ ওয়াদুদ, সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম বুলবুল এবং চৌধুরী মোশতাক আহমেদ।
দ্বিতীয় মামলাটির এজাহারে বলা হয়েছে, একইভাবে নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে বিধিবহির্ভূতভাবে ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে সাতটি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ৬০ লাখ ৯২ হাজার ২২৫ ডলার, ২০১৭ সালের রেট অনুযায়ী যা বাংলাদেশি টাকায় ৫০ কোটি টাকা পাচার করেছেন আসামীরা।
দ্বিতীয় মামলার আসামীরা হলেন– ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক পরিচালক রন হক সিকদার, ব্যাংকটির সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইভিপি) মো. মাহফুজুর রহমান, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ সৈয়দ আব্দুল বারী, সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ ওয়াদুদ, সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম বুলবুল এবং চৌধুরী মোশতাক আহমেদ।