দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
গ্রামীণ টেলিকম ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিং অপরাধের মামলায় নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগামী ৫ অক্টোবর দুদকের হাজির হতে বলা হয়েছে। ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাকে উপস্থিত হবার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার প্রধান। এর আগের ৪অক্টোবর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সহযোগিতাকারী ১২ আসামীকে তলব করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ বিভাগ। গত ২৭ সেপ্টেম্বর দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উপ পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের স্বাক্ষরে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আপনার বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, গত ৩০ মে অসৎ উদ্দেশ্যে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টের শর্তাদি লঙ্ঘনপূর্বক জালিয়াতির আশ্রয়ে গ্রামীণ টেলিকম থেকে অর্থ আত্মসাৎপূর্বক অপরাধলব্ধ অর্থ স্থানান্তর বা রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপন করে আত্মসাৎ করার অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।
মামলার আসামিরা হলেন, গ্রামীণ টেলিকম চেয়ারম্যান ড.মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, পরিচালক নাজনীন সুলতানা, পরিচালক মো. শাহজাহান, পরিচালক নূরজাহান বেগম, পরিচালক এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলামসহ গ্রামীণ টেলিকমের বোর্ডের সদস্যদের উপস্থিতিতে গ্রামীণ টেলিকমের ২০২২ সালের ৯ মে অনুষ্ঠিত ১০৮তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের গুলশান শাখায় ৮ মে ২০২২ সালে একটি হিসাব খোলা হয়, যার নম্বর: ২১৫১৫০০০০২৫৬৮। গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের পাওনা লভ্যাংশ বিতরণের জন্য গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন এবং গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট চুক্তি ২৭ এপ্রিল, ২০২২ সালে সই হয়। গ্রামীণ টেলিকমের বোর্ড সভার হিসাব খোলার সিদ্ধান্ত ৯ মে হলেও তার একদিন আগেই ব্যাংক হিসাব খোলা হয় এবং সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল হলেও এই অ্যাগ্রিমেন্টে ৮ মে খোলা ব্যাংক হিসাব দেখানো আছে, যা বাস্তবে অসম্ভব।
রেকর্ডপত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, অ্যাডভোকেট ফি হিসেবে প্রকৃতপক্ষে হস্তান্তরিত হয়েছে মাত্র এক কোটি টাকা। বাকি ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বোর্ড সদস্যদের সহায়তায় গ্রামীণ টেলিকমের সিবিএ নেতা এবং অ্যাডভোকেটসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অসৎ উদ্দেশ্যে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টের শর্তাদি লঙ্ঘনপূর্বক জাল-জালিয়াতির আশ্রয়ে গ্রামীণ টেলিকম থেকে আত্মসাৎ করেছেন।
এই অপরাধলব্ধ অর্থ স্থানান্তর বা রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপন করেছেন, যা দন্ডবিধি এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ হওয়ায় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/ ৪৭১/১০৯ ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় ২০২৩ সালের ৩০ মে দুদক উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধানের মাধ্যমে একটি মামলা দায়ের করা হয়। # কাশেম