নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) এক গবেষণায় উঠে এসেছে বিশ্বের দুর্যোগ প্রবণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাম। ওয়ার্ল্ড রিস্ক রিপোর্টে ২০২২ অনুযায়ী প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝুঁকির দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান নবম। তাই বাংলাদেশের নগরকেন্দ্রিক দুর্যোগ ঝুঁকি কমাতে ৮ দফা সুপারিশ করেছে বিআইপি’র গবেষকরা।
শনিবার (২২ জুলাই) বিআইপি কনফারেন্স হলে ‘নগর দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে করণীয়: প্রেক্ষিত ঢাকা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় সভায় এসব সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়েছে। সেমিনারে আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন রাজউকের চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিয়া, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাজী ওয়াছি উদ্দিন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমনসহ অনেকে।
বিআইপি’র সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসানের স ালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, মানবসৃষ্ট বিপর্যয় থেকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় করে চলছে বাংলাদেশ। এ দেশের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টেকনিক নিয়ে আমরা গর্বিত। তবে গত ৬ বছরে আমাদের দেশের ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে। এটা পৃথিবীর সব দেশেই হয়। আমাদের দেশেও হয়েছে। তবে এ ক্ষতির পরিমাণ আরও কমিয়ে আনতে হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, আমরা এতদিন শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে কাজ করেছি। কিন্তু এখন আরও বিস্তৃত কাজ করার সুযোগ এসেছে। মানবসৃষ্ট বিপর্যয় থেকেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তিনি বলেন, ঢাকা তো দেয়ালের রাজধানী হয়ে গেছে। আজকাল আমাদের শহর-গ্রামে একটি দেয়ালের সাথে আরেকটা দেয়াল ঘেঁষে দালান করা হচ্ছে। কেউ কেউ দালান না করলেও সীমানা দেয়াল দিচ্ছেন। নগরবাসীদের সময় এসেছে দেয়াল দেওয়ার প্রবণতা থেকে সরে আসার। তা না হলে একটু ভেতরের দিকের বাড়িগুলোতে অ্যাম্বুলেন্স বা ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও প্রবেশ করতে পারবে না। আমরাই এখন দুর্যোগ সৃষ্টির কারণ হচ্ছি । এসব ক্ষেত্রে আমাদের সচেতনতা জরুরি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ভ‚মিকম্প-প্রবণ এলাকায় পর্যাপ্ত মাঠ রাখতে হবে। যাতে মানুষ ভ‚মিকম্প চলাকালীন সময় আশ্রয় নিতে পারে। যে কোনো অগ্নিকাÐের ঘটনায় পানির প্রয়োজনে জলাশয়গুলোকেও বাঁচিয়ে রাখতে হবে। ভবনগুলোতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে দেশের গণমাধ্যমকেও এগিয়ে আসতে হবে। জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে।
সেমিনারে বিআইপির ৮ সুপারিশ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক প্রণয়নকৃত ভূমিকম্প কন্টিনজেন্সি প্ল্যান বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা (অস্থায়ী আশ্রয়সমূহের যথাযথ চিহ্নিতকরণ ও এ বিষয়ক জনসচেতনতা বৃদ্ধি)। দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি, ২০১৯ এ বর্ণিত যেসব সংস্থার কন্টিনজেন্সি প্ল্যান তৈরির কথা উল্লেখ রয়েছে তা অতি সত্বর প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃক দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণ করে জলাধারসমূহ চিহ্নিত করা বিশেষকরে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাকে প্রাধান্য দেওয়া।
বিশদ অ ল পরিকল্পনা (২০২২-২০৩৫) এ বর্ণিত জলাধার, ও উন্মুক্ত স্থানের শ্রেণি পরিবর্তন না করা এবং উক্ত জলাধার ও উন্মুক্ত স্থানের স্থানিক এলাকা নির্ধারিত করা। বিল্ডিং কোড প্রয়োগ সম্পর্কিত প্রস্তাবিত সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন করা। পর্যায়ক্রমে সকল ধরনের পেশাজীবী নিবন্ধন কার্যক্রম চালু করা। ইলেক্ট্রনিক কন্সট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেম কার্যকর করা। কাঠামো নকশা, যন্ত্রকৌশল নকশা, বৈদ্যুতিক নকশা এবং প্লাম্বিং নকশা পরীক্ষা করা ও প্রয়োগ নিশ্চিত করা। #কাশেম