নিজস্ব প্রতিবেদক ।
রূপালী ব্যাংকের ৪৭৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকটির পাঁচ কর্মকর্তাসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল মঙ্গলবার কমিশনের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী বাদী হয়ে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, চেয়ারম্যান ডলি আক্তার, রূপালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক খালেদ হোসেন মল্লিক, সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. সোলায়মান, স্থানীয় কার্যালয়ের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মো. গোলাম সারোয়ার, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, পল্টন শাখার উপমহাব্যবস্থাপক (সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক মতিঝিল করপোরেট শাখা) এ এস এম মোরশেদ আলী ও জিওগ্রাফ সার্ভে করপোরেশন লিমিটেডের মালিক মো. পারভেজ বিন কামাল।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে মতিঝিল করপোরেট শাখা থেকে ৭৫১ কোটি ৯৯ লাখ ৮৬ হাজার ১০৬ টাকা উত্তোলন করেন। বিভিন্ন সময়ে সুদ-আসলসহ ৩০৮ কোটি ৯০ লাখ ৬১০ টাকা পরিশোধ করেন। সুদসহ বাকি ৪৮৯ কোটি ৮ লাখ ১৮ হাজার ৬৭৫ টাকা পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করেন তারা। দুদকের অনুসন্ধানে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। মামলার তদন্তকালে অন্য কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। ডলি কনস্ট্রাকশনের মালিক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন ২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারি মতিঝিল করপোরেট শাখায় একটি চলতি হিসাব খোলেন।
এরপর ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কার্যাদেশ লিয়েন রাখার শর্তে ১০৪ কোটি টাকা ঋণের আবেদন করেন। এরপর সংশ্লিষ্ট শাখা, বিভাগীয় ও প্রধান কার্যালয়ের শিল্পঋণ বিভাগের সুপারিশের ভিত্তিতে ২০১৬ সালের ২ ফেরুয়ারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৯৯০তম বোর্ডসভায় ৫৫ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়। এর পর থেকে কয়েক দফায় প্রতিষ্ঠানটির নামে ঋণ অনুমোদন করা হয়। ডলি কনস্ট্রাকশন ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ঋণের ৭৫১ কোটি ৯৯ লাখ ৮৬ হাজার ১০৬ টাকা উত্তোলন করে এবং এর বিপরীতে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩০৮ কোটি ৫৩ লাখ ৯০ হাজার ৬০১ টাকা পরিশোধ করে। প্রতিষ্ঠানটির কাছে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের পাওনা দাঁড়িয়েছে ৪৭৯ কোটি ৮ লাখ ১৮ হাজার ৬৭৫ টাকা, যা আত্মসাৎ করা হয়েছে।