দূরবীণনিউজ প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের নগরায়ন ও নগর পরিকল্পনায় মাটির প্রকৃতি, ভূমিতলের উচ্চতা, ভূতাত্তি¡ক বৈশিষ্ট্য প্রভৃতিকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। রাজধানী ঢাকার নগরায়ন প্রক্রিয়ায় জলাশয়-জলাভূমিকে ভরাট করে আবাসন ও অবকাঠামো নির্মানের কারণে ভূমিকম্পসহ অন্যান্য নগর দূর্যোগের আশংকা বাড়ছে বহুলাংশে।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অ ল পরিকল্পনা বিভাগে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা এই অভিমত ব্যক্ত করেনে। পরিকল্পনা সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন নগর ও অ ল পরিকল্পনা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আনিসা নূরী কাকন, ড. মেহেদী হাসান, অধ্যাপক কাশফিয়া নাহরিন, ড. ফরহাদুর রেজা, এস এম নওশাদ হোসেন প্রমুখ।
সেমিনারে আলোচকগঘের অভিমত হচ্ছে,বাংলাদেশের নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় ভূতাত্তি¡ক বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় নিয়ে ভূমির যথাযথ ব্যবহার এর মাধ্যমে টেকসই নগরায়ন নিশ্চিত করবার পাশাপাশি দূর্যোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অ ল পরিকল্পনা বিভাগ আয়োজিত “ঢাকা শহরের ভূ-প্রকৃতি এবং অভ্যন্তরীণ ভূতাত্তি¡ক বিন্যাস এর নগর পরিকল্পনাগত প্রভাব” শীর্ষক পরিকল্পনা সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা উপরোক্ত মতামত দেন।
নগর ও অ ল পরিকল্পনা বিভাগ এর অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খানের স ালনায় আয়োজিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক মো. মাহফুজুল হক বলেন, গত দুই দশকে ঢাকার নগরায়ন প্রক্রিয়ায় পূর্বা ল ও পশ্চিমা লের যেসব এলাকায় নগরায়ন হয়েছে সেসব এলাকার মাটির বৈশিষ্ট্য ও ভূতাত্তি¡ক গঠন নগরায়নের উপযোগী নয়। ফলে ভূমিকম্প হলে বছিলার মত এলাকায় দূর্যোগ ও ক্ষয়ক্ষতির শংকা বেশি থেকে যায়। তিনি আরও বলেন, ঢাকার ভূমিতলের উচ্চতা ৫ – ১৮ মিটার এর মধ্যে এবং এই অ লের অনেক স্থানে ভবন নির্মাণ ও নগরায়নের জন্য উপযোগী লাল মাটি বিদ্যমান আছে। আবার অনেক এলাকায় প্রাকৃতিকভাবেই নিচুভূমি, জলাশয় ও ভূঅভ্যন্তরে পানি ধারণ অ ল বা একুইফার আছে। যথাযথভাবে “ভূমি উপযোগিতা বিশ্লেষণ’ না করে বর্তমানে নগরায়ন হওয়াতে সামনের দিনে নগর দূর্যোগের শংকা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ভূতাত্তি¡ক বৈশিষ্ট্য যথাযথ বিবেচনায় না নেয়াতে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনের যে প্রকল্প ও উদ্যোগ চলমান আছে, সেগুলোর মাধ্যমে কার্যকর উপযোগিতার পাবার সম্ভাবনা ও কম।
অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ভবন নির্মাণে যেমন বিল্ডিং কোড ও পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট আইন মানা হচ্ছে না, তেমনি প্রভাবশালীদের চাপে নগরায়ন হচ্ছে স্বেচ্ছাচারীভাবে। ফলে সাময়িকভাবে কেউ কেউ লাভবান হতে পারলেও প্রকৃতির প্রতিশোধ থেকে সম্মিলিতভাবে কেউ রেহাই পাবে না। উদাহরণস্বরূপ তিনি উল্লেখ করেন, সা¤প্রতিক সময়ে হাওর এলাকার বন্যায় সিলেট এর কেন্দ্রীয় নগর এলাকাও বন্যায় তলিয়ে গিয়েছিল।
অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, রাজউকের আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট (ইউআরপি) এর মাধ্যমে ঢাকা শহরের মাটির প্রকৃতি ও ভূতাত্তি¡ক বৈশিষ্ট্যকে বিবেচনায় নিয়ে নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন করবার রূপরেখা দেয়া হয়েছে। সামনের দিনের পরিকল্পনায় এই বিষয়গুলোকে বিবেচনায় নিয়েই নগরের স¤প্রসারণ ও টেকসই নগরায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
বিভাগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম আবুল কালাম বলেন, ভূমিকম্পসহ বিভিন্ন নগর দূর্যোগের প্রস্তুতির জন্য সার্বিক পরিকল্পনা গ্রহণ করবার পাশাপাশি সারা বাংলাদেশের ইমারত নির্মাণ যেন যাবতীয় নির্মাণ মানদÐ মেনে করা হয়। এজন্য জাতীয় বিল্ডিং কোড এর পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন প্রয়োজন। #কাশেম