আবুল কাশেম , দূরবীন নিউজ :
এক উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) শ্রমিক কর্মচারী লীগের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বকুল- হারুন- রোকন পরিষদের ছাতা মার্কার বিজয় লাভ। এই নির্বাচনে ভোটাররা ‘বকুল- হারুন- রোকন পরিষদের’ নেতাদের সততা, ন্যায়. নিষ্ঠা এবং কর্মচারীদের পক্ষে কাজ করার স্বীকৃতির পুরস্কার দিয়েছেন।
ভোট গ্রহণ উপলক্ষে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচক্করের পাশে ডিএনসিসির এই আঞ্চলিক কার্যালয়টি একটি মিলনমেলায় পরিনত হয়েছিল।
জাতীয় শ্রমিক লীগের ঢাকা উত্তরের সাধারণ সম্পাদক হাজী বরকত খান নির্বাচিত কমিটির সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন।
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় -৪ এ সকাল ৮টা থেকে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়। এই নির্বাচন পরিচালনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনানের দায়িত্বে ছিলেন সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো.মিরুজ্জামান চৌধুরী। তার সাথে ছিলেন আরো দুইজন নির্বাচন কমিশনার শাহেদ জোহা ও কামাল রেজা। এছাড়াও ডিএনসিসির আরো বেশ কয়জন কর্মকর্তা এই নির্বাচনী কার্যক্রমে আন্তরিকতার সাথে সহযোগিতা করেছেন।
একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কাজ করেছেন এই কমিশনের সবাই। এই কাজে প্রায় ৩০ জন পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর প্রাপ্ত ভোট গননা শেষে রাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান চৌধুরী ফলাফল ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায়,এবার শ্রমিক কর্মচারী লীগের এই নির্বাচনে সভাপতি, কার্যকরী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২৭টি পদের ছাতা মার্কায় এই প্যানেলের সবাই বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। অপরদিকে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বি বেলচা মাকার প্যানেলের প্রার্থীরা অনেক কম ভোট পেয়েছে। যা আলোচনায় আনার মতো নয়।
ডিএনসিসির শ্রমিক কর্মচারী লীগের নির্বাচনে সভাপতি- বজলুল মোহাইমিন (বকুল) ৭১৯ ভোট, তার প্রতিদ্বন্দ্বি মো. জামাল হোসেন ৩৩৯ ভোট।
কার্যকরী সভাপতি বিজয়ী – মো. হারুন মিয়া ৪৯০, তার প্রতিদ্বন্দ্বি মো. জাহিদুল ইসলাম ৩১৭ ও মো. সোহেল হাসান২০৯ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক- মাহমুদুল হাসান রোকন সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন৭৮৮ ভোট, তার প্রতিদ্বন্দ্বি মোহাম্মদ মাসুদ পেয়েছেন ২৭৬ ভোট।
বিজয়ী ছাতা প্যানেলের অপর নেতারা হলেন; ৬ জন সহ সভাপতি- মো. সাইদুল ইসলাম চৌধুরী, সৈয়দ মাছুম হোসেন, আবদুল ওয়াহেদ খান (বাদল), আব্দুস ছালাম মৃধা, খন্দকার বাবুল,মিজানুর রহমান টিটু,২ জন যুগ্ম সম্পাদক- মো. ফরহাদ আলী, মো. জামাল, ২ জন সহ সাধারণ সম্পাদক- মো. নুর হোসেন, মো. শাহজাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক-মাসুদ কাজী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক-মো. শরীফুল আলম, অর্থ সম্পাদক-মো. মোস্তাফিজুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক- শাহরিয়ার রায়হান , সহ দপ্তর সম্পাদক- নাজমুল হুদা সাগর, প্রচার সম্পাদক- মো. মোফাজ্জল হোসেন, সহ প্রচার সম্পাদক- মো. হুমায়ুন কবির, ক্রীড়া সম্পাদক- মো. আমান উল্লাহ,সাংস্কৃতিক সম্পাদক- লিয়াকত হোসেন,শ্রম ও আইন বিষয়ক সম্পাদক- মোহাম্মদ ওয়াজেদ শেখ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক- এইচ এম নুরুজ্জামান বাদশাহ, সমাজ কল্যাণ ও ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক- মো. আতিকুর রহমান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক- মোসা. ফরিদা ইয়াসমিন এবং একজন নির্বাহী সদস্য প্রার্থী-মো. শফিকুল ইসলাম ভুইঁয়া সুজন।
নির্বাচনের আগে ঘোষিত ‘বকুল-হারুন- রোকনের’ নেতৃত্বাধীন’ কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের পক্ষ থেকে ১২টি অঙ্গীকার নামা বাস্তবায়নের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করার কথা বলেছেন বিজয়ী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
প্রথমেই রয়েছে, দৈনিক মাষ্টাররোল কর্মচারীদেরকে স্কুেলভুক্ত ও স্কেলভুক্ত কর্মচারীদেরকে স্থায়ী করার ব্যবস্থা করণ। যান্ত্রিক,বর্জ্য ও বিদ্যুৎ সার্কেল কর্মরত কর্মচারী, স্প্রেম্যান,সড়ক শ্রমিক, উচ্ছেদ শ্রমিকদের ঝুঁকিভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করণ। বর্তমানের অর্গানোগ্রাম সংশোধনের ব্যবস্থা করণ।
মাষ্টার রোল কর্মীদের শিক্ষাগত যোগ্যাতা ও দক্ষতা অনুযায়ী বিভিন্ন বিভাগে পদায়নের ব্যবস্থা করা। বাছাই কমিটির ১ ও ২ এর মাধ্যমে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনির কর্মচারীদের যোগ্যতা অনুযায়ী সকল কর্মকর্ত/ কর্মচারীদের পদোন্নতির ব্যবস্থা চলমান রাখা ।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে জনবল নিয়োগে কর্মচারীদের ছেলে- মেয়েদের পোষ্য কোঠা বাস্তবায়ন করে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির ব্যবস্থা করা। কর্মকর্তা/ কর্মচারীদের জন্য মানসম্মত বাসস্থান, স্টাফ কোয়াটার তৈরি এবং কর্মচারীদের ছেলে-মেয়েদের বিনামূল্যে পড়া শুনার জন্য স্কুল ও কলেজ স্থাপনের ব্যবস্থা করা।
৪র্থ শ্রেনির কর্মচারীদের প্রতিবছর পোষাক,ছাতা,জুতা প্রদানের ব্যবস্থা করা। মাষ্টাররোল কর্মচারীদের দৈনিক মজুরি এক হাজার টাকায় উন্নীত করণের ব্যবস্থা করা। মাষ্টারোল কর্মচারীদের বৈশাখী ভাতা ৫০০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকায় উন্নীত, উৎসব ভাতা (বোনাস) তিন হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকায় উন্নীত এবং মাষ্টারোল কর্মচারীদের অবসরকালে পাওনা ৪ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পাবার বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
মহিলা কর্মচারী ছোট ছোট সন্তাদের জন্য ‘ডে কেয়ার সেন্টার’ স্থাপনের ব্যবস্থা করা। আলোচিত বিষয়গুলো ডিএনসিসির জনপ্রিয় ও কর্মকর্তা/কর্মচারী বান্ধব মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের সাথে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাবার বিষয়টিও তাদের অঙ্গিকার নামায় রাখা হয়েছে।
বকুল-হারুন- রোকনের’ নেতৃত্বাধীন’ কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের কর্মকর্তারা জানান, মেয়র মহোদয়ের নিদেশে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সচিব স্যারের আন্তরিক সহযোগিতায় ইতোমধ্যে কর্মকর্তা/ কর্মচারীদের জন্য পেনশন প্রথা চালু করা হয়েছে। কর্মকর্তা/ কর্মচারীদের জন্য মৃত্যুকালীন অনুদান ৮ লাখ টাকা প্রদান করা হচ্ছে। বীমা দাবী (প্রথা) এক লাখ টাকা থেকে ২ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়া আরো বেশ কিছু কল্যাণকর কাজ করা হয়েছে। #