দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) থেকে নানা কৌশলে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে এস আলম গ্রæপের বিরুদ্ধে ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং আরও কয়েকটি ভুয়া কোম্পানির নামে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের রিট আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আইবিবিএল ব্যাংক থেকে প্রভাবশালী চক্র ‘ভুয়া ঠিকানা ও নথিপত্রে কাগুজে কোম্পানির’ নামে এভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। যারফলে এসব বিষয়ে রিট আবেদন দায়ের করার জন্য সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট ।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেে র নজরে আনা হয়, ইসলামী ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে লোপাট। ইতোমধ্যে এসব ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত পৃথক প্রতিবেদন উক্ত আদালতে উপস্থাপন করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি আদালতের কাছে আদেশ প্রার্থনা করলে উচ্চ আদালত বলেন, ‘প্রতিবেদনগুলো সংযুক্ত করে রিট আবেদন আকারে কোর্টে আসুন।’
এসময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন।
আদালতের বাইরে আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির গণমাধ্যমকে বলেন, আজ (বুধবার) আদালতে রিট আবেদন দায়ের করবেন। তিনি বলেন, গত ২৪ নভেম্বর জাতীয় দৈনিকে ইসলামী ব্যাংকে ‘ভয়ংকর নভেম্বর’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনের প্রথমাংশে বলা হয়, ব্যাংকের নথিপত্রে নাবিল গ্রেইন ক্রপস লিমিটেডের অফিসের ঠিকানা বনানীর বি বøকের ২৩ নম্বর সড়কের ৯ নম্বর বাড়ি। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক ভবন। ঋণ পাওয়া মার্টস বিজনেস লিমিটেডের ঠিকানা বনানীর ডি বøকের ১৭ নম্বর সড়কের ১৩ নম্বর বাড়ি। সেখানে গিয়ে মিলল রাজশাহীর নাবিল গ্রæপের অফিস। তবে মার্টস বিজনেস লাইন নামে তাদের কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। এভাবেই ভুয়া ঠিকানায় একাধিক কাগুজে কোম্পানি খুলে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড থেকে দুই হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে একটি অসাধু চক্র।
সব মিলিয়ে বিভিন্ন উপায়ে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। আটটি প্রতিষ্ঠানের নামে চলতি বছরেই এ অর্থ নেওয়া হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ তুলে নেওয়া হয় চলতি নভেম্বর মাসের ১ থেকে ১৭ তারিখ সময়ে। যার পরিমাণ ২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। এ জন্যই ব্যাংকটির কর্মকর্তারা চলতি মাসকে ‘ভয়ংকর নভেম্বর’ বলে অভিহিত করছেন।
জালিয়াতির মাধ্যমে অপর বেসরকারি ‘সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল) ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক’ থেকেও ২ হাজার ৩২০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে কোম্পানিগুলো। ফলে এ তিন ব্যাংকের কাছে প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদসহ দেনা বেড়ে হয়েছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা। এমন সময়ে এসব অর্থ তুলে নেওয়া হয়, যখন ব্যাংক খাতে ডলার সংকটের পর টাকার সংকট বড় আলোচনার বিষয়।
এদিকে গত মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) নিউ এইজ পত্রিকায় এস আলম গ্রæপ একাই ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে- এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদনটিও আজ আদালতের নজরে আনা হয়। #