দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, আইনী জটিলতা এবং বাধ্যবাদকতার কারণে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ সরাসরি ফেরত আনার ক্ষমতা তাদের নাই। সরকারের অন্যান্য সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থপাচারকৃত বিভিন্ন দেশের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য চাইতে হয়। কিন্তু ওইসব দেশ সহজে তথ্য দিতে চায় না। তারা আইনের নানা ফাঁকফোকড়ে সময় ক্ষেপন করেন। যারফলে দুদক অনেক চেষ্টা করেও বিদেশে অর্থপাচারকারীদের তথ্য দ্রæত পাচ্ছে না।
সোমবার (২১ নভেম্বর) বিকালে দুদকের ১৮তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময়কালে সভায় সংস্থার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এসব কথা বলেন। এ সভায় দুদকের কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মোজাম্মেল হক খান, কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক, দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এক পর্যায়ে দুদকের কার্যক্রম নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এবং দুই কমিশনার ।
দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, অর্থ পাচার নিয়ে কাজ করে সরকারের ৭টা প্রতিষ্ঠান। দুদক এ ৭ ভাগের এক ভাগ অপরাধ নিয়ে কাজ করছে। তারপরও আমরা অর্থ পাচার ঠেকাতে কাজ করে যাচ্ছে দুদক। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়াটাও দীর্ঘ। বিভিন্ন মাধ্যমে যেতে হয়।
তিনি বলেন, অর্থ পাচারের অভিযোগের গুরুতর অপরাধের মধ্যে মাত্র একটির অনুসন্ধান ও তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দুদককে। এরবাইরে আরো ৬টি সংস্থা/ প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
তিনি বলেন, বেশ কয়টি বড়বড় অপরাধ দুদকের শিডিউলেই নাই। এগুলো দুদকের কাছ থেকে নিয়েছে সরকার। যারফলে ওইসব অপরাধ নিয়ে কাজের ক্ষমতা এখন দুদকের নাই। দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, যেসব দেশে টাকা পাচার হয়, সেসব দেশের সঙ্গে যাতে দুদক সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে না। এখানে আইনগত বাধা রয়েছে।
চেয়ারম্যান বলেন, অর্থ পাচারের অপরাধ নিয়ে দুদকের আইনী সক্ষমতা বাড়াতে মন্ত্রীপরিষদে চিঠি পাঠানো হয়েছে। অনুমতি পেলেই দুদক অর্থপাচারের সব অপরাধের অনুসন্ধান এবং তদন্ত করতে পারবে।
কমিশনার জহুরুল হক বলেন, এপর্যন্ত দুদক কেবল চুনোপুঁটিই ধরে না, বিশ্ব রেকর্ড করার মতো রাঘববোয়ালও ধরেছে। দুদক বিভিন্ন দেশ থেকে দুর্নীতিবাজদের সম্পদ জব্দ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুদক ২০২০ সালে আটটি ও ২০২১ সালে ১৩টি মামলা দায়ের ও ২০২০ সালে চারটি ও ২০২১ সালে একটি মামলার চার্জশিট দিয়েছে। যেসব মামলার চার্জশিট হয়েছে আমার বিশ্বাস সেগুলোর ৮০ ভাগ ফলাফল আমাদের পক্ষে আসবে।
কমিশনার জহুরুল হক সাংবাদিকদের উদ্দেশে আরও বলেন, আমরা করছি না তা না, আমরা এগোচ্ছি। সব খবর আপনাদের কাছে যায় না। অথবা সব খবর আপনারা প্রচার করেন না। আপনারা সব সময় বলেন, দুদক কেবল চুনোপুঁটি ধরে। কিন্তু কতগুলো রাঘববোয়াল ধরেছে, আপনারা দেখেছেন কখনো। দুদক বিশ্ব রেকর্ড করার মতো রাঘববোয়ালও ধরেছে।
কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মোজাম্মেল হক খান বলেন, দুদকের ১৮ তম বর্ষপূতিতে আজ বড় ধরনের কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে না। তবে প্রথম পর্বে এ সংস্থার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে আলোচনা সভা করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় পর্বে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে সভার আয়োজন করা হয়েছে। আপনাদের গঠনমূলক পরামর্শ দুদকের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করবে। # কাশেম