দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকা থেকে ৫০০ কারখানা ও গোডাউন স্থানান্ডর করা হবে। সবশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শ্যামপুরে এসব রাসায়নিক গুদাম, কারখানগুলো স্থানান্তর করা হবে।
তিনি বলেন, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গুদাম, কারখানা দিয়ে ভরিয়ে ফেলা হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে এই এলাকায় নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া বন্ধ রয়েছে। আমরা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে এখানে অবৈধ ২ হাজার ৪০০-এর বেশি ভবন শনাক্ত করেছি। পর্যায়ক্রমে এগুলো এখান থেকে সরানো হবে।
বুধবার (১৭ আগস্ট) বেলা ১১ টায় পুরান ঢাকার চকবাজারের দেবীদাস ঘাট লেনে অগ্নিক্ডাস্থল পরিদর্শনকালে গণমাধ্যমকে মেয়র এসব কথা বলেন।
মেয়র তাপস আক্ষেপ করে বলেন, চকবাজারে অগ্নিকান্ডে পুড়ে যাওয়া ‘বরিশাল হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের ভবনে কারখানা, গ্যাস, পানির লাইনের অনুমোদন ছিল না। এটি মূলত ওয়াকফ এস্টেটের সম্পত্তি। তিনি বলেন, পুরান ঢাকার চকবাজারের কামালবাগ এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের শিকার ভবনটি গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ কীভাবে পেয়েছে, এমন প্রশ্ন রেখেছেন। তিনি বলেছেন, আমরা তো বাণিজ্যিক অনুমোদন বন্ধ রেখেছি, তাহলে অন্য সংস্থাগুলো কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই না করে কীভাবে এই ভবনে গ্যাস-বিদ্যুতের সংযোগ দিলো?
মেয়র বলেন, এসব ভবনের কোনো বৈধতা নেই, কোনো বাণিজ্যিক অনুমোদন নেই, এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক অনুমোদন আমরা দেইনি, সেই প্রতিষ্ঠান কীভাবে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ পেল, তাই এখন প্রশ্ন। এই বিষয়ে সব সংস্থাকে একসঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। নয় তো এমন দুর্ঘটনা বারবার ঘটতেই থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মেয়র তাপস বলেন, আমরা জানি পুরো ঢাকা শহরেই অনেকেই অবৈধভাবে বিভিন্ন সংযোগ নিয়ে থাকেন। এটাও খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে যে কোনো না কোনোভাবে অবৈধপন্থা অবলম্বন করে এই গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ তারা নিয়েছে। এগুলোর প্রতি আমাদের সব সংস্থারই সুদৃষ্টি দেওয়া উচিত। যেন এরকম দুর্ঘটনা রোধ করতে পারি আমরা। মাঠ পর্যায়ে যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে সবকিছু যাচাই বাছাই না করেই যদি এমনভাবে সংযোগ দেওয়া হয়, বৈধতা দেওয়া হয় তাহলে প্রতি বছরই দেখছি এমন দুঃখজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে।
শুধু নিমতলী বা চুড়িহাট্টা নয়, প্রতিবছরই দেখছি এমন ঘটনা ঘটছে। এর একমাত্র কারণ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এসব ঝুঁকিপূর্ণ কারখানা, গুদাম পরিচালিত হওয়া। এগুলো সবকিছু স্থানান্তর না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এরকম দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে। তাই এগুলোকে স্থানান্তর করতে হবে। সবার মধ্যে উপলব্ধি বোধ সৃষ্টি হতে হবে। আর এভাবে যদি অবৈধভাবে বেআইনি এসব গুদাম কারখানা কার্যক্রম চলতেই থাকে তাহলে এমন দুর্ঘটনা আমরা বন্ধ করতে পারব না, বলেন ডিএসসিসি মেয়র।
তিনি বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকায় এসব রাসায়নিক কারখানা, গুদাম, বিভিন্ন ধরনের ফ্যাক্টরির কারণে এই এলাকায় যানজট যেমন বেশি থাকে, তেমনি অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে থাকে সবাই। এমন অবস্থা থেকেই বারবার অগ্নিকান্ডসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, পরিবহন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীন, অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বাবর আলী মীর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকের, কাউন্সিলদের মধ্যে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের আ স ম ফেরদৌস আলম, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ ইরফান সেলিম, ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. নুরে আলম, ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সাইদুল ইসলাম এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডসমূহের মহিলা কাউন্সিলবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। # কাশেম