দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
নানা আয়োজনে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকালে বৈচিত্রতা আনলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৫ জুন) দুপুরে মাওয়া প্রান্তে টোল পরিশোধ শেষে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী সেতুর উদ্বোধন করেন।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের স্মৃতিকে ধরে রাখতে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সেলফি তুলেছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। ভিডিও কলে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কিছুটা আবেগাপ্লুত হতে দেখা গেছে। শনিবার দুপুর ১২টা ৮ মিনিটের দিকে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন শেষে মা- মেয়ে ঐতিহাসিক সময়টিকে ফ্রেমে আবদ্ধ করেন।
উদ্বোধন শেষে সেতুর ওপর দিয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের উদ্দেশে যাত্রাকালে সেতুর মাঝামাঝি গিয়ে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ান প্রধানমন্ত্রী। এসময় বিমান বাহিনীর ৩১টি বিমান ও হেলিকপ্টারের সমন্বয়ে এক মনোজ্ঞ ‘ফ্লাইং ডিসপ্লে’ উপভোগ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এসময় তার সঙ্গে ছিলেন।
এসময় দুটি মিগ-২৯, দুটি এফটি-৭বিজি/এফ-৭ এমবি ও দুটি এফ-৭ বিজিআইর সমন্বয়ে স্মোক পাস, তিনটি এফ-৭ বিজিআই/বিজির ফ্লাই পাস্ট প্রদর্শন, একটি সি-১৩ জে ও পাঁচটি কে-৮ ডবিøউর সমন্বয়ে স্মোক পাস প্রদর্শন, তিনটি এল-৪১০ ও পাঁচটি গ্রোব-১২০টিপির সমন্বয়ে ফ্লাই পাস্ট প্রদর্শন, পাঁচটি এমআই-১৭/১৭১ এর মাধ্যমে পতাকা প্রদর্শন ও একটি বেল-২১২ এর মাধ্যমে লিফলেট বিতরণ, দুটি কে-৮ডবিøউর মাধ্যমে শেকুল মেন্যুভার প্রদর্শন, পাঁচটি কে-৮ডবিøউ এর মাধ্যমে ভিক্সেন ব্রেক প্রদর্শন এবং একটি মিগ-২৯ এর মাধ্যমে লো লেভেল অ্যারোবেটিক্স প্রদর্শন করা হয়।
পাঁচ হেলিকপ্টারের একটি বহরের শুরুতেই ছিল লাল সবুজের পতাকা। যা জানান দেয় বাঙালির আত্মমর্যাদা ও সক্ষমতার।
দ্বিতীয়টিতে ছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সম্বলিত পতাকা। অসীম আকাশে পাখা মেলে জানান দিয়ে গেল দাবিয়ে রাখা অসম্ভব অদম্য বাঙালিকে।
দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে যার দৃঢ়তায় স্বপ্নের এই পদ্মা সেতু, বিমানবাহিনীর এই মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনীর তৃতীয় হেলিকপ্টারে ছিল বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত পতাকা।
চতুর্থ ও প ম হেলিকপ্টার বহন করে স্বপ্নজয় ও জাতীয় শ্লোগান জয়বাংলা সম্বলিত পতাকা। যেন কোটি বাঙালিকে আরেকবার ডাক দিয়ে গেল সম্মিলিত বিজয় উল্লাসে শামিল হওয়ার। নীল আকাশে লাল সবুজের আবীরে ফুটিয়ে তোলা হয় বাংলাদেশের পতাকার অবয়ব। এক পর্যায়ে হাজির হয় যুদ্ধ বিমান। গর্জন তুলে জানান দেয় ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে এগিয়ে যাওয়ার। পদ্মার আকাশে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এই অ্যারোবেটিক ডিসপ্লে ও ফ্লাই পাস মুগ্ধ করে পদ্মার দুই পাড়ে অপেক্ষমাণ লাখো মানুষকে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন শেষে তিনি ‘জয় বাংলা’ বলে শ্লোগান দেন। পরে তিনি সেতুর ওপর দিয়ে জাজিরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। এসময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সড়রক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক সেতু সচিব মোশাররাফ হোসেন ভূঁইয়া প্রমুখ। #