দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
দীর্ঘদিন যাবৎ ক্রেতাদের ঠকিয়ে রমরমা ব্যবসা করে আসছে রাজধানীর মিরপুরের বেনারসি পল্লীর কাপড় ব্যবসায়ীরা। এই পল্লীতে ১৭শ’ টাকা দামের শাড়ি বিক্রি হচ্ছিলো ১৭ হাজার টাকায় করছেন তারা।
অবশেষে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা গোপন অভিযোগের ভিত্তিতে ১৬ এপ্রিল সেখানে অভিযান পরিচালনা করে একাধিক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছেন । এক পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের অনুরোধে মাত্র দুই দোকানকে জরিমানা কমিয়ে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং সবাইকে সঠিক দামে কাপড় বিক্রির নির্দেশনা দিয়েছেন ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভোক্তা-অধিদপ্তরের পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, উপ-পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল এবং সহকারী পরিচালক মাগফুর রহমান।
উপ-পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল গণমাধ্যমকে জানান, বেনারসি পল্লীর ব্যবসায়ীরা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মাত্র ১৭শ’ টাকার শাড়ি বিক্রি হচ্ছিলো ১৭ হাজার টাকায়। সরেজমিনে তদন্ত করতে গিয়ে ঢাকা মহানগরীর মিরপুরের বেনারসি পল্লীতে এমন অভিযোগের বাস্তব চিত্র প্ওয়া যায়। নেই কোনো ক্রয় রশিদ, দেওয়া হয় না বিক্রয় রশিদও, শাড়িতে দেওয়া স্টিকারে এস এল নম্বর ও কোড দেওয়া থাকলেও নেই কোনো মূল্য। ব্যবসায়ীদের দেওয়া এসএল অনুযায়ী বালাম বই চেক করে দেখা যায়, ইচ্ছেমতো ক্রয়মূল্য লিখে রেখেছে বিক্রেতারা। ক্রয়মূল্যের স্বপক্ষে নেই কোনো কাগজপত্র।
১৬ এপ্রিল দুপুরে বেনারসি পল্লীতে প্রথমে মিতু কাতান শাড়ি ঘর নামের দোকানে অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিদপ্তর কর্মকর্তারা। এসময় দোকানে আমদানি করা শাড়ি এবং দেশি শাড়ির প্রকৃত দাম জানতে ক্রয় ও বিক্রয় রশিদ চাওয়া হয়। দোকানিরা তা দেখাতে না পেরে ‘মালিক নেই’ সময় ক্ষেপন করেন।
পরে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের টিম ম্যানেজার না আসা পর্যন্ত দোকান সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলে দোকানিদের জানায় আভিযানিক দল।
এদিন তাওছিফ বেনারসি ফ্যাশনে একটি ইন্ডিয়ান এবং দেশি শাড়ির প্রকৃত দাম জানতে ক্রয় ও বিক্রয় রশিদ চাওয়া হলে রশিদে গড়মিল পাওয়া যায়। শাড়িতে দেওয়া স্টিকারে এসএল নম্বর কোড দেওয়া থাকলেও মূল্য লেখা ছিল না। এসএল অনুযায়ী বালাম বই চেক করে দেখা যায়, দেকানিরা ইচ্ছেমতো ক্রয়মূল্য লিখে রেখেছে, যার স্বপক্ষে কোনো কাগজপত্র নেই। দোকানটিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হবে বলে জানানো হয়।
অভিযানের তথ্য জানাজানি হলে মিরপুর বেনারসি পল্লীর প্রায় দুইশ’ ব্যবসায়ী এবং দোকানের কর্মচারীরা শ্লোগান দিতে দিতে চলে আসেন তাওছিফ বেনারসি ফ্যাশনের ভেতরে। এসময় ভোক্তা অধিদপ্তরের আভিযানিক দল ব্যবসায়ীদের জানায়, তারা ব্যবসায়ীদের শত্রæ নয়, ভোক্তাদের অধিকার সমুন্নত রাখতেই এ অভিযান চলছে। এক পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের অনুরোধে মাত্র দুই দোকানকে জরিমানা কমিয়ে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং সবাইকে সঠিক দামে কাপড় বিক্রির নির্দেশনা দিয়েছেন অভিযানে থাকা ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
#