দূরবীণ নিউজ প্রতিেবেদক :
ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ” ঢাকা শহরে ১,৬৪৬টি বাসের রুট পারমিট নেই। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে এসব রুট পারমিটবিহীন বাসের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হচ্ছে। এবারের অভিযান কঠোর হবে। রুট পারমিটবিহীন বাস জব্দ করা হবে। পারমিটবিহীন অবৈধ বাস জব্দ করার পাশাপাশি সেগুলো ধ্বংস করা হবে। যাতে ওইসব বাস আরা সড়কে আসতে না পারে। গণপরিবহনে পূর্ণ শৃঙ্খলার আনার জন্যই এই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।’
রোববার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটির নগর ভবনে বুড়িগঙ্গা মিলনায়তনে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ১৯তম সভা শেষে সভাপতির বক্তব্যে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। ওই সময় সাংবাদিকদের সামনে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলামও বক্তব্য রাখেন।
২৮ নভেম্বরের এ সভায় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, রাজউক চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মদ, ঢাক মেট্টোপলিটনের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিনসহ কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “ঢাকা শহরের গণপরিবহনে বিশৃংখলা রয়েছে। সেজন্য আমরা আরো কঠোর হবো। আমরা দেখেছি রুট পারমিট নেওয়া হয়, একটি যাত্রাপথে কিন্তু সেই যাত্রাপথে বাস না চালিয়ে অন্য যাত্রাপথে পরিচালনা করা হয়।
এখন থেকে যৌথ অভিযানের আওতায় আমরা সেসব বাসের বিরুদ্ধে কার্যক্রম নেবো এবং এক রুটের বাস অন্য রুটের পরিচালনা করা যাবে না। রুট পারমিট যে যাত্রা পথে নিয়েছে সে যাত্রা পথেই সেই বাস পরিচালনা করতে হবে। না হলে সেই বাস চলবে না। সুতারাং আমরা এখন অত্যন্ত কঠোর। আমরা ঢাকা শহরের গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনবোই আনবো।”
বাস মালিকদের অসহযোগিতা ও নানা বাঁধ-বিপত্তি অতিক্রম করেই বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে মেয়র বলেন, “পহেলা ডিসেম্বর ঘাটারচর থেকে কাচপুর রুটে পাইলট প্রকল্পের অংশ হিসেবে বাস রুট রেশনালাইজেশনের মাধ্যমে বাস চালানোর ঘোষণা দিয়েছিলাম।
১ ডিসেম্বর থেকে এই রুটে বাস চালুর যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল, তা ফলপ্রসূ করা যায়নি। গণপরিবহনে দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত যে বিশৃঙ্খলা, এই বিশৃঙ্খলায় অনেক অংশীজন রয়েছে। সকলকে শৃঙ্খলায় আনা অত্যন্ত দুরূহের কাজ। তারপরও আমরা অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে এই কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। আমরা সংকল্পবদ্ধ, এটাকে আমরা বাস্তবায়ন করবই।”
মেয়র তাপস বলেন, “ঢাকা শহরে গণপরিবহনের শৃঙ্খলা আনার জন্য এই কমিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। আমরা দুই মেয়র দায়িত্ব পাওয়ার পর গত বছরের অক্টোবর থেকে কার্যক্রম শুরু করি। এই করোনা মহামারীর মাঝেও আমরা সভা পরিচালনা করেছি এবং এই কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ করার জন্য নিরলসভাবে পরিশ্রম করে চলেছি।”
পরীক্ষামূলক এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, “আমরা এখন বিজ্ঞপ্তি দেবো। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে উদ্যোক্তা, অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আমরা আবেদন নেবো। সে আবেদনের প্রেক্ষিতে বিআরটিসি’র ৩০টি সহ আমরা নতুন ১০০টি বাস নির্ধারণ করব।”
উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, “আমাদের ইচ্ছার কোন ত্রুটি ছিল না, সাধ্যমত চেষ্টা করেছিলাম। পহেলা ডিসেম্বর বাস্তবায়ন করার জন্য। কিন্তু বিভিন্ন কারণে আমরা পারিনি। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ,বাস মালিকরা। আমাদের যেভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তারা সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেন নাই। এই প্রেক্ষিতে বিআরটিসি’র সহযোগিতায় আগামী ২৬ ডিসেম্বর হতে ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত বাস চলাচল শুরু হবে।”
ডিএনসিসি মেয়র আরও বলেন, “প্রাথমিকভাবে এই রুটে ১০০টি গাড়ি চলাচল করবে। বিআরটিসি এই রুটের পরীক্ষামূলক কার্যক্রমে ৩০টি বাস দেবে বলে নিশ্চিত করেছে। প্রতিটি বাস দোতলা বিশিষ্ট।”
#