দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ দেশ থেকে দুর্নীতি উচ্ছেদ করতে চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন ।
আজ রোববার (২১ নভেম্বর) সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
আজকের অনুষ্ঠানে রিপোর্টার্স এগেইনিস্ট করাপশন আয়োজিত ৩ জন সাংবাদিককে বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার ৭৫ হাজার টাকার চেক ও ক্রেস্ট এবং সনদ প্রদান করা হয়। পুরস্কার প্রাপ্ত ওই ৩ সাংবাদিক হলেন; যুগান্তরের সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম, মাছরাঙা টেলিভিশনের কাউছার সোহেলী এবং বাংলাট্রিবিউনের নুরুজ্জামান লাবু।
মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, সব দেশেই দুর্নীতি হয়, আমাদের দেশেও হচ্ছে। এটা প্রতিরোধ করতে হলে সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে। শুধু দুদক ও একটা আইনের ওপর নির্ভর করে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব নয়। এজন্য সবার অংশগ্রহণ প্রয়োজন।
দুর্নীতি প্রমাণ করা অত্যন্ত দুরূহ বিষয় জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা তিলকে তাল বানিয়ে বলি। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনিও মিথ্যা বলেন। সাক্ষীও সত্যি কথা বলেন না। ফলে দুর্নীতি প্রমাণ করাটা অনেক কঠিন।
দুর্নীতিবাজদের বর্জন করার আহ্বান জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, যারা দুর্নীতিবাজ হিসেবে জনশ্রুত তাদের চিহ্নিত করে বর্জন করলেই হয়।
দুদকে সাংবাদিকদের অসহযোগিতা করা হয় এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদক সাংবাদিকদের সব ধরনের সহযোগিতা করছে। তদন্ত, অনুসন্ধানে কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি না করে যা তথ্য দেওয়া যায়, তার সবই দিতে বলা হয়েছে।
দুদক সাংবাদিকদের প্রতিপক্ষ ভাববে কেন? আমরা তো একই দেশের নাগরিক। একই সমাজ থেকে এসেছি। আমাদের উদ্দেশ্যও অভিন্ন। সরকারি অফিসে কিছু নিয়মকানুন পালন করতে হয়। এটা আপনারা হয়রানি হিসেবে ভাবছেন। যেটা আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা সম্ভব।
দুদক কর্মচারীদের দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুদক কর্মচারীদের দুর্নীতি প্রতিরোধে আমাদের আইনে ও বিধিমালায়ও অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি দমন কমিটি করা হয়েছে। নতুন কমিশন এই পর্যন্ত দুটি সভা করেছে। অভিযোগগুলো অনুসন্ধান পর্যায়ে আছে।
দুদকের আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, এ ব্যাপারে দুদক কী করতে পারে। যাদের আমরা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করি তাদের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে চিঠি জারি করে আমরা আদালতে যাই।
আদালত আমাদের শতভাগ সহায়তা করেছেন। আদালত থেকে আমাদের নিষেধাজ্ঞা নিশ্চিত করে সেটা বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে দেই। এরপর কেউ পালিয়ে গেলে দুদককে জিজ্ঞেস না করে, যেখান থেকে পালিয়ে যায়-সেখানে জিজ্ঞেস করতে হবে।
অনুষ্ঠানে দুদক কমিশনার জহুরুল হক বলেন, মানি লন্ডারিং বিষয়ে দুদকের কিছু করার নেই। এটা এখন আর দুদকের কাজ নয়। সরকার আইন করে আমাদের কাছ থেকে এটা নিয়ে গেছে। এটা আমাদের এখতিয়ারে নেই, এটা সবাইকে জানাতে হবে।
এসময় দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, দুদক সচিব ড. মুহা. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আরিফ সাদেক, রিপোর্টার্স এগেইনিস্ট করাপশন আয়োজিত ৩ জন সাংবাদিককে বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার ৭৫ হাজার টাকার চেক ও ক্রেস্ট এবং সনদ প্রদান করা হয়।
বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড জুরি বোর্ডের আহবায়ক আজকের পত্রিকার সম্পাদক ড. গোলাম রহমান, জুরি বোর্ডের সদস্য এএফপি’র বাংলাদেশের ব্যুরো প্রধান শফিকুল আলম এবং রিপোর্টার্স এগেইনিস্ট করাপশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ফয়েজ, সিনিয়র সহসভাপতি মো. আবুল কাশেম, সিনিয়র সাংবাদিক সাঈদ আহমেদ খান, আদিত্য আরাফাত, হকিকত জাহান হকি প্রমুখ সাংবাদিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
#