দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
বাংলাদেশের উত্তরের চার জেলা রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারীতে অসময়ের বন্যা ও নদীভাঙনে তিস্তাঘেরা ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ বসতভিটা হারিয়ে গৃহহীন হয়েছে । অনেক বিদ্যালয়, পাকা সড়ক ও ব্রিজ বিলীন হয়েছে তিস্তাগর্ভে। ফসলের মাঠ প্লাবিত হয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষক।
কুড়িগ্রামে গৃহহীন হয়েছে প্রায় দুই হাজার পরিবার। এর মধ্যে রাজারহাটে তিস্তার ভাঙনে গৃহহীন হয়েছে এক হাজার পরিবার। তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমারের আটটি পয়েন্টে চলছে ভাঙন। গত পাঁচ দিনে গৃহহীন হয়েছে প্রায় ২০০ পরিবার। দুধকুমারের ভাঙনে রায়গঞ্জ, তিলাই ও ঘোগাদহ এলাকায় বসতভিটা ও আবাদি জমি চলে যাচ্ছে নদীগর্ভে।
তিস্তার ভাঙনে গতিয়াশাম, থেতরাই, খিবাবখা, ঠুটা পাইকর ও বজরায় প্রতিদিন গৃহহীন হচ্ছে মানুষ। এসব এলাকায় এ বছর ১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকা সড়ক ও ব্রিজ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, ভাঙনকবলিত পয়েন্টগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভাঙন ও বন্যায় গৃহহীন মানুষের তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ের কাছে ঢেউটিন ও টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
লালমনিরহাটে পানির তোড়ে দুটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে স্পারসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কয়েকটি স্থাপনা। এতে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে পাউবো। এদিকে তিস্তাপারের আরেক জেলা রংপুরে বন্যায় নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দুটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাৎক্ষণিকভাবে সেটি মেরামত করা হয়েছে।
লালমনিরহাট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, সব মিলিয়ে পাউবোর পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। এদিকে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানিয়েছেন, রংপুরে এবারের বন্যায় পাউবোর তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে বন্যা চলাকালে গঙ্গাচড়ার দুটি পয়েন্টে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের আংশিক ক্ষতি হয়েছিল।
অসময়ের বন্যায় নীলফামারীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্ষতি হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। বন্যায় তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাসসহ কমান্ড এলাকার ১০ স্থানের ৯৮০ মিটার বাঁধ ধসে গেছে। পাউবোর রংপুরের প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদ ঘোষ জানান, এবারের বন্যায় পাউবোর ১৫ কোটি টাকা ও কৃষি এবং অন্যান্য স্থাপনা মিলিয়ে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। #