দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
ই-কমার্স প্লাটফর্ম ইভ্যালির সব ধরনের সম্পদ বিক্রি ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
প্রায় পাঁচ মাস আগে ইভ্যালিতে অর্ডার করা ওয়াশিং মেশিন না পাওয়া সংক্রান্ত এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আজ এই আদেশ জারি করেছেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসেন ও এ এম মাসুম। গণমাধ্যমকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন।
আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন জানান, ইভ্যালির গ্রাহক ফরহাদ হোসেন। যিনি ইভ্যালি থেকে একটি পণ্য কিনেছিলেন। কিন্তু পণ্যটি অর্ডার করার পাঁচ মাস পরও বুঝে পাননি। এরপর তিনি ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে একটি আবেদন করেন।
ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার ইভ্যালির সবধরনের সম্পদ বিক্রি-হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত। একইসঙ্গে ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না তা জানতে চেয়ে নোটিশ জারি করেছেন।
তিনি জানান, আবেদনকারী ইভ্যালি অনলাইন শপিংমলে গত মে মাসে একটি ওয়াশিং মেশিন অর্ডার করেন। অর্ডারের সময় তিনি মোবাইল ফোনভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবার মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করেছেন। এরপর কোম্পানিটি অনলাইনে তাকে একটি পণ্য কেনার ৩৩ হাজার ৩০৮ টাকা একটি রসিদও দেয়।
কিন্তু এতদিনেও তারা পণ্যটি বুঝিয়ে দেয়নি। পণ্য বুঝে পেতে আবেদনকারী যোগাযোগ করলে তাকে বারবার আশ্বাস দেওয়া হয়, কিন্তু পণ্য বুঝিয়ে দেয়নি কিংবা টাকাও ফেরত দেয়নি। পরে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর, ই-ক্যাব, ভোক্তা অধিকারে বার বার অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। অবশেষে তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্ত হন এবং হাইকোর্টে কোম্পানিটির অবসায়ন চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে ইভ্যালি লিমিটেড, রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, কনজুমার রাইটস প্রটেকশন ব্যুরো, নগদ, বিকাশ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, ই-ক্যাব অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বেসিস, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত আবেদনটি অ্যাডমিট করেন। এছাড়া আদেশে ইভ্যালির যত সম্পদ আছে সেটা যেন বিক্রি অথবা ট্রান্সফার না করা হয়। আদালত একটি নোটিশ ইস্যু করে কেন ইভ্যালিকে অবসায়ন করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ইভ্যালি এমডি ও সিইও রাসেল এবং তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। অভিযান শেষে এ দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাদের র্যাব সদর দপ্তরে নেওয়া হয়। সেখানেই চলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ।
এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে আরিফ বাকের নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক প্রতিষ্ঠানটির এমডি ও সিইও রাসেল এবং তার স্ত্রীর প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা করেন।#