দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
এবার জাতিসঙ্ঘের অধীন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইই) পর্যবেক্ষণকারী ক্যামেরা ইরানের পরমাণু কেন্দ্রগুলোতে স্থাপন, সংস্কার ও নতুন মেমরি কার্ড প্রতিস্থাপনের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে।
বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও তিনি জানিয়েছেন, ইরানকে আগে তার পরমাণু কর্মসূচি থেকে সরে আসতে হবে। অপরদিকে ইরান আগে দেশটির ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি করছে।
১১ সেপ্টম্বর (রোববার) ইরানের রাজধানী তেহরানে আইএইএ ডাইরেক্টর জেনারেল রাফায়েল গ্রসি ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার (এইওআই) প্রধান মোহাম্মদ ইসলামির সাথে এক বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
অস্ট্রিয়া ভিয়েনায় জাতিসঙ্ঘের দফতর ও অন্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় ইরানের স্থায়ী দূত কাজেম কারিবাবাদি টুইট বার্তায় জানান, আইএইএ ও ইরানের এইওআইয়ের যৌথ তত্ত্বাবধানে আইএইএ পরিদর্শকরা তাদের যন্ত্রপাতির মেরামত করতে পারবেন ও যন্ত্রের মেমরি প্রতিস্থাপন করতে পারবেন। উভয় পক্ষের সম্মতিতে কাজের প্রক্রিয়া ও সময় নির্ধারিত হবে।
বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রসি বলেন, ‘আমাদের প্রয়োজন ছিলো নতুন প্রশাসনের সাথে বসা এবং তাদের সাথে যুক্ত হওয়া।’
সাবেক প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গত আগস্টে ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ ইবরাহিম রইসি সরকার গঠন করেন।
গ্রসি বলেন, আইএইএকে প্রয়োজনীয় নিশ্চয়তা ও তথ্য প্রদান এবং সবকিছু ঠিকঠাক চলার বিষয়ে বিশ্বকে আশ্বস্ত করার জন্য এই বৈঠক অপরিহার্য ছিলো।
অপরদিকে মোহাম্মদ ইসলামি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আইএইএ ও ইরানের মধ্যে আলোচনা ‘সম্পূর্ণভাবে কারিগরি’ বিষয়, যার মধ্যে রাজনীতির কোনো স্থান নেই। আলোচনার জন্য গ্রসি আবার ইরানে আসবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এর আগে ফেব্রুয়ারিতে ইরান ও আইএইএর মধ্যে সমঝোতা অনুসারে তিন মাসের জন্য ইরানি পরমাণু কেন্দ্রগুলোতে আইএইএ’র পর্যবেক্ষণ ক্যামেরা রেকর্ডিং চালানোর অনুমতি দেয়া হয়।
গত ৬ এপ্রিল থেকে নিয়মিত ব্যবধানে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ইরানের সাথে ২০১৫ স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি পুনরায় চালুর বিষয়ে আলোচনা শুরু করে চুক্তির অংশীদার দেশগুলো। মাঝে জুনে ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কারণে আলোচনা স্থগিত করা হয়।
২০১৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় ভিয়েনায় ইরানের সাথে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স ও জার্মানি পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করে। জয়েন্ট কম্প্রেহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন বা সংক্ষেপে জেসিপিওএ নামে পরিচিত এই চুক্তির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। এর বিনিময়ে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করতে সম্মত হয়।
তবে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেন। যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে ইরান চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে সীমিত পরমাণু কর্মসূচি জোরদার করে।
সূত্র : প্রেস টিভি