দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
ভয়ে, আতঙ্কে দেশ ছাড়ার চেষ্টায় রয়েছে আফগানিস্তানের মানুষ । কাবুল বিমানবন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পরও বিমান বন্দরে মানুষের ভীড় রয়েছে। কঠিন পরিস্থিতিতে লোকজন জীবনের ছুঁকি নিয়ে দেশ ছাড়ার চেষ্টায় রয়েছে।
বিরাট উঁচু দেয়ালের গা ঘেঁষে গেছে বিমানবন্দরের পানি নিষ্কাশনের মূল নালা। নালার নোংরা পানিতে দাঁড়িয়ে আছেন সারি সারি নারী-পুরুষ। কাঁটাতারে ঘেরা উঁচু দেয়াল টপকে বিমানবন্দরের ভিতরে ঢুকতে পারলেই যেন নিশ্চিত মুক্তি। অনেকের কোলে শিশু, পিঠের ব্যাকপ্যাকে যৎসামান্য সম্বল। দেশ ছাড়তে প্রাণের মায়া করছেন না আফগানিস্তানের মানুষ।
কাবুল বিমানবন্দরের ছবি এটাই। কে বলবে মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে এলাকা! জলজ্যান্ত মানুষ মুহূর্তে রূপান্তরিত হয়েছে খণ্ড খণ্ড মাংসপিণ্ডে। আবার বিস্ফোরণের ভয় উড়িয়ে, প্রাণের মায়া ছেড়ে কাতারে কাতারে মানুষের ভিড় ফিরে এসেছে কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আশপাশে। লক্ষ্য একটাই, যে করে হোক বিমানের মেঝেতে পা দেয়া। হাতে সময় যে আর বেশি নেই!
আজ শুক্রবার ( ২৭ আগস্ট) ভোর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ উদ্ধারের কাজ শুরু করেছে। তৎপরতা বেড়ে গেছে বহুগুণ। আমেরিকা থেকে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স থেকে ভারত, সব দেশই চাইছে ঘড়ির কাঁটার সাথে পাল্লা দিয়ে উদ্ধার কাজ শেষ করে ফেলতে। বৃহস্পতিবার রাতের বিস্ফোরণ সেই উদ্যোগকে ত্বরান্বিত করেছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, তালেবানি শাসন ছেড়ে যারা দেশান্তরী হতে চাইছেন, তাদের কী হবে? আত্মঘাতী বিস্ফোরণ থেকে নির্বিচার গুলিবৃষ্টি, কিছুতেই তাদের আটকানো যাচ্ছে না। সবাই আফগানিস্তান ছাড়তে মরিয়া।
আফগানিস্তানের টোলো টিভির দাবি, বিস্ফোরণের আগে ও পরে বিমানবন্দরে ভিড়ের বহর একই। কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, অগুনতি মানুষের কতজন শেষ পর্যন্ত দেশ ছাড়তে সক্ষম হবেন? আর যারা পারবেন না, তাদেরই বা ভবিতব্য কী?
বৃহস্পতিবার রাতে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চত্বর। স্থানীয়, বিদেশী মিলিয়ে মৃত্যু হয় বহু মানুষের, আহত আরো বেশি। বিস্ফোরণের দায় নিয়েছে আইএস খোরাসান গোষ্ঠী। তার পর কেটেছে রাত, দিনের আলোয় আবারো শুরু হয়েছে উদ্ধার কাজ। বিস্ফোরণের ভয় বুকে চেপে ড্রেনের নোংরা পানিতে দাঁড়িয়ে অব্যাহত দেশ ছাড়ার মরিয়া চেষ্টা।#