সর্বশেষঃ
কক্সবাজার সংলাপের সুপারিশ নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা সম্মেলনে তুলে ধরা হবে : পররাষ্ট্রসচিব প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ রূপে ফিরছে ‘সাদাপাথর’, ফিরছেন পর্যটকরা নেপালকে উড়িয়ে দাপুটে জয় বাংলাদেশের মেয়েদের এবার কি তবে শিকাগোতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করবেন ট্রাম্প? রাজধানী ৯১ স্থানে সভা-সমাবেশ না করার অনুরোধ ডিএমপি কমিশনারের ঢাকায় এসেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার করলে কঠোর ব্যবস্থা: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সাগর-রুনির সন্তানকে রাজউকের পূর্বাচলের প্লটের দলিল হস্তান্তর সাবেক কর পরিদর্শক বারী ও স্ত্রীর অবৈধ সম্পদ, দুদকের মামলা
মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:০৩ অপরাহ্ন

নিষিদ্ধ হচ্ছে ই-সিগারেটসহ তামাক পণ্যের উৎপাদন-বিক্রি

ভয়ানক স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা চিন্তা করে ভারতের পর এবার বাংলাদেশেও ‘নিষিদ্ধ হচ্ছে’ ইলেক্ট্রনিক সিগারেট। একইসঙ্গে মুখ দিয়ে ধোঁয়া ছাড়া যায় এমন সব তামাক পণ্যের উৎপাদন, আমদানি ও বিক্রিও বন্ধ করার কথা ভাবছে বাংলাদেশ সরকার।

শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালে স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন এই তথ্য জানিয়েছেন। একই সাথে তিনি বৈশ্বিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব তুলেছেন।

শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ‘বাংলাদেশের ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সি ৩৫ শতাংশের বেশি মানুষ কোনো-না-কোনো ধরনের তামাক সেবন করেন। এটা আমাদের জন্য ভয়ানক একটি সংবাদ। ই-সিগারেটসহ নতুন ধরনের সব তামাক পণ্যের উৎপাদন, আমদানি ও বিক্রি যত দ্রুত সম্ভব নিষিদ্ধ করতে হবে। শীর্ষ পর্যায়ের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করব।’

সম্প্রতি স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা তুলে ধরে ভারত ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করে। নিউ ইয়র্কেও সুগন্ধিযুক্ত ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ শ্রীলঙ্কা, নেপাল, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরসহ ৩০টির বেশি দেশে এসব তামাক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব বলেন, ‘বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে লাগাতে হবে।’

ইলেকট্রিক সিগারেট, ই-সিগ, ভেপ ইত্যাদি নামে পরিচিত এই সিগারেট ব্যবহারের হার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কিশোর, তরুণদের মধ্যে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। যন্ত্রটিকে ধূমপায়ীরা ধূমপান ছাড়ার উপায় হিসেবে দেখলেও বর্তমানে এটি নতুন ধরনের নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ই-সিগারেট পানে শ্বাসযন্ত্রে গুরুতর জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে সম্প্রতি এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে৷ দেশটিতে সম্প্রতি ফুসফুসজনিত নানা রোগে ভোগা মানুষের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে ই-সিগারেট পানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা অভিমত দেন।

ক্যানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলু’র এক গবেষণায় দেখা যায়, কম বয়সে ভেপ ব্যবহার করা ছেলে-মেয়েদের অধিকাংশই প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে সিগারেট মুখে তুলে নিচ্ছে।

ই-সিগারেটের উৎপত্তি ও ইতিহাস:
১৯৬৩ সালে হার্বার্ট এ গিলবার্ট নামের এক ব্যক্তি ‘ধোঁয়াহীন তামাকমুক্ত সিগারেট’ নামে একটি ডিভাইসের পেটেন্ট নিলেও সেটি কখনো বাজারে আসেনি৷ আর যাঁকে আজকের ই-সিগারেটের উদ্ভাবক বলা হয়, তিনি চীনা ফার্মাসিস্ট হন লিক৷ যতো দিন যাচ্ছে, এর জনপ্রিয়তাও ততো বাড়ছে৷ ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যেখানে ৫০ হাজার ই-সিগারেট বিক্রি হয়েছে, সেখানে ২০১২ সালে বিক্রি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ লাখে।

প্রায় সব ই-সিগারেটের তিনটি অংশ থাকে। একদম সামনে থাকে একটি এলইডি লাইট, তার পাশেই ব্যাটারি, যেটি ইউএসবি কানেকটরের মাধ্যমে চার্জ করা যায়। এর সঙ্গেই থাকে নিকোটিনের দ্রবণ ও বাষ্প তৈরির যন্ত্র, যাকে বলা হয় অটোমাইজার। শেষে থাকে কার্টিজ৷ ব্যাটারির সহায়তায় ওই দ্রবণ বাষ্পে পরিণত হলে কার্টিজে ঠোঁট লাগিয়ে সিগারেটের মতো টেনে নেয়া যায়। ই-সিগারেটের বিভিন্ন ধরনের দ্রবণের মধ্যে টোব্যাকো ও টোব্যাকো মেনথল ফ্লেভারই সবচেয়ে জনপ্রিয়৷ এছাড়া স্ট্রবেরি বা আপেল ফ্লেভারের দ্রবণও পাওয়া যায়৷ নিকোটিন কতোটা শক্তিশালী হবে – তার ওপর ভিত্তি করে আলাদা আলাদা মাত্রার দ্রবণ বেছে নিতে পারেন একজন ধূমপায়ী৷ আবার নিকোটিন বা ফ্লেভার নেই – এমন দ্রবণও আছে।

সিগারেটই শেষ নয়। একই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি ইলেকট্রনিক সিগার, পাইপ ও মিনি সিগারেটও বাজারে পাওয়া যায়৷ একটি সিগারেট কিনতে খরচ হতে পারে ১০ ইউরোর মতো৷ ই-সিগারেটের জনপ্রিয়তা যতো বাড়ছে, এটি কতোটা স্বাস্থ্যসম্মত – সে বিতর্কও ততো জোরালো হচ্ছে।

ধূমপানের সংজ্ঞা হলো – তামাকজাতীয় কিছু পুড়িয়ে শ্বাসের সঙ্গে ধোঁয়া সেবন করা৷ তবে ই-সিগারেটে কোনো কিছু পোড়াতে হয় না। এ কারণে এটি সাধারণ তামাকের সিগারেটের চেয়ে কম ক্ষতিকর বলে কেউ কেউ দাবি করেন৷ কিন্তু ই-সিগারেটে নিকোটিন থাকে বলে তাতেও আসক্তি তৈরি হয়। ই-সিগারেটে ব্যবহৃত দ্রবণে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক থাকে, যেমন প্রোপিলিন গ্লাইকল৷ বর্ণহীন ও প্রায় গন্ধহীন এই জৈব যৌগটি ধোঁয়া তৈরির স্মোক মেশিন, বিভিন্ন ধরনের ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, টুথপেস্ট ও খাবারে ব্যবহার করা হয়।

বৈধতার বিতর্ক:
সিগারেটের আইন ই-সিগারেটের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে কি না – সেটি একটি বড় প্রশ্ন৷ যদি তাই হয়, সে ক্ষেত্রে জার্মানিসহ ইউরোপের বহু দেশেই রেস্তোরাঁ আর পাবে ই-সিগারেট সেবন নিষিদ্ধ হয়ে যাবে৷ যদিও এখন ‘টেকনিক্যালি’ তা চলছে৷ আবার যুক্তরাজ্যে ওষুধের দোকানেও ই-সিগারেট বিক্রি হচ্ছে।

ঝুঁকির মাত্রা অজ্ঞাত:
কোনটিতে ক্ষতি কম – সিগারেট, না ই-সিগারেট? বিশেষজ্ঞদের মধ্যে কেউ কেউ বলেন, ই-সিগারেটে ক্ষতি তুলনামূলক কম৷ কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী কোনো গবেষণা এখনো না হওয়ায় ই-সিগারেটের ক্ষতিকর দিকগুলো এখনো অজ্ঞাত৷ সুতরাং সবচেয়ে ভালো হলো ধূমপানই ছেড়ে দেয়া।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


অনুসন্ধান

নামাজের সময়সূচী

[prayer_time pt="on" sc="on"]

অনলাইন জরিপ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি এখন লিপসার্ভিসের দলে পরিণত হয়েছে।’ আপনিও কি তাই মনে করেন? Live

  • হ্যাঁ
    25% 3 / 12
  • না
    75% 9 / 12